দক্ষিণবঙ্গে সেই অর্থে বর্ষা দেখা না দিলেও এই মরশুমে একটা ছোট গেট-টুগেদারের প্ল্যান করতে পারেন। বৃষ্টির দিনে ঘুরে আসতে পারেন ওড়িশার কেওনঝড় থেকে। পাহাড় ও জঙ্গলে ঘেরা ছোট্ট পাহাড়ি শহর হল এই কেওনঝড়। মাত্র দু’দিনের ছুটিতেই আপনি এই মালভূমির মাঝে খুঁজে নিতে পারেন মুক্তির স্বাদ।
এই শহরে বাস সাঁওতাল, মুন্ডা, ওঁরাও সহ বিভিন্ন জনজাতির। কেওনঝড়কে ঘিরে রয়েছে সবুজ জঙ্গল। এর মাঝে রয়েছে একাধিক জলপ্রপাত। এগুলোই এই পাহাড়ির শহরের পর্যটন কেন্দ্রে নাম লিখিয়েছে। শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে সানঘাঘরা। এটাও একটি জলপ্রপাত। ১০০ ফুট উচ্চতা থেকে জলধারা গড়িয়ে পড়ছে নীচে। এখান থেকে ১০ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাবেন বড়োঘাঘরা। এই জলপ্রপাতটি ২০০ ফুট উচ্চতা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে নীচের দিকে। এই জলপ্রপাতগুলো এই শহরের পানীয় জলের প্রধান উৎস। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা এই জলপ্রপাতের ধারে স্থানীয়রা মেতে ওঠে চড়ুইভাতিতে।
কেনওঝড় শহরের মধ্যেই রয়েছে একটি জগন্নাথের মন্দির। সেখানেও পর্যটকরা ভিড় জমান। তবে শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে গোনাশিকা পাহাড়ের গুপ্তগঙ্গায় বৈতরণির উৎস। এই উৎসস্থলের আকারটা অনেকটা গরুর নাকের মতো। এই গোনাশিকা পাহাড়ের বুক চিড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে বৈতরণি জলপ্রপাত। এটাও একটি পর্যটন কেন্দ্র। কেওনঝড় থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে গন্ধমাদন পর্বত।
হাতে যদি একদিন বেশি সময় থাকে তাহলে রওনা দিন ঘাটগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে। ঘাটগাঁওয়ের পথে কানঝরি, সীতাবিঞ্জি ঘুরে নিতে পারেন। সীতাবিঞ্জিতে প্রাচীন লিপি এবং ফ্রেসকো পেন্টিং দেখার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও ঘাটগাঁওয়ের তারিণী দেবীর মন্দির রয়েছে। ঘাটগাঁও থেকে ঘুরে নিতে পারে গুঁড়িচাঘাঘি জলপ্রপাতও। কেওনঝড় থেকে ভীমকুণ্ড আর খণ্ডধারা জলপ্রপাত, মুর্গামহাদেব, হাঁড়িভাঙা, খিচিং এই জায়গাগুলোও অনায়াসে ঘুরে নিতে পারেন।
কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন-
পুরীগামী ট্রেনে চেপে খুরদা রোড স্টেশন নামতে হবে। এখান থেকে কেওনঝড়ের ট্রেন পেয়ে যাবেন। কেওনঝড় স্টেশন থেকে বাসে চেপে পৌঁছে যান কেওনঝড় শহরে। দূরত্ব ১১২ কিলোমিটার। এছাড়াও বারবিল স্টেশনে নেমে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন কেওনঝড়। কেওনঝড় শহরে থাকার জন্য হোটেল, হোমস্টে দুটোই পেয়ে যাবেন।