রাতের আকাশে তারা গোনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন বহু পর্যটক। তাই তো দেশের নানা প্রান্তে তৈরি করা হয়েছে অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়ম। এবার এই অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়মে আর ধাপ এগিয়ে গেল ভারত। দেশের প্রথম ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’ বা রাতের আকাশের অভয়ারণ্য চালু হতে চলেছে। আগামী ৩১ অক্টোবর সোমবার লাদাখের হ্যানলেতে চালু হতে চলেছে দেশের প্রথম ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’। হিমালয়ের কোলে বসে এবার রাতের আকাশ দেখার সুযোগ মিলবে লাদাখের হ্যানলেতে। লাদাখের লেফটন্যান্ট জেনারেল রাধাকৃষ্ণ মথুর আগামী, ৩১ অক্টোবর ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’-এর উদ্বোধন করবেন।
মাসখানেক আগেই কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ডক্টর জিতেন্দ্র সিং ঘোষণা করেছিলেন এই ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’-এর কথা। জানিয়েছিলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যেই লাদাখের হ্যানলে গ্রামে রাতের আকাশের অভয়ারণ্যটি স্থাপিত হবে। কথা রাখলেন। তিন মাসের আগেই উদ্বোধন হতে চলেছে রাতের আকাশের অভয়ারণ্য। মূলত অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়মের প্রতি পর্যটকদের ঝোঁক বাড়াতেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি লাদাখে হাই-অল্টিটিউড টেলিস্কোপ নিয়ে বিদেশি গবেষকদের আকৃষ্ট করতেও এই ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’ স্থাপন করা হচ্ছে।
‘লাদাখ অটোনমাস হিল ডেভলপমেন্ট কাউন্সিল’-এর উদ্যোগ এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এর সহায়তায় এই ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’ তৈরি করা হয়েছে। চাংথাং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের অংশ লাদাখের হ্যানলেতে ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’ স্থাপন করা হয়েছে। এখানে থাকছে অপটিক্যাল, ইনফ্রারেড এবং গামা-রে টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশ দেখার সুযোগ। রাতের আকাশ দেখার জন্য হ্যানলে বিশ্বের বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত সাইটগুলির মধ্যে একটি হতে চলেছে।
কিন্তু রাতের আকাশের অভয়ারণ্যের জন্য কেন লাদাখের হ্যানলকেই বেছে নেওয়া হল? প্রাচীন লাদাখ-তিব্বত বাণিজ্য রুটের একটি পুরানো শাখা হল এই হ্যানলে গ্রাম। হ্যানলে নদীর তীরে অবস্থিত এই গ্রাম এখন বিশ্বের অন্যতম উঁচু জ্যোতির্বিজ্ঞান মানমন্দির। ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’-এর কারণে পর্যটক, মহাকাশ প্রেমীদের পাশাপাশি উপকৃত হবেন হ্যানলের মানুষেরাও। রাতের আকাশ দেখার সুযোগ লাদাখে এই গ্রামকে আর্থিক ভাবেও সাহায্য করবে। হ্যানলেতে বাড়বে পর্যটকের সংখ্যা।
অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়মের পাশাপাশি চাংথাং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের বৈচিত্র্যও ফুটে উঠবে পর্যটকদের কাছে। যেহেতু চাংথাং অভয়ারণ্যের অংশ চালু হচ্ছে এই ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’। চাংথাং অভয়ারণ্যে পশমিনা ছাগল, ভেড়া এবং ইয়াকের পাশাপাশি চার লক্ষেরও বেশি বন্যপ্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে হ্যানলে হয়ে উঠতে চলেছে লাদাখের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।