কাছেপিঠে ও কম খরচের মধ্যে তুষারপাত, বরফ দেখার জন্য অনেকেই সিকিম বেড়াতে যান। নৈসর্গিক দৃশ্য, তুষারপাত উপভোগের জন্য সেরা ডেস্টিনেশন জ়ুলুক। পূর্ব সিকিমের এই জনপদ পর্যটকদের কাছে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। যদিও ৫-৬ বছর আগে এত বেশি পর্যটকদের ভিড় থাকত না এই পাহাড়ি গ্রামে। আজকাল বহু মানুষ রেশম পথের টানে পূর্ব সিকিম বেড়াতে যান। সিল্ক রুটের অংশ হিসেবে পাদামচেন, জ়ুলুক, নাথং ভ্যালি, কুপুপ ঘুরে আসেন। তার সঙ্গে থাকে আরিতার, রংলির মতো জায়গাও। কিন্তু আপনি কখন মাংখিম যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন?
পূর্ব সিকিমের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মাংখিম। আরিতারের খুব কাছেই অবস্থিত মাংখিম। কিন্তু এই অফবিটের ঠিকানা সিংহভাগেরই অজানা। ছবির মতো সুন্দর গ্রাম মাংখিম। এই পাহাড়ি গ্রামের কোলে বসে দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার। প্রায় ৬,৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মাংখিম, মূলত স্থানীয়দের পিকনিক স্পট। আপনিও শীতের ছুটিতে এখানে চড়ুইভাতি করে আসতে পারেন।
একদিকে ঢেউ খেলানো সবজ পাহাড়। অন্যদিকে, উপর থেকে উঁকি মারলে দেখা যায় আরিতারের সরোবর, যেটা দেখতে পা বা হাই-বুটের মতো। মাংখিমকে দেখলে মনে হয়, কেউ তুলি দিয়ে সাজিয়েছে ক্যানভাস। কাঞ্চনজঙ্ঘার হাতছানি, সবুজের সমাহার আর আরিতারের সৌন্দর্য—এসব নিয়েই মাংখিম। শীতে এমন যেমন জাঁকিয়ে শীত পড়ে, তেমনই বসন্ত এলে ফুলের ডালি সাজিয়ে বসে মাংখিম। চেরি আর রডোড্রেনড্রনে ভরে ওঠে মাংখিম।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি মাংখিমে রয়েছে একটি মনাস্ট্রি। গৌতম বুদ্ধের আর এক নাম অমিতাভ। এই অমিতাভ স্ট্যাচু দেখতে পাবেন মাংখিমে। গ্রামের পথ ধরে হেঁটেই পৌঁছে যান মনাস্ট্রিতে। কিছুটা সময় কাটান নিরিবিলিতে। তারপর সেখান থেকে আবার হাঁটতে হাঁটতে ঘুরে দেখুন মাংখিম ভিউ পয়েন্ট। মনাস্ট্রি ছাড়াও এখানে রয়েছে রাই উপজাতিদের মন্দির, যা মাংখিম নামেই পরিচিত। কাছেই আরিতার হওয়ায়, হ্রদ ঘুরতেও যেতে পারেন। এছাড়া ঘুরে দেখতে পারেন মুলখড়কা বা ডোলমা লেক।
সিকিমের অন্যতম পুরনো জনপদ এই আরিতার, মাংখিম। প্রচুর মানুষের বাস পূর্ব সিকিমের এই অংশে। তাই এখানে থাকা-খাওয়াও খুব সস্তা। কম খরচে পূর্ব সিকিমের ঘুরে দেখতে চাইলে মাংখিম রয়েছে আপনার অপেক্ষায়। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ১১৩ কিলোমিটারের পথ মাংখিম। রংলি বাজার হয়ে আপনাকে যেতে হবে মাংখিম। নিউ জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে প্রাইভেট গাড়িতে মাংখিম যেতে পারেন। এছাড়া রংলি বাজার বা রংপো থেকে মাংখিম যাওয়ার শেয়ার গাড়ি মিলবে। জনবসতি বেশি হওয়ায় এখানে থাকা-খাওয়ার সমস্যা নেই। মাথাপিছু ১,২০০ টাকা খরচ করলেই রাত কাটাতে পারবেন এই জনপদে।