বাঙালির সর্বকালের প্রিয় ডেস্টিনেশন কাশ্মীর। শীতকালে বরফ দেখতেও বহু মানুষ ভিড় জমায় উপত্যকায়। বিশেষত, গুলমার্গের গন্ডোলা রাইডের জন্য শীতকালে কাশ্মীরে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। কাশ্মীর গেলেই বেশিরভাগ মানুষ শ্রীনগর, গুলমার্গ, সোনমার্গ, পহেলগাঁও বেড়াতে যান। ভূস্বর্গের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কিন্তু আজকাল বহু পর্যটক কাশ্মীরেরও অফবিট জায়গার সন্ধানে থাকেন। পহেলগাঁও থেকে সোনমার্গ—কাশ্মীরের যে প্রতিটা জায়গা অসাধারণ। তবে, এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে পর্যটকদের ভিড় কম কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এই শীতে বেড়াতে কাশ্মীর যাওয়ার পরিকল্পনা করলে, এই ৩ জায়গায় একবার ঢুঁ মারতে পারেন।
অরু ভ্যালি: অমরনাথ যাত্রা করতে গেলে আপনাকে অনন্তনাগ যেতে হয়। এই অনন্তনাগ জেলায় রয়েছে এক লুকনো পর্যটন কেন্দ্র। অরু নদীর পাশেই অবস্থিত এই উপত্যকা। এছাড়া ১১ কিলোমিটার রয়েছে লিদ্দর নদী। পহেলগাঁও থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে অরু ভ্যালি। বরফে ঢাকা পর্বত শৃঙ্গ, সবুজ মাঠ, পাহাড়ি ঝর্না ইত্যাদি নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর অরু উপত্যকা। কোলহোই হিমবাহ এবং তরসর হ্রদ ট্রেকিংয়ের বেস ক্যাম্প এই উপত্যকা। কোলহোই হিমবাহ কাশ্মীরের বৃহত্তম হিমবাহ। এছাড়া লিদ্দরওয়াত, বিশনসর-কিশনসর এবং কঙ্গনের ট্রেকিং রুটের মধ্যে পড়ে অরু ভ্যালি। ট্রেকিংয়ে আগ্রহী হলে এই উপত্যকা ঘুরে আসতে পারেন।
গুরেজ উপত্যকা: পর্যটকদের মধ্যে খুব বেশি জনপ্রিয় নয় গুরেজ ভ্যালি। তবে, কাশ্মীরের অন্যতম সেরা পর্যটনস্থল এই গুরেজ। কিষেণগঙ্গা নদীর পাশে সবুজ গালিচা বিছানো গুরেজ উপত্যকা। তবে, শীতকালে এই উপত্যকা ঢাকা থাকা সাদা বরফের চাদরে। এখান থেকে দেখা যায় ত্রিকোণাকৃতি হাব্বাখাতুন। গুরেজ উপত্যকা যেতে গেলে অতিক্রম করতে হয় ১১,৬৭২ ফুট উচ্চতার রাজদান পাস। কিন্তু শীতকালে বরফে ঢাকা থাকে এই পাস। অনেক সময় রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়। শ্রীনগর থেকে গুরেজ প্রায় ১২৩ কিলোমিটারের পথ। বান্দিপুর হয়ে গুরেজ ৮৬ কিলোমিটারের রাস্তা।
লোলাব ভ্যালি: কাশ্মীর গিয়েছেন আর বেতাব ভ্যালি ঘুরে দেখেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে, এবার কাশ্মীর গেলে ঘুরে দেখুন লোলাব ভ্যালি। কালারুস, পোতনাই এবং ব্রুনাই—এই তিন উপত্যকা নিয়ে গড়ে উঠেছে লোলাব ভ্যালি। আপেল-আখরোটের বাগান ঘিরে রয়েছে গোটা উপত্যকাকে। তার সঙ্গে রয়েছে অর্কিডের বাগান। এই উপত্যকাও বান্দিপুরের কাছেই অবস্থিত। বান্দিপুর থেকে লোলাব উপত্যকাকে আলাদা করেছে নাগমার্গ। এটিও খুব সুন্দর একটি উপত্যকা। কাশ্মীর বেড়াতে গেলে এসব পর্যটনকেন্দ্রগুলো তালিকায় রাখতে পারেন।