ডিসেম্বর দোরগোড়ায়। ভ্রমণের জন্য এটাই আদর্শ সময়। বিশেষত, আপনি যদি বরফ, তুষারপাত দেখতে চান, এই মাসেই যেতে পারেন কোনও পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্রে। বাড়ির কাছাকাছিও রয়েছে সেই সুযোগ। সিকিমের লাচুং গেলেই মিলবে তুষারপাত ও বরফ। ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলছে লাচুং। বেইলি ব্রিজ তৈরি করে লাচেনের সঙ্গে মঙ্গনের যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। ব্যস, এখন লাচুং যাওয়ার আর নেই মানা। কিন্তু দু’দিনের বেশি রাত্রিবাসের অনুমতি মিলবে না।
চলতি বছরের অক্টোবরে লোনাক হ্রদের উপর মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে যায় তিস্তার জলে। ভেঙে যায় সিকিমের চুংথাম বাঁধ। তিস্তায় হড়পা বানের জেরে গ্যাংটক, নামচি ও মঙ্গনের মতো জেলায় রাতারাতি বন্ধ হয়ে যায় পর্যটকদের যাতায়াত। তবে, পুজোর মরশুম থাকায় দ্রুত পুনরুদ্ধারের চেষ্টা শুরু হয়। পুজোর ছুটিতে না থুলা, ছাঙ্গু গিয়েছেন বহু পর্যটক। কিন্তু লাচুং-লাচেন যাওয়ার অনুমতি মিল ছিল না। তবে, এখন বিপর্যয়ের ধাক্কা কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে সিকিম।
এবার ১ ডিসেম্বর থেকে লাচুংয়েও যেতে পারবেন পর্যটকেরা। লাচুং ঘুরতে গেলেও লাচেন ও গুরুদংমার আপাতত বন্ধই থাকছে। লাচুং-ইয়ুমথাং-লাচেন-গুরুদংমার—উত্তর সিকিমের এই ট্রিপটা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু লাচেন ও গুরুদংমার বেড়াতে যাওয়ার জন্য এখনও সুরক্ষিত নয়। যদিও বরফ ও তুষারপাতের মজা আপনি লাচুংয়েও পাবেন। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই পাহাড়ি গ্রাম ঢাকা থাকে সাদা বরফের চাদরে।
সাধারণত গ্যাংটক থেকে মঙ্গন, সিংঘিক, চুংথাং হয়ে পৌঁছাতে হয় লাচুংয়ে। এবারে লাচুং যেতে হবে সাঙ্গালান-টং-চুংথাংয়ের পথ দিয়ে। লাচুং নদীর পাশে অবস্থিত পাহাড়ি গ্রাম। এখন দু’দিনের বেশি রাত্রিবাসের অনুমতি মিলছে না। তাই দু’দিনের মধ্যে ঘুরে নিতে পারেন লাচুং মনাস্ট্রি। ১৮০৬ সালে লাচুং নদীর তীরে বৌদ্ধ ধর্মের নাইংমাপা এই মনাস্ট্রি প্রতিষ্ঠা করেন। পাশাপাশি যেতে পারেন সিঙ্ঘিক, মাউন্ট কাতাও, ভীম নালা জলপ্রপাত, জিরো পয়েন্ট, সিংবা রডোডেনড্রন অভয়ারণ্য, মঙ্গন ইত্যাদি জায়গা।
চুংথাং থেকে লাচেন যাতায়াতের জন্য বেইলি ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেটা ব্যবহারের জন্য কতটা সুরক্ষিত তা নিয়ে এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে। তাই আপাতত পর্যটকদের জন্য বন্ধ রয়েছে লাচেনের দরজা। পর্যটনদের জন্য লাচেন ও গুরুদংমার রাস্তা খুলে গেলেই উত্তর সিকিম ভ্রমণ সার্থক হয়ে যাবে।