Low Budget Destination: টাইগার হিলের পাদদেশে বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে অবস্থিত চা বাগান। এটাই রঙ্গারুন। দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই রঙ্গারুন ইংরেজদের আমলদের জনপ্রিয়। দিন-দিন যে সব অফবিট জায়গাগুলো জনপ্রিয় হচ্ছে, সেখানে রঙ্গারুনের চাহিদা আরও বেড়েছে। এমন চা বাগানে ঘেরা শান্ত পাহাড়ি গ্রামে কে না ছুটি কাটাতে চাইবে। তার উপর খরচও কম। তাছাড়া হাতে কম দিনের ছুটি থাকলেও খুব একটা সমস্যা হয় না রঙ্গারুন ঘুরে দেখতে। অনেকে আবার দার্জিলিংয়ের ঘিঞ্জি পরিবেশ এড়াতে এই পাহাড়ি গ্রামকে বেছে নেন। কিন্তু রঙ্গারুন এবং এখানকার চা বাগানকে ঘিরে যে ইতিহাস রয়েছে, তা কি জানা আছে?
প্রায় ৫০ হেক্টর জমি নিয়ে বিস্তৃত চা বাগান। তাই রঙ্গারুনের কোলে দাঁড়িয়ে যে দিকে চোখ যাবে, শুধুই দেখা মিলবে সবুজের। এক পশলা যদি বৃষ্টি হয়ে যায়, তখন আরও সতেজ দেখায় চা বাগান। এই অঞ্চলের উচ্চতাও খুব বেশি নয়। মাত্র ৬,০০০ ফিট উচ্চতায় দাঁড়িয়ে রঙ্গারুন। ১৭৭৬ সালে বাংলার তৎকালীন রাজ্যপাল লর্ড অ্যাডেন অ্যাসলের হাত ধরে জনপ্রিয় হয় রঙ্গারুন। ইংল্যান্ডে যে দার্জিলিং টি জনপ্রিয় ছিল, তার মধ্যে বেশি কদর ছিল রঙ্গারুনের চায়ের।
চা বাগানের আঁকাবাঁকা পথ ধরে এখানে ঘুরে বেড়াতে মন্দ লাগবে না। আর তার সঙ্গে মিঠে রোদ বেশ আরামদায়ক। এখানে বসেই আপনার কেটে যাবে সারা দিনটা। দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটারের পথ রঙ্গারুন। কিন্তু দার্জিলিংয়ের মতো ঘিঞ্জি নয় রঙ্গারুন। দার্জিলিং থেকে যে রাস্তা জোড়বাংলোর দিকে যাচ্ছে, সেখান থেকে ডান দিকের রাস্তা ধরে ৪ কিলোমিটার গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন রঙ্গারুনে। জন মানবহীন সিঞ্চল স্যাংচুয়ারির ভিতরে রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে হবে আপনাকে। জঙ্গলের রাস্তা শেষ হলেই দেখা মিলবে সবুজে ঘেরা চা বাগানের। তখনই বুঝবেন আপনি রঙ্গারুন পৌঁছে গিয়েছেন। নিচে বিস্তীর্ণ চা বাগান আর উল্টো দিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা। আর গ্রামের নিচে দিয়ে বয়ে চলেছে রংডং নদী।
বছরের যে কোনও সময় আপনি রঙ্গারুন বেড়াতে যেতে পারবেন। গ্রীষ্মকালে যেমন মনোরম আবহাওয়া পাবেন, তেমনই শীতে পাবেন নীল ঝকঝকে আকাশ। আর বর্ষায় বৃষ্টি তো একটু হবেই, কিন্তু আপনার ভ্রমণ একদম মাটি হবে না। বরং, ক্যামেরায় বন্দী করতে পারবেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এছাড়া সকালে বেড়িয়ে রঙ্গারুন থেকে ট্রেক করতে আসতে পারেন ডাউন হিল। রংডং নদীর পাড় ধরে এগিয়ে যেতে হবে। মাত্র ৩-৪ ঘণ্টার ট্রেক। শুধু সমস্যা হল, রঙ্গারুনে থাকার জায়গা সীমিত। হাতে গোনা ৪-৫টি হোমস্টে পেয়ে যাবেন। সেখানে থাকা-খাওয়া নিয়ে আপনার মাথাপিছু খরচ হতে পারে ১,৫০০ টাকা।