বর্ষায় বেড়াতে যাওয়ার আগে সাত-পাঁচ ভাবতে হয়। কারণ এই সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু মন খারাপের ওষুধ যেখানে পাহাড় যেখানে ঘরে বসে থাকবেন কীভাবে। বরং বর্ষায় এমন একটি জায়গা বেছে নিন যেখানে পাহাড়, জঙ্গল, ঝরণা, নদী সবকিছু একসঙ্গে রয়েছে। বর্ষায় ঘুরে আসতে পারেন মেঘালয় থেকে। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় মেঘালয়ে। পাশাপাশি এখানে রয়েছে এশিয়ার স্বচ্ছতম নদী দাওকি। তবুও বেশ কিছু কারণ রয়েছে যার টানে আপনি ছুটে যেতে বাধ্য হবে এখানে।
মেঘেদের আনাগোনা বেড়ে যায় বর্ষায়। এরই মাঝে ধরা দেয় সবুজ প্রান্তর, ঢেউ খেলানো পাহাড়। আবার ওই পাহাড়ের গা দিয়েই নেমে আসে জলপ্রপাত। পাশাপাশি স্বচ্ছ নদী ও হ্রদের সংখ্যাও নেহাত কম নেই এখানে। এই সবকিছু নিয়েই আরও মোহময়ী হয়ে ওঠে মেঘালয়।
চেরাপুঞ্জিতে ভারতের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এখন যদিও সেই জায়গা দখল করেছে মৌসিনরাম। কিন্তু বর্ষায় এই রাজ্য ভোরে ওঠে সবুজ। গারো আর খাসি পাহাড় জুড়ে অবস্থিত মেঘালয়ের প্রতিটা গ্রাম বর্ষায় আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। সবচেয়ে সুন্দর দেখায় মেঘালয়ের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা জলপ্রপাতগুলি।
মেঘালয়ের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হল এলিফ্যান্ট জলপ্রপাত। যদিও এই নাম ব্রিটিশদের দেওয়া। স্থানীয়রা একে বলে ‘কা কশাইদ লাই পাতেং খোহসিউ’, এর বাংলা অর্থ হল তিন ধাপের জলপ্রপাত। বর্ষায় মেঘেদের আনাগোনা এখানে বেড়ে যায়। এই জায়গায় যাওয়ার জন্য আপনাকে যেতে হবে শিলং। খাসি পাহাড়ের কোলে অবস্থিত শিলং বর্ষার সময়ে মোহময়ী রূপ ধারণ করে।
মেঘালয় বেড়াতে গেলে অবশ্যই ঘুরে আসবেন লিভিং রুট ব্রিজ। পূর্ব খাসি পাহাড়ের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র এই লিভিং রুট ব্রিজ। সম্প্রতি এই লিভিং রুট ব্রিজের নাম উঠেছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানে। বর্তমানে মেঘালয়ের ৭২টি গ্রাম জুড়ে প্রায় ১০০টি লিভিং রুট ব্রিজ রয়েছে। এই ব্রিজ গ্রামবাসীরাই তৈরি করেন। ১০-১২ বছর সময় লেগে যায় এক-একটা শিকড় তৈরি হতে।
মেঘালয়ের অন্যতম রোম্যান্টিক পর্যটন কেন্দ্র হল চেরাপুঞ্জি। কিন্তু সম্প্রতি পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে দাওকি নদী। দাওকির সবুজ স্বচ্ছ জলে ধরা দেয় মেঘেদের প্রতিচ্ছবি। পশ্চিম জয়ন্তী পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এশিয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার গ্রাম মাওলিননং-এর মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে এই দাওকি। মেঘালয় বেড়াতে গেলে কোনওভাবেই মিস করবেন না এগুলো।