চারদিক ঘেরা ঘন সবুজ জঙ্গলে। আর চারদিকে উঁচু-উঁচু পাহাড়। এরই কোলে গড়ে উঠেছে ছোট্ট জনপদ রোলেপ। আর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা রংপোখোলা। নদীর পাড়ে বসে থাকলেই কেটে যাবে সারাটা দিন। এমনকী সন্ধে নামার মুখেও রংপোখোলা ধারে বসে থাকতে মন্দ লাগবে না। এটাই তো রোলেপের বৈশিষ্ট্য। এখনও বুঝতে পারছেন না কোন ডেস্টিনেশনের কথা বলছি, কোথায় এই রোলেপ? সিকিমের যে পুরনো সিল্ক রুট পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয়, তারই প্রবেশদ্বার এই রোলেপ। পূর্ব সিকিমের কোলে অবস্থিত এই ছোট্ট রোলেপ।
মূলত রংপোখোলা নদীকে কেন্দ্র করেই রোলেপ হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। এখানকার ঝুলন্ত সেতু দেখতেই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু শান্তির খোঁজে চাইলে দু’রাত কাটাতে পারেন রোলেপে। যদিও রোলেপের অন্যতম আকর্ষণ হল বুদ্ধ জলপ্রপাত। ৪০ ফুট উঁচু এই জলপ্রপাত। গ্রাম থেকে বেশি দূরে নয় এই জলপ্রপাত। রংপোখোলা পাড় ধরে হেঁটে গেলেই পৌঁছে যাবেন জলপ্রপাতের কাছে। এখানেই বসে থাকলে কেটে যাবে সময়। তাছাড়া এখানে রংপোখোলা এতটাই খরস্রোতা যে হোমস্টের ঘরে বসেও শোনা যাবে নদীর বয়ে চলার শব্দ। যদিও রোলেপের পরিবেশও শান্ত। যার জেরে খরস্রোতা রংপোখোলার শব্দ ও পাখির ডাক ছাড়া আর কোনও আওয়াজ এখানে পাওয়া যায় না।
রোলেপকে সিল্করুটের প্রবেশদ্বার বলা হয়। তাই রোলেপ যেতে গেলে সেবক রোড ধরে আপনাকে পৌঁছতে হবে রংলি বাজার। এই রংলি বাজার থেকে রোলেপ এবং সিল্করুট যাওয়ার পারমিট নিতে হবে। এই সুযোগে রংলি বাজারের মোমো চেখে দেখতে ভুলবেন না। রংলি বাজার থেকে রোলেপের দূরত্ব মাত্র ২০ কিলোমিটার। রোলেপে রাত কাটিয়ে অনায়াসে চলে যেতে পারেন পদমচেন, জুলুক, নাথাং ভ্যালি, কুপুপ ইত্যাদি। আর যদি জুলুক নাও যেতে চান, তাহলে রোলেপ থেকে ঘুরে আসতে পারেন পুরনো সিল্ক রুটের অন্যতম জনপ্রিয় গ্রাম আরিতার।
আরিতার সিকিমের অত্যন্ত পুরনো একটি গ্রাম, তাই এখানে ঘন জনবসতি। যদিও আরিতারে পর্যটকদের ভিড় থাকে মূলত আরিতার হ্রদের কারণে। রোলেপ থেকে অনায়াসে ঘুরে নেওয়া যায় এই আরিতার হ্রদ। আর আরিতার হ্রদের পাশাপাশি রোলেপ থেকে ঘুরে দেখতে পারেন মেনমেখো হ্রদ, চোখেন ভ্যালি, বুদ্ধ কেভ, শোখে খোলা নদী ইত্যাদি।
কখন যাবেন, কীভাবে যাবেন এবং কোথায় থাকবেন-
বছরের যে কোনও সময় আপনি রোলেপ যেতে পারেন। কিন্তু রংপোখোলার সৌন্দর্য দেখার জন্য বর্ষাকালে আপনাকে রোলেপ যেতে হবে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রোলেপের দূরত্ব ১৪০ কিলোমিটার। গাড়িতে খরচ পড়বে প্রায় ৪,০০০ টাকা। রোলেপে রাত কাটানোর জন্য একাধিক হোমস্টে রয়েছে। যেখানে থাকা-খাওয়া নিয়ে খরচ হবে মাথাপিছু ১২০০ টাকা।