বাঙালির কাছেপিঠে পাহাড় বলতে দার্জিলিং। হাতে কম দিনের ছুটি থাকলেও শান্তির খোঁজে পাড়ি দেন দার্জিলিংয়ে। দার্জিলিং পৌঁছে স্লিপিং বুদ্ধার দেখা মিললেও কিন্তু শান্তির খোঁজ মেলে না। শৈলশহরেও ম্যাল রোডেও পর্যটকদের সমাগম। ঘুমেও ভিড় বাঙালিদের। এই কারণেই আজকাল দার্জিলিংয়ের আশেপাশের অফবিট স্পটগুলো পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে। কিন্তু সেই জায়গাগুলোয় যেতে গেলেও পাকদণ্ডী পথে ঘণ্টাখানেক ঘুরপাক খেতে হয়। তবে, দার্জিলিংয়ের মূল শহর থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রয়েছে একটি অফবিট ডেস্টিনেশন, সিংমারি।
দার্জিলিংয়ের ম্যাল থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত সিংমারি। এমনকী দার্জিলিংয়ের রোপওয়ে, হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং মিউজিয়াম এই অফবিট জায়গা থেকে আরও কাছে। মাত্র ২ কিলোমিটারের পথ। যাঁরা শৈলশহরের ঘিঞ্জি পরিবেশ পছন্দ করেন না, তাঁরা এই সিংমারিতে রাত কাটিয়ে ঘুরে নিতে পারেন দার্জিলিং। সিংমারির কোলে দাঁড়িয়ে দেখা যায় গোটা শৈলশহরকে। দেখা যায়, পাহাড়ের গায়ে কীভাবে গড়ে উঠেছে গোটা শহর। রাতের অন্ধকারে আলোর রোশনায় জ্বলে ওঠে গোটা শহর। দেখতে লাগে আরও মোহময়ী।
সিংমারি থেকে আপনি দার্জিলিংয়ের শহুরে জীবন ও পাহাড়ের গ্রাম্যজীবন দুটোই উপভোগ করতে পারবেন। সিংমারি প্রবেশের সময় ঘিঞ্জি মনে হলেও, গোটা গ্রাম ঘেরা সবুজ চা বাগানে। আর গ্রামের মধ্যে প্রবেশে করে গেলে আর সেই জনবহুল দৃশ্য খুঁজে পাবেন না। কিন্তু যে দৃশ্যের কোনও হেরফের হবে না, তা হল কাঞ্চনজঙ্ঘা। গ্রামের প্রতিটা কোণা থেকে আপনি কাঞ্চনজঙ্ঘা রেঞ্জ দেখতে পাবেন। সবুজ চা বাগানের মোড়া সিংমারি। আর গ্রামের মধ্যে রয়েছে একটি ছোট্ট গুম্ফা। দার্জিলিংয়ের জনপ্রিয় চা বাগান সিংটম এই গ্রামের কোলেই অবস্থিত। পাহাড়ি পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে ঘুরে নিতে পারেন সিংটম চা বাগান। এই চা বাগান থেকেও দেখা মেলে কাঞ্চজজঙ্ঘার। চাইলে ঘুরে দেখতে পারেন সিংটমের চায়ের কারখানা। তাছাড়া এই গ্রামের প্রতিটা কোণাই যেন এক-একটা ভিউ পয়েন্ট।
কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন-
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে পৌঁছে যান দার্জিলিং শহর। দার্জিলিং থেকে শেয়ার গাড়িতে মাত্র ১৫টাকা ভাড়া দিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন সিংমারি। আর যদি দার্জিলিং থেকে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে যান, তাহলে খরচ পড়বে মাত্র ২৫০ টাকা। সিংমারিতে রাত কাটানোর জন্য একাধিক হোমস্টে পেয়ে যাবেন। সেখানে থাকা খাওয়া নিয়ে জনপ্রতি ১,২০০ টাকা খরচ।