রোপওয়েকে গণপরিবহনের অঙ্গ করে তুলতে চলেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। বিষ্ণুপরের দ্রুত চালু হবে এই পরিষেবা। কিন্তু এই বিষ্ণুপুর বাঁকুড়ায় অবস্থিত নয়। বরং তিলোত্তমার খুব কাছেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপরে গণপরিবহণের অঙ্গ হতে চলেছে রোপওয়ে। জনপদের উপর দিয়ে এবার চলবে রোপওয়ে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র স্বামীনারায়ণ মন্দির। এবার সেখানে পৌঁছে যাওয়া যাবে আকাশ পথে। স্বামীনারায়ণ মন্দির থেকে ভাসা পর্যন্ত এই দেড় কিলোমিটারের পথ রোপওয়ে চেপে যাতায়াত করতে পারবেন মানুষ। আগামী দিনে এই রোপওয়ে পরিষেবা কলকাতার বুকেও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
শহরের বুকে রোপওয়ে পরিষেবা পশ্চিমবঙ্গের কোথাও নেই। রাজ্যের বেশ কিছু বিনোদন পার্কে রোপওয়ে পরিষেবা থাকলেও তা মূলত জয় রাইড। গণপরিবহণের অংশ হিসেবে কখনওই রোপওয়েকে ব্যবহার করা হয়নি পশ্চিমবঙ্গে। তবে, এবার গণপরিবহণের অঙ্গ হিসেবেই মহানহরের রোপওয়ে চালুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। প্রথমে স্বামীনারায়ণ মন্দির থেকে ভাসা পর্যন্ত এই রোপওয়ে পরিষেবা চালু করা হবে।
রোপওয়ের যাত্রাপথ এবং স্টেশনের জন্য খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া রোপওয়ের কারণে বায়ুদূষণের কোনও ঝুঁকি নেই। স্বামীনারায়ণ মন্দির থেকে ভাসা পর্যন্ত যে রোপওয়ে পরিষেবা চালু হচ্ছে সেখানে প্রতিটা কেবল কারে আট থেকে দশজন যাত্রী একসঙ্গে যাতায়াত করতে পারবেন। রোপওয়ে স্টেশনের উপরে ওঠার জন্য লিফটেরও ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। প্রথম ধাপে এই দেড় কিলোমিটারের রোপওয়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে এগোচ্ছে।
রোপওয়ের স্বাদ নিতে গেলে হয়তো শহরের বিনোদন পার্কে ভিড় করতে হয় কিংবা পাহাড়ে যেতে হয়। দার্জিলিং, গ্যাংটকের রোপওয়ে পরিষেবা বেশ জনপ্রিয়। তবে এই পরিষেবা পর্যটন শিল্পের অংশ। কিন্তু শহরাঞ্চলে এই ধরনের কোনও সুবিধা নেই। এমনকী পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করেও এর আগে কলকাতায় রোপওয়ে চালু হয়নি। তাই এই রোপওয়ের পরিকল্পনা শহরের পর্যটন শিল্পকেও এক অন্য মাত্রা এনে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
মঙ্গলবার পরিবহণ দফতরে এই বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, পরিবহণসচিব বিনোদ কুমার, দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। যে সংস্থা এই রোপওয়ে তৈরির কাজ করবে, সেই সংস্থার কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। আপাতত আমতলার কাছে এই দেড় কিলোমিটার অংশে রোপওয়ে চালু হবে। আমতলা, বাঁকড়াহাট রুটে সাতটি স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে রোপওয়ে তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও সফল হলে আগামী দিনে আমতলা-বাঁকড়া এবং জোকা-শিরাকোল রুটেও এই রোপওয়ে পরিষেবা চালু হবে। এমনকী কলকাতাতেও রোপওয়ে পরিষেবা চালু করা যায় কি না সেই নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। কলকাতায় রোপওয়ে পরিষেবা চালু হলে তা শহরের ট্রামলাইন ধরে এগোতে পারে। এমনকী এই রোপওয়ে পরিষেবাকে কাজে লাগিয়ে গঙ্গা পারাপার করা যায় কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।