নয়া দিল্লি: চলতি বছরের বাজেট অধিবেশনেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman) জানিয়েছিলেন যে জীবনবীমা বা এলআইসি(LIC)-র আইপিও (IPO) আনা হবে। আইপিও এলে শেয়ার বাজারে ফের একবার জোয়ার আসবে বলেই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধই (Russia-Ukraine War) বদলে দিচ্ছে গোটা চিত্রটা। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে যে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে, তার জেরেই এলআইসির আইপিও পিছিয়ে যেতে পারে। আগামী অর্থবর্ষ অবধি পিছিয়ে যেতে পারে। সরকারের তরফে চলতি মাসেই জীবনবীমার শেয়ারের ৫ শতাংশ বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, যার বিনিময়ে ৬০ হাজার কোটি অবধি পাওয়া যেত, কিন্তু যুদ্ধের জেরে এই পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে।
নতুন অর্থবর্ষে কেন্দ্রের লক্ষ্য ছিল ৭৮ হাজার কোটি টাকা বিলগ্নিকরণ। এলআইসির আইপিও-র আত্মপ্রকাশ হলে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারতীয় বাজারেও। বিগত এক সপ্তাহ ধরেই শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে।
আশিকা গ্রুপের প্রধান অরিজিৎ মালাকার বলেন, “বর্তমানে বাজারে যে অস্থির অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে এআইসির আইপিও-র আত্মপ্রকাশ হলে, তা খুব একটা লাভজনক হবে না। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার আগামী অর্থবর্ষ অবধি এলআইসির আইপিও পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে”। এই সম্ভাবনার কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, অর্থনীতির বাজার যখন অস্থির থাকে, তখন বিনিয়োগকারীরা কোনও ঝুঁকি নিতে চান না। নতুনভাবে কোনও ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ করেন না। সুতরাং লাভজনক পরিস্খিতিতে এলআইসির আইপিও-র আত্মপ্রকাশ করাই শ্রেয়। আর তার জন্য বাজারে স্থিতাবস্থা থাকা প্রয়োজন, যাতে বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগের ঝুঁকি নেন।
ইক্যুইটিমাস্টার নামক একটি গবেষণা সংস্থার সহ-প্রধান তনুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, বাজারের পরিস্থিতি যখন টলোমলো, সেই সময়ে বিনিয়োগ না করাই শ্রেয়। একইভাবে এলআইসির আইপিও-ও যদি এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাজারে আত্মপ্রকাশ করে, তবে তা বাজারে বিশেষ দাগ কাটতে পারবে না। আইপিও-র আত্মপ্রকাশ পরবর্তী অর্থবর্ষ অবধি পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব হলেও, বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে নিশ্চিতভাবে কেউই বলতে পারেননি।