শীতকাল মানেই শুষ্কতা। খুশকির সমস্যা। এই সব সাধারণ সমস্যাকে দূর করতে বাজারচলতি রাসায়নিক-যুক্ত শ্যাম্পু ও তেল ব্যবহার করে চুলকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে।
আগেকার দিনে প্রাকৃতিক তেল ও টোটকা ব্যবহার করেই খুশকি, চুলপড়ার সমস্যাগুলিকে নিরাময় করা হত। সঙ্গে চুলকে আরও স্বাস্থ্যবান ও উজ্জ্বল করে তোলাও সম্ভব হত। আজকের দিনে হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টের মধ্যে ভাল গুণ থাকলেও শেষ পর্যন্ত যে উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে তার সমাধান করা আর হয়ে ওঠে না। ফলে চুলের ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
যদি চুলকে আগের তুলনায় শক্তপোক্ত করতে চান তাহলে ঘরোয়া টোটকা যে সেরা উপায়, তা একবাক্যে স্বীকার করেন বিশেষজ্ঞরাও। এই ঘরোয়া টোটকায় অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে পুরনো দিনের কিছু কৌশল। যেগুলির বেশিরভাগটাই আমাদের দিদা-ঠাকুমাদের তৈরি ভেষজ ও প্রাকৃতিক টিপসগুলি এখনও সমানভাব সমৃদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য। যার জেরে চুল থাকে সুন্দর, স্বাস্থ্যবান ও শক্তিশালী।
কারি পাতা ও নারকেল তেল: চুলের জন্য দারুণ কার্যকরী এই নারকেল তেল ও কারি পাতা। পুরনো দিনের মানুষ আছেন. তাঁরা এখনও চুলের জন্য নারকেল তেল মেখে থাকেন। পুষ্টিতে ভরপুর নারকেল তেলের পাশাপাশি চুলের জন্য কারি পাতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। মসৃণ ও চকচকে, মজবুত চুলের জন্য প্রথমে নারকেল তেল গরম করুন। তাতে একমুঠো কারি পাতা দিয়ে ফুটতে দিন। এরপর ছেঁকে নিয়ে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ম্যাসাজ করুন। কিছুদিন পর দেখেবেন চুলের শেষ প্রান্তে ফেটে যাওয়ার সমস্য়া উধাও হয়ে গিয়েছে।
শিকাকাই পাউডার- মজবুত চুলের জন্য শিকাকাই পাউডার প্রয়োগ করা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। শুধু চুল মজবুত করতেই নয়, চুলের বৃদ্ধির জন্যও এই ভেষজ উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। শিকাকাই পাউডারের পেস্ট চুলে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলে খুশকির সমস্যা দূর হয় ও চুল পড়ার প্রবণতাও তুলনামূলক ভাবে কমে যায়।
মেথি বীজ- চুলের উপকারে জন্য মেথি বীজ যে কতটা অপরিহার্য তা অনেকেই জানেন। ১ টেবিলস্পুন মেথি বীজ সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। এরপর গ্রিন্ড করে সেই পেস্ট চুলে ব্যবহার করুন। এর জের চুলের গোড়া মজবুত হয়, উজ্জ্বলতা বাড়ে দ্বিগুণ। এছাড়া গরম তেলে কয়েকটি মেথি বীজ ফেলে দিয়ে একটি ভেষজ তেল বানিয়ে নিতে পারেন। তাতেও উপকার পাবেন।
নিম পাতা- চুলের জন্য সেরা উপকরণ হল নিম পাতা। চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে গেলে প্রথমে নিম পাতা বেটে রাখুন। এরপর চুলে প্রয়োগ করুন। নিম পাতার চিরুনি দিয়ে বেশ কয়েকবার চুল আঁচড়ানো হলে চুলের গোড়ায় পুষ্টি সমানভাবে পোঁছে যায়। তাতে চুলের বৃদ্ধি হয় ও গোড়া মজবুত হয়।