TV9 Bangla Digital | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক
Nov 02, 2021 | 7:45 AM
কালীপুজো,দীপাবলি মানেই বাংলার রীতি অনুযায়ী চৌদ্দ শাক ও চৌদ্দ বাতি জ্বালানো। এক সময় মা-ঠাকুমারা মাটির প্রদীপে সলতে দিয়ে আগুন জ্বালাত। কিন্তু সময় বদলেছে। এখন বাহারি রঙের চীনা বাতির আলোয় সেজে ওঠে বিভিন্ন বাড়ি। তাই মাটির প্রদীপ যাঁরা তৈরি করেন সেই সকল বাড়ির রোজগার আজ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বিক্রি না হওয়ায় লাভের মুখ দেখেননা তাঁরা। ফলত, অন্য পেশা বাছতে বাধ্য হচ্ছেন।
একটা সময় ছিল যখন কালীপুজো আসলে নাওয়াখাওয়ার ফুরসত ছিলনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার কুমোরপাড়ার কারিগরদের।পুজোর আগে মাটির প্রদীপ তৈরির কাজে চরমব্যস্ততা ছিল কুমোরপাড়ার প্রতিটি বাড়িতেই।কিন্তু এখন সেসব অতীত,হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার এখন মাটির প্রদীপ তৈরির কাজে যুক্ত।কালী পুজোর আগে তারাই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সামান্য কিছু রোজগারের আশায়।
ইতিমধ্যে অনেকেই মাটির সামগ্রী তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। যুক্ত হয়েছে চাষবাস বা অন্য পেশায়।তেমনই একটি কুমোরপাড়ার করুণ ছবি উঠে এলো চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের বসনছোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাচকা গ্রামে ও ক্ষীরপাই পৌর এলাকায়। এই গ্রামে ৬০-৭০ টির মতো পরিবারের বসবাস।বরাবরই মাটির তৈরি নানান জিনিস তৈরি করে সংসার চালাতো বাচকা গ্রামের অধিকাংশ পরিবার।বিগত কয়েকবছর ধরে ধুঁকছে এই গ্রামের মাটির কাজের সাথে যুক্ত কারিগরেরা, একই পরিস্থিতি ক্ষীরপাইয়ে।
ধীরে ধীরে বাজার ছেয়ে গিয়েছে টুনি লাইট,রঙবেরঙের এলইডি আলো সহ ছাঁচের ডিজাইনার মোমবাতি সাথে রয়েছে আতসবাজির দাপট। ফলে ধীরে ধীরে বাজারে চাহিদা কমতে শুরু করে মাটির প্রদীপের,এই মাটির প্রদীপই একটা সময় কালী পুজোর আগে গ্রামবাংলার ঘর আলো করে রাখতো।ডিজিটালের যুগে সেসব বন্ধের মুখে,ফলে রুজিরোজগারে টান পড়েছে এইসকল কারিগরদের।
তারউপর গত দেড় দু'বছর করোনা পরিস্থিতিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে বলে দাবি চন্দ্রকোনার বাচকা গ্রামের কুমোরপাড়ার কারিগরদের।তাই কালী পুজোর আগে এই গ্রামের কয়েকটি পরিবার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মাটির প্রদীপ তৈরিতে,পুজোর আগে বাজারে নিয়ে গিয়ে তা বেচে যেটুকু অর্থ আসে তাতেই সন্তুষ্ট হওয়ার আশায়।বলাই চলে কালী পুজোর আগে প্রায় নিভতে বসেছে চন্দ্রকোনার কুমোরপাড়ার কারিগরদের মাটির প্রদীপ।