
শীতকালে শুকনো কাশির চাইতে ভীতিপ্রদ উপসর্গ আর কিছু হতেই পারে না। কারণ একবার শুরু হলে যেন থামার নামই নিতে চায় না শুকনো কাশি। তবে জানলে অবাক হবেন, কাশি আসলে আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি উপায়।

শ্বাস যাওয়ার পথে কোনওকিছু আটকে গেলে কাশি হয় এবং কাশির কারণেই কারণে আমাদের শ্বসনতন্ত্রের পথ উন্মুক্ত হয়। সুতরাং কাশি সবসময় ক্ষতিকর নয়। অবশ্য মাঝেমধ্যে অন্যান্য কারণেও মৃদুভাবে কাশি হতে পারে। মৃদুকাশিতে কোনওরকম শ্লেষ্মা থাকে না।

এই ধরনের কাশি একটানা হতে থাকে ঠান্ডা ও অ্যালার্জির কারণে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্সের কারণেও এমন কাশি হয়। ফলে গলা ব্যথা, কথা বলতে সমস্যা হতে থাকে।

কীভাবে মেটাবেন এমন সমস্যা? ঘরের কিছু উপাদান দিয়েই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। কীভাবে শুকনো কাশি থেকে রেহাই পাবেন, জেনে নিন একনজরে...

১) আদা: কাশির সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে আদার জুড়ি নেই। কারণ আদায় থাকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বা জীবাণুনাশক উপাদান। অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি বা প্রদাহনাশক উপাদানও রয়েছে আদায়। এছাড়া রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রেপপিরেটরি ট্র্যাক্টে শ্লেষ্মা জমার হাত থেকেও মুক্তি দিতে আদা কার্যকরী। নানা গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে শ্বাস ঢোকার পথের পেশিগুলিকে শিথিল করে কাশির সমস্যা দূর করতে পারে আদা। আদা খেতে পারেন কাঁচা, শুকনো এবং চায়ে মিশিয়েও।

২) মধু: কাশির উপশমে দীর্ঘদিন ধরেই মধুর ব্যবহার হয়ে চলেছে। মধুর উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। মধুতে রয়েছে যথেষ্ট মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। ফলে শুকনো কাশি সারিয়ে তুলতে ও গলায় তৎক্ষাণিক আরাম পেতে মধুর কোনও বিকল্প নেই। এছাড়া নাছোড়বান্দা শুকনো কাশির নিরাময়ে ঈষদুষ্ণে জলে একচামচ মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন প্রতিদিন। আরাম পাবেন।

৩) উষ্ণ পানীয়: ঈষদুষ্ণ জল, ভেষজ চা কিছুসময় অন্তর পান করলেও শুকনো কাশি কমে। কমে যায় গলায় অস্বস্তি এবং সর্দির সমস্যাও। এমনকী শরীরে জলের জোগানও বজায় রাখে ঈষদুষ্ণ পানীয়।

৪) পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতায় থকে মেন্থল যা গলার স্নায়ুগুলিকে অসাড় করতে পারে। এর ফলে বারংবার কাশির দমক আসা রোধ হয়। তাই চায়ের মধ্যেই তিন চারটি পুদিনা পাতা যোগ করে তারপর পান করলে উপকার মেলে।

৫) হলুদ: কাশির সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন তাঁদের কাছে হলুদ আশীর্বাদস্বরূপ। প্রতিটি বাড়িতেই হলুদ থাকে। হলুদের অ্যান্টিভাইরাল গুণাবলি এখন কারও কাছেই অজানা নয়। এছাড়া হলুদে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদানও। তাই বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুতিওে হলুদ ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে গরম দুধে খনিকটা হলুদ মিশিয়ে পান করলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। সারা শীতভর সর্দি, কাশির হাত থেকেও মেলে মুক্তি।