আদানি-হিন্ডেনবার্গের (Adani-Hindenburg) চর্চায় কম ধুঁকছে না শেয়ার বাজার (Share Market)। তার মাঝেই আবার নতুন বিপত্তি। বছরের শুরুতে লাভের মুখ দেখার আগেই নতুন নতুন বাধার সম্মুখীন হয়ে চলেছেন বিনিয়োগকারীরা (Investor)। সম্প্রতি, ধাপে ধাপে পতন দেখা গিয়েছে জি এন্টারটেইনমেন্টের (Zee Entertainment) শেয়ারের দামে। ক্রমাগত পড়ছে মূল্য, মাথায় হাত বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু হটাৎ এই অধঃপতন কেন? ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনাল-এর (National Company Law Tribunal) মুম্বই (Mumbai) বেঞ্চ এসেল গ্রুপ কোম্পানির (Essel Group Company) বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আইনি প্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি দিয়েছে। যার জেরে ক্রমাগত পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে জি এন্টারটেইনমেন্টের শেয়ারের দামে। মূলত ঋণ শোধ না করতে পারার অভিযোগকে কেন্দ্র করে আপাতত কাঠগড়ায় এই সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে এই পিটিশন দাখিল করেছে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক (Indusind Bank)।
এদিকে আদানির বিরুদ্ধে আর্থিক কারচুপির অভিযোগের জেরে ইতিমধ্যেই শিরে সংক্রান্তি বিনিয়োগকারীদের। বহু শেয়ারের দামে দেখা গিয়েছে বড় পতন। আর ঠিক তার মাঝে দেশের আরও এক বৃহৎ পুঁজির সংস্থার ঋণ খেলাপির অভিযোগে নতুন করে বিপদের সম্মুখীন বিনিয়োগকারীরা। এদিন জি-এর শেয়ারের দামে দেখা গিয়েছে ৯.৯৮ শতাংশ পতন। যার জেরে সংস্থার শেয়ারের বর্তমান মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯৫ টাকায়। শুধু তাই নয়, ইনট্রা ডে বা অন্তঃদিবস বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শেয়ারের দামে ১৪ শতাংশ পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে।
সমস্যা কোথায়?
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক সেকশন ৭-এর ইনসোলভেন্সি ও ব্যাঙ্করাপ্ট কোডের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করেছে এসেল গ্রুপের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, এসেল গ্রুপের টিভি অপারেটর সংস্থা সিটি নেটওয়ার্কসকে দেওয়া ১৫০ কোটি টাকা ঋণের অনেকটাই শোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। এখনও ৮৩ কোটি টাকা পাওনা রয়ে গিয়েছে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের। এদিকে জি এন্টারটেইনমেন্ট যেহেতু সিটি নেটওয়ার্কসের নেওয়া ঋণের গ্যারেন্টর ছিল, তার ফলেই ওই টিভি অপারেটর সংস্থার ঋণ খেলাপির জেরে আপাতত সঙ্কটে রয়েছে দেশের এই তাবড় মিডিয়া সংস্থা। এছাড়াও, আইডিবিআই ব্যাঙ্কও তাদের বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপির মামলা দায়ের করেছে বলে খবর।
মামলার জেরে বিপদে জি ও সোনি ব্যবসায়িক সন্ধি?
ভারতীয় টেলিভিশনের ব্যবসায় এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এই কালভার ম্যাক্স ও জি এন্টারটেইনমেন্টের একত্রীকরণ। কালভার ম্যাক্স এন্টারটেইনমেন্ট পূর্বে সোনি পিকচার্স নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু, বর্তমানে চলা আইনি ঝঞ্ঝাট কি ভেঙে দিতে পারে সংস্থা দু’টির যৌথ চুক্তির স্বপ্ন? হয় তো না। সাময়িকভাবে স্থগিত থাকতে পারে ব্যবসায়িক সন্ধি। এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ব্যবসায়িক সন্ধিকে দ্রুত সফলতার পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হাত বাড়াতে হবে জি-কেই। জি এন্টারটেইনমেন্ট যদি সিটি গ্রুপের হয়ে ঋণ শোধ করে দেয়, তা হলে এই একত্রীকরণে কোনও সমস্যাই ঘটবে না বলে মনে করছেন অনেকে।
বিঃ দ্রঃ – এটি একটি শেয়ার বাজার এবং বিনিয়োগ সম্পর্কিত শিক্ষামূলক প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কখনই বিনিয়োগে উৎসাহিত করা বা মুনাফা কামানোর সহজ উপায় খুঁজে দেওয়া নয়। শেয়ার বাজারের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানানোই এই প্রতিবেদনের অন্যতম লক্ষ্য। উল্লেখ্য, শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ সর্বদাই ঝুঁকিুপূর্ণ।