জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, কার্তিক মাসের বৃহস্পতিবারকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হলেও এই দিনে পঞ্চক কাল সারাদিন বজায় থাকে। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে পঞ্চক যুগে এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলি সম্পন্ন করা যায় না। কারণ পঞ্চক কালকে শুভ নক্ষত্র হিসেবে ধরা হয় না। তবে বৃহস্পতিবার ভগবান বিষ্ণু এবং অন্য দেবতাদের গুরু বৃহস্পতির সঙ্গে সম্পর্কিত। জ্যোতিষশাস্ত্রে বলা হয়েছে যে জীবনের সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সম্পদ, সমৃদ্ধি এবং প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করতে এই দিনটি অত্যন্ত কার্যকরী। এই ব্যবস্থাগুলি করলে জীবনের সব টানাপোড়েন দূর হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার পঞ্চক সময়ে কী কী করা উচিত, তা জেনে নিন…
এই প্রতিকারে অশুভ প্রভাব দূর হবে
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, পঞ্চক তিথিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাঁচটি প্রদীপ জ্বালিয়ে ভগবান শিব, দেবী দুর্গা, ভগবান বিষ্ণু, তুলসী এবং হনুমানজির সামনে একটি করে প্রদীপ রাখুন। এটি করলে পঞ্চকের অশুভ প্রভাব দূর হয় এবং জীবনে ইতিবাচক শক্তির সঞ্চার হয়। যার ফলে ধীরে ধীরে আপনার সমস্ত কাজে সাফল্য আসতে শুরু করবে।
চাকরি ও ব্যবসায় সাফল্য়
বৃহস্পতিবার কলা গাছের পূজা করা উচিত। এইদিন ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করা উচিত। পুজোর পর ময়দার মধ্যে ছোলার ডাল, গুড় ও হলুদ দিয়ে গরুকে খাওয়াতে পারেন। এতে করে ভগবান বিষ্ণুর পাশাপাশি গুরু বৃহস্পতির আশীর্বাদও পাওয়া যায়। তাতে জীবনে অর্থনৈতিক উন্নতির সম্ভাবনা তৈরি হয়, চাকরি ও ব্যবসায় দারুণ সাফল্য পাওয়া সম্ভব হয়ে পড়ে।
এই প্রতিকারে প্রসন্ন হবেন দেবী লক্ষ্মী
কার্তিক মাসের বৃহস্পতিবার কেশর দিয়ে ক্ষীর বানাতে পারেন। ক্ষীর বানানোর পর পাঁচজন অবিবাহিত মেয়েকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে খেতে দিন। তাদেরকে ক্ষীর দিয়ে দক্ষিণা দিয়ে পা স্পর্শ করুন। তারপর বাড়ির বড় যারা রয়েছেন, তাদেরকে ক্ষীর দিন। তারপর পুরো পরিবারকে প্রসাদ হিসেবে এই ক্ষীর বিলি করতে পারেন। এতে দেবী লক্ষ্মী প্রসন্ন হনষ এমনটা করলে জীবনে কখনও অর্থ ও খাবারের অভাব হবে না।
এই পদক্ষেপে সমস্ত বাধা অপসারণ হবে
বৃহস্পতিবার হলুদ রঙের জিনিস ব্যবহার করা উচিত। স্নানের পর হলুদ কাপড় পরুন এবং শুধুমাত্র হলুদ রঙের জিনিস দান করুন। তবে হলুদ ফল বা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করা উচিত নয়। এই রং পরিধান করে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করলে তা শুভ বলে মনে করা হয়। এদিন বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করা মঙ্গল। পুজোর পর বাড়ির পুজোর স্থানে হলুদের মালা ঝুলিয়ে দিন। চাকরি-ব্যবসায় কোনও বাধা বিপত্তি থাকলে তা দূর হবে এবং লাভের পথ সুগম হবে।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে
বাড়িতে শীঘ্রই কারোর যদি বিয়ের দিন ঠিক হয়, তাহলে বিয়ের জন্য জিনিসপত্র কেনা ও তৈরি করা এখন থেকে শুরু করুন। তবে পঞ্চক সময়ের কারণে কাঠের জিনিস কিনবেন না। বৃহস্পতিবার গায়ত্রী মন্ত্র জপ করে যজ্ঞ করুন এবং ধ্যান করুন। তারপর বিয়ের জন্য আসবাবপত্র কিনে বাড়িতে আনতে পারেন।
কোন যাত্রায় শুভ
কার্তিক মাসের বৃহস্পতিবার আপনাকে দক্ষিণ দিকে যাত্রা করতে হবে এবং এটি খুবই প্রয়োজনীয় তবে পঞ্চক সময়ের কারণে, তাহলে আপনার হনুমানজির মন্দিরে যাওয়া উচিত। মন্দিরে হনুমান চালিসা পাঠ করুন এবং পাঁচটি ফল নিবেদন করুন। ঈশ্বরকে আপনার ইচ্ছের কথা জানান। তারপর যাত্রায় রওনা দিন। এতে করে আপনার কাজ অবশ্যই সম্পন্ন হবে এবং পঞ্চকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দূর হবে।