নববর্ষের (Poila Baishakh 2023) পরেই পালিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya 2023)। প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয় তিথিতে অক্ষয় তৃতীয়া পালিত হয়। এ বছর অক্ষয় তৃতীয়া পালিত হবে আগামী ২২ এপ্রিল। অক্ষয় তৃতীয়া বহু জায়গায় আখা তীজ নামেও পরিচিত। এদিন প্রধানত দেবী লক্ষ্মীর (Godess Lakshmi) সঙ্গে সম্পদের দেবতা কুবেরেরও পুজো করা হয়। হিন্দুদের পাশাপাশি জৈন ধর্মালম্বীরাও এদিনটিতে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করেন। পুরাণ অনুযায়ী এই শুভ দিনে বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের জন্ম হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এদিন বেদব্যাস ও গণেশ মহাভারত রচনা শুরু করেছিলেন। পাশাপাশি এদিন থেকেই সত্য যুগ শেষ হয়ে ক্রেতা যুগের সূচনা হয়।
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, এদিন কুবেরের কঠোর তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল সম্পদ ও ঐশ্বর্যের অধিকারী হওয়ার আশীর্বাদ প্রদান করেছিলেন। লক্ষ্মীলাভ করেছিলেন বলে এদিন কুবের ও ধনলক্ষ্মীর পুজো করা হয়। মনে করা হয়, এই শুভ তিথিতে রত্ন বা জিনিসপত্র কিনলে গৃহে শুভ যোগ হবে। সুখ-শান্তি ও সম্পদ বৃদ্ধি পায়। শুভ কাজ করা হলে সেই কাজের অক্ষয় ফল অর্থাত অশেষ ফল পাওয়া যায়। এদিনে জপ, তপস্যা, তর্পণ ও যজ্ঞেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
তিথি ও শুভ সময়
অক্ষয় তৃতীয়া তারিখ: শনিবার, ২২ এপ্রিল ২০২৩
অক্ষয় তৃতীয়ায় পুজোর জন্য শুভ সময়: সকাল ৭টা ৪৯ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ২০ মিনিট
অক্ষয় তৃতীয়া কখন পালিত হবে?
২২ এপ্রিল, সকাল ৭টা ৪৯ মিনিট থেকে ২৩ এপ্রিল সকাল ৭টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত
তাৎপর্য
হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, অক্ষয় তৃতীয়াকে অত্যন্ত শুভ সময় বলে মনে করা হয়। এদিনে কোনও শুভ কাজ করার জন্য পঞ্জিকা দেখে কোনও শুভ সময় বের করার প্রয়োজন নেই। এদিনে করা সমস্ত কাজের শুভ ফল পাওয়া যায় ও ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে। এদিনটি বিবাহের জন্য সবচেয়ে শুভ সময় বলে মনে করা হয়। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দেবী লক্ষ্মী ও বিষ্ণুর আরাধনার পর পুরাণ পাঠ করা উচিত। ১০ মহাবিদ্যার একজন মাতঙ্গী দেবী অক্ষয় তৃতীয়ায় অবতীর্ণ হন। অক্ষয় তৃতীয়ায় ভগবান বিষ্ণুর হায়গ্রীব ও পরশুরাম অবতারও আবির্ভূত হয়েছিলেন। ত্রেতাযুগ ও সত্যযুগও এই দিন থেকেই শুরু হয়েছিল। তাই একে উগাদি তিথিও বলা হয়। এই দিনে চারধাম যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রীর দরজা খোলা হয়। পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে রথ নির্মাণ শুরু হয় এই শুভ দিন থেকেই। অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা কখনও ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে, এই পবিত্র তিথিতে কোনও শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী মন্দিরের দরজা ছয়মাস বন্ধ থাকার পর এইদিনেই দ্বার উদ্ঘাটন করা হয়। দ্বার খুললেই দেখা যায় সেই অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে জ্বালিয়ে রাখা হয়েছিল।
শুভ কাজ
বর্তমানে অক্ষয় তৃতীয়ায় সোনা ও রুপো কেনার পাশাপাশি নতুন ব্যবসা শুরু করা খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। এ দিনে বিবাহ করলে দম্পত্তিদের জীবনে সর্বদা সুখ ও সমৃদ্ধি থাকে। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে নতুন বাড়িতে গৃহপ্রবেশ করা বা একটি নতুন বাহন কেনাও খুব শুভ বলে মনে করা হয়।