কার্তিক মাসে ভগবান ভগবান বিষ্ণুর পাশাপাশি দেবী লক্ষ্মীর পূজা করলে তা অত্যন্ত শুভ ফল প্রদান করে। সমগ্র কার্তিক মাসে, দেবী লক্ষ্মীর যথাযথ পূজার পাশাপাশি লক্ষ্মী স্তোত্রও পাঠ করতে হবে। শাস্ত্রজ্ঞরা বলছেন, এভাবে পূজা স্ত্রোত্র পাঠে সব ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। জীবন ভরে ওঠে সুখ ও সমৃদ্ধিতে! শারদীয় পূর্ণিমা শেষে কার্তিক মাস শুরু হয়। ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে কার্তিক মাস। এই মাস শেষ হবে ৮ নভেম্বর। ভগবান বিষ্ণুর প্রিয় মাসগুলির মধ্যে একটি হল কার্তিক মাস।
কার্তিক মাসে তুলসী পূজার নিয়ম রয়েছে। আর সকলেই জানেন তুলসী ভগবান বিষ্ণুর প্রিয় গাছ। তাই এই মাসে বিষ্ণু পূজাও কার উচিত। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, কার্তিক মাসে ভগবান বিষ্ণুর পাশাপাশি দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করলে ধন-সম্পদ লাভ হয়। এছাড়া জীবনে আসে শান্তি, সুখ ও সমৃদ্ধি। দূর হয় রোগ-ব্যাধি। প্রশ্ন হল কী কী কাজ কার্তিক মাসে করা উচিত যাতে গৃহস্বামীর সঙ্গে পরিবারের কল্যাণ হয়?
স্কন্দপুরাণ হল হিন্দু ধর্মের অন্যতম বৃহত্তম পুরাণ। এই পুরাণে মহাদেব ও পার্বতীর পুত্র স্কন্দ বা কার্তিকের লীলা বর্ণিত রয়েছে। পাশপাশি শৈব তীর্থস্থান সংক্রান্ত একাধিক আখ্যানও রয়েছে। মহর্ষি ব্যাসদেব এই পুরাণের রচয়িতা। স্কন্দপুরাণের একটি শ্লোক অনুসারে, কার্তিক মাস দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার জন্য শ্রেষ্ঠ। সেক্ষেত্রে ভক্তের স্বাস্থ্য লাভ হয়। রোগ নাশ হয়। বুদ্ধির উন্নতি ঘটে।
‘রোগপহম পাতকানাসকৃতপরম সদ্বুদ্ধিদম্ পুত্রানাদিসাধকম্।
মুক্তানিদান নাহি কার্তিকব্রতদ্ বিষ্ণুপ্রিয়াদন্ডীহস্তি ভূতলে।’
কীভাবে লক্ষ্মীর পূজা করবেন?
সারাদিনের সকল কাজ শেষ হলে স্নান করুন। এরপর পবিত্র মনে উপবাস করুন। রবিবার ছাড়া প্রতিদিন স্নান করে তুলসী গাছে জল অর্পণ করুন। সেইসঙ্গে নিয়ম করে পূজাও করুন।
ভগবান বিষ্ণু এবং লক্ষ্মীকে যথাযথভাবে পূজা করুন। প্রথমে দেবী লক্ষ্মীকে জল নিবেদন করুন। এরপর ফুল, মালা, সিঁদুর, নৈবেদ্য, ভোগ নিবেদন করুন দেবী লক্ষ্মীর চরণে। এর পর ঘি দিয়ে জ্বালান প্রদীপ। ধূপ জ্বালাতেও ভুলবেন না। পূজা শেষ হলে লক্ষ্মীমন্ত্র সহ লক্ষ্মী চালিসা, লক্ষ্মী স্তোত্র পাঠ করুন। এরপর কনকধারা স্তোত্র ও বিষ্ণু সহস্রনাম স্তোত্র পাঠ করলে আরও ভালো ফল হবে।
মহালক্ষ্মী স্তোত্র
নমস্কার স্তূ মহামায়ে শ্রীপীঠে সুরপুজিতে।
শঙ্খচক্রগদাহস্তে মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
নমস্কার গরুড়ুধে কোলাসুরভয়ঙ্করী।
দেবী মহালক্ষ্মীর শুভকামনা।।
সর্বজ্ঞ সর্ব্ববর্দে দেবী সর্বদুষ্টভয়ঙ্করী।
প্রতি দুঃখী দেবী মহালক্ষ্মী নমোস্তু তে।।
সিদ্ধিবুদ্ধিপ্রদে দেবী ভুক্তিমুক্তিপ্রদায়িনী।
মন্ত্রপুতে সর্বদা দেবী মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
আদ্যন্তরহিতে দেবী আদ্যশক্তিমহেশ্বরী।
যোগে যোগসম্ভূতে মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।
স্থূল সূক্ষ্ম মহারোদ্রে মহাশক্তিমহোদ্রে।
মহাপাপারে দেবী মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
পদ্মাসনস্থেতে দেবী পরব্রহ্মস্বরূপিণী।
পরমেশী জগন্মাতরমহলক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
শ্বেতাম্বরধরা দেবী নানালঙ্কারভূষীতে।
জগৎস্থিতে জগন্মাতরমহলক্ষ্মী নমোস্তুতে।।
মহালক্ষ্ম্যাষ্টকম স্তোত্রম্যঃ পঠেদ্ভক্তিমানরঃ।
সর্বসিদ্ধিমবাপ্নোতি রাজ্য প্রাপ্তি সর্বদা।।
এককলে পঠেন্নিত্যম মহাপাপবিনাশনম্।
দ্বিকলম্যঃ পথেন্নিত্যম্ ধান্যধনস্যমান্বিতঃ।।
ত্রিকালম্যঃ পঠেন্নিত্যম মহাশত্রুবিনাশনম্।
মহালক্ষ্মীরভবেন্নিত্যম্ প্রসন্ন বরদা শুভা।