মাঘ মাসের শুক্লাপক্ষের একাদশী তিথিতে পালন করা হয় জয়া একাদশী (Jaya Ekadashi )। এই শুভ তিথি পালিত হয় ১ ফেব্রুয়ারি। হিন্দু পুরাণ অনুযয়ী, জয়া একাদশীর উপবাস ভীষ্ম একাদশী বা ভূমি একাদশী নামেও পরিচিত। পদ্ম পুরাণে বলা হয়েছে যে এই একাদশীর উপবাস করলে প্রচুর ফল পাওয়া যায় এবং সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়। এই উপবাসে ভগবান বিষ্ণু (Lord Vishnu) ও দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করলে সুখ-সমৃদ্ধি এবং প্রতিটি কাজে সাফল্য আসে। মাঘ মাসের এই একাদশীতে পবিত্র নদীতে স্নান করে দান করলে ভক্তরা স্বর্গলোক লাভ করেন। আসুন জেনে নেই এই একাদশীর গুরুত্ব, পূজা পদ্ধতি এবং শুভ যোগ সম্পর্কে…
গুরুত্ব
জয়া একাদশীর দিন লক্ষ্মী নারায়ণ উপবাস করলে সকল মনোবাঞ্ছা পূরণ হয় এবং সুস্থতা লাভ হয়। সেই সাথে পৃথিবীর যাবতীয় আরাম-আয়েশ ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার পর একজন মানুষ অবশেষে স্বর্গীয় বাসস্থান লাভ করে। এই একাদশীর নাম অনুসারে, এই উপবাসটি সমস্ত কাজে জয়লাভ করে এবং অত্যন্ত উপকারী বলে বিবেচিত হয়। এই উপবাসে ভগবান বিষ্ণুর শঙ্খ, চক্র ও গদা ধারণ করা রূপের পূজা করা হয়। এই উপবাসে দান করার ফল সমগ্র যজ্ঞের সমান। এই উপবাস শুধুমাত্র ভগবান বিষ্ণুর ভক্তই নয়, তার পুরো পরিবারকেও উপকৃত করে। এই উপবাস পালন করলে আপনার চারপাশে পজিটিভ এনার্জি প্রবাহিত হয় এবং সেই সঙ্গে পৈশাচিক প্রকৃতিরও অবসান ঘটে।
শুভ যোগ
জয়া একাদশীতে অনেক শুভ যোগ তৈরি হচ্ছে, যার কারণে এই দিনের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। এই তিথিতে সর্বার্থ সিদ্ধি নামে একটি মহান যোগ গঠিত হচ্ছে। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে এই শুভ যোগে ভগবান বিষ্ণুর সাথে লক্ষ্মীর পূজা করলে শুভ ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও, এই যোগে করা যেকোনো শুভ কাজ অবশ্যই সফল হয়। তবে কিছু সময়ের জন্য একাদশীতে ভাদ্রের ছায়া থাকবে, যা সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত থাকবে। অন্যদিকে, সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ সকাল ৭টা ১০ মিনিটে শুরু হবে ও পরের দিন সকাল ৩টে ২৩ মিনিট পর্যন্ত চলবে। অর্থাৎ এই যোগের প্রভাব সারাদিন থাকবে।
শুভ সময়
জয়া একাদশী উপবাস ১ ফেব্রুয়ারি, বুধবার
একাদশী তিথির সূচনা – ৩১ জানুয়ারি, মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৫৩ মিনিট থেকে,
একাদশী তিথি শেষ হবে ১ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, দুপুর ২টা ১ মিনিটে, এরপর শুরু হবে দ্বাদশী তিথি।
একাদশী উপবাসের পরান – ২ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৫ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত
উপবাসের পদ্ধতি
জয়া একাদশীর তিথিতে ব্রহ্ম মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে ধ্যান করুন, হাতে কিছু অক্ষত ও ফুল নিয়ে উপবাসের সংকল্প করুন। এর পর বাড়ির মন্দিরে পুজো। এর পরে, একটি পোস্টে শঙ্খ, চক্র, গদা ধারণ করে একটি চতুর্ভুজা আকারে ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি বা ছবি রাখুন। তারপর পঞ্চামৃত দিয়ে অভিষেক করুন। তারপর অক্ষত, ফল, তুলসী পাতা নিবেদন করুন। এরপর সাদা ফুল ও মিষ্টি নিবেদন করুন এবং ঘির পাঁচটি প্রদীপ জ্বালান। প্রদীপ জ্বালানোর পর একাদশীর উপবাসের গল্প শুনুন এবং বিষ্ণু সহস্ত্রনাম পাঠ করুন, তারপর তুলসী মালা দিয়ে বীজ মন্ত্র জপ করুন। তারপর ভগবানের আরতি করুন এবং দান করুন। একাদশীর উপবাসের পর পরের দিন উপবাস পালন করুন।
(Disclaimer: এখানে উপলব্ধ তথ্য শুধুমাত্র বিশ্বাস এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে টিভিনাইন বাংলা কোনও বিশ্বাস বা তথ্য নিশ্চিত করে না। কোনও তথ্য বা বিশ্বাস অনুশীলন করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)