Joshimath Sinking: তলিয়ে যাচ্ছে জোশীমঠ! কলিযুগের ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী কি এবার সত্যি হতে চলেছে?

TV9 Bangla Digital | Edited By: দীপ্তা দাস

Jan 08, 2023 | 10:45 PM

Kalyug Prediction: জোশীমঠ ও বদ্রীনাথ নিয়ে কলিযুগে যে ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে,সেটাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে কিনা , তা নিয়েই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মনে।

Joshimath Sinking: তলিয়ে যাচ্ছে জোশীমঠ! কলিযুগের ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী কি এবার সত্যি হতে চলেছে?
এবার ফাটল ধরেছে উত্তরাখণ্ডের জোশিমঠের বহু বাড়িতে

Follow Us

উন্নয়নের নামে প্রকৃতিকে উপেক্ষা করেই দেদার চলছে অনিয়ম। এর আগে ভয়ংকর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সাক্ষী থেকেছে উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand)। পাশাপাশি ভূমিকম্প, হিমাবাহে ধস তো লেগেই রয়েছে। সেই ঘটনা এখনও মানুষের মনে স্মৃতি তাজা হয়ে রয়েছে। এবার ফাটল ধরেছে উত্তরাখণ্ডের জোশিমঠের (Joshimath) বহু বাড়িতে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৫০০ থেকে ৩০৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই ধর্মীয় ও পবিত্র স্থানটি ক্রমশ মাটির মধ্যে তলিয়ে যেতে বসেছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, পাহাড় ভেঙে বিভিন্ন প্রকল্প নির্মাণ, ও যত্রতত্র বাড়ি তৈরির জেরে পাহাড়ের বুকে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেই ফাটলের জের আছড়ে পড়েছে বাড়িঘর থেকে রাস্তাঘাটেও। ঘরছাড়া প্রায় ৬০০ পরিবার। শুধু তাই নয়, শঙ্করাচার্য (Sankaracharya) মহাদেব আশ্রম মন্দিরের শিবলিঙ্গেও ফাটল দেখা গিয়েছে। শুরু হয়েছে উদ্ধারকার্যও।

অন্যদিকে জোশীমঠ ও বদ্রীনাথ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষ। জোশীমঠের এই পরিস্থিতি ঘিরে উদ্বিগ্ন সরকারও। জোশীমঠ ও বদ্রীনাথ নিয়ে কলিযুগে যে ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে,সেটাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে কিনা , তা নিয়েই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। এও আশঙ্কা দেখা গিয়েছে, জোশীমঠের ভাঙনের ফলে বদ্রীনাথ যাত্রাও কি বন্ধ হতে পারে?

জোশীমঠের প্রতিষ্ঠা ও ধর্মীয় গুরুত্ব

জোশীমঠের প্রাচীন নাম ছিল কার্তিকেয়পুর। তত্‍কালীন জোশীমঠ ছিল কাতুরি রাজাদের রাজধানী। আদি শঙ্করাচার্য যখন চার ধাম প্রতিষ্ঠার জন্য সফর করছিলেন, সেই সময় তিনি জোশীমঠের একটি তুঁত গাছের নীচে ধ্যান করেছিলেন। সেখানে তিনি জ্যোতিষশাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেছিলেন। তাই জোশীমঠ জ্যোতির্মঠ এবং জ্যোতিষপীঠ নামেও পরিচিত। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত জোশীমঠে ভগবান নরসিংহের মূর্তিও স্থাপন করেছিলেন শঙ্করাচার্য। কারণ জোশীমঠকে ভগবান নরসিংহের তপস্যার স্থান হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। জনশ্রুতি, আগে জোশীমঠ সমুদ্রের মধ্যে অবস্থিত ছিল। যখন এটি একটি পর্বত আকার নিতে থাকে, তখন ভগবান নৃসিংহ এর উপরে তাঁর তপস্যা শেষ করেছিলেন।

রামায়ণ মহাভারতের সঙ্গে জোশীমঠের সম্পর্ক

জোশীমঠ সম্পর্কে জনশ্রুতি আছে যে রামায়ণকালে হনুমানজি এসেছিলেন এই শান্ত, নিরিবিলি সুন্দর জায়গায়। মেঘনাদের শক্তিবাণের আঘাতে লক্ষ্মণ যখন জ্ঞান হারান, সেইসময় হনুমান সঞ্জীবনী বুটির সন্ধানে এখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাকে থামাতে রাবণ কালনেমি নামে এক রাক্ষস পাঠান। এই জোশীমঠেই কালনেমিকে বধ করেছিলেন হনুমানজি। কালনেমিকে হনুমানজী যে জায়গায় হত্যা করেছিলেন সেই জমি এখনও লাল মাটির মতো দেখায়। মহাভারত যুগে, হনুমানজি এখানে পাণ্ডবদের কাছে আবির্ভূত হয়েছিলেন। এমনও বিশ্বাস আছে যে, জাহেলী যুগে স্বর্গ যাত্রার সময় পাণ্ডবরা জোশীমঠে গিয়েছিলেন। এই পৌরাণিক কাহিনি স্মরণে রেখে আজও স্থানীয়রা নতুন ফসল কাটার পরে পাণ্ডব নৃত্য পরিবেশন করেন।

বদ্রীনাথ মন্দির

জোশীমঠে কলিযুগের ভবিষ্যদ্বাণী

জোশীমঠের নরসিংহ মন্দির হল ভগবান বদ্রীনাথের শীতকালীন বাসস্থান। এখানে মন্দিরে ভগবান নরসিংহের একটি প্রাচীন মূর্তিও রয়েছে। নরসিংহের মূর্তি নিয়ে অনেক বিশ্বাস ও কাহিনি রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নরসিংহের একটি বাহু স্বাভাবিক ও অন্য বাহুটি খুবই পাতলা ও সরু হয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের কথায়, প্রত্যেক বছরই এই বাহু ধীরে ধীরে পাতলা হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বাস করা হয় যেদিন ভগবান নরসিংহের সরু হাত ভেঙে যাবে সেদিন বদ্রীনাথে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। নর নারায়ণ পর্বতও এক হয়ে যাবে। বদ্রীনাথের ভক্তরা যে মন্দিরে ভগবান বদ্রীনাথ দর্শন করতে যাত্রা করেন, সেই যাত্রা বন্ধ হয়ে দর্শনও বন্ধ হয়ে যাবে সেদিন থেকেও। কারণ নর-নারায়ণ পর্বতের মিলনের ফলে বদ্রীনাথ ধাম বিলীন হয়ে যাবে। বদ্রীনাথের দর্শন পেতে হলে নতুন করে ফের মন্দির গড়ে তবেই দর্শন পেতে পারবেন ভক্তরা।

ভবিষ্যতের রহস্য

নর নারায়ণ পর্বতের মিলনের কারণে যোশীমঠ থেকে বদ্রীনাথ যাওয়ার রাস্তা যখন বন্ধ হয়ে যাবে, তখন ভগবান বদ্রীনাথ ভবিষ্যতের বদ্রীতে ভক্তদের দর্শন দেবেন। এখানে একটি শিলার উপরে অস্পষ্ট মূর্তি রাখা রয়েছে। পুরোহিত ও স্থানীয়দের কথায়, ধীরে ধীরে সেই মূর্তিই উপরের দিকে উঠে আসছে। যেদিন এই শিলাখণ্ডটি সম্পূর্ণরূপে আবির্ভূত হবে, সেদিন থেকেই ভগবান বদ্রীনাথ ভবিষ্য বদ্রীতেই ভক্তদের দর্শন দেবেন।

Next Article