সালটা ১১২৫, তখনও তৈরি হয়নি আজকের কলকাতা। আজ যেখানে গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশন, সেখানেই বাস করতেন মতিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে মা কালী স্বপ্নাদেশ দেন, পুজো শুরু করার।
পরের দিন কর্তা মশাই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলেন জঙ্গলের পথে। অরণ্যে খুঁজে পেলেন মাতৃ মূর্তি। তবে সেই মূর্তির রূপ মা কালীর অনন্য রূপের থেকে একদম আলাদা। মা এখানে বসে আছেন স্বয়ং মহাদেবের উপরে। এই বিশেষ রূপ পরিচিতি পেল বসা কালী রূপে। গিরিশ পার্ক অঞ্চলের এই পুজোর বয়স এই বছর আনুমানিক ৮৯৯ বছর। প্রায় ৯০০ বছর আগে যে কালী মূর্তির সন্ধান পেয়েছিলেন মতিলালবাবু, সেই বসা কালীই পূজিত হন আজও।
প্রতি বছর পুজোর আগে নতুন করে রং করা হয় দেবীকে। সোনার অলঙ্কারে মুড়ে ফেলা হয়, মাতৃ মূর্তি। সারা বছর পূজিত হন মা। সারা বছর অমাবস্যায় থাকে বিশেষ পুজোর আয়োজন। ভোগে থাকে খিচুড়ি,ভাজা মিষ্টি, ফল। প্রতি মহালয়াতে থাকে লুচি ভোগের ব্যবস্থা।
কালী পুজোর দিন গভীর রাতে শুরু হয় মায়ের পুজো। চলে মধ্য রাত অবধি। ভক্তদের দান করা শাড়ি পরানো হয় মাতৃ মূর্তিকে। বাজারে ওঠা নতুন সবজি দিয়ে রান্না করা হয় খিচুড়ি। ভোগে থাকে শোল মাছও। ভক্তরা অনেকে শোল মাছ বলিও দেন। তবে তা কেবল ভক্তরাই চাইলে দিতে পারেন। বাড়ির কোনও সদস্য বলি দেন না। মায়ের পুজো করতেও কিন্তু বাইরে থেকে কেউ আসেন না। বাড়ির কোনও সদস্য মায়ের আরাধনা করবেন, এই হল নিয়ম। তাই কলকাতায় থেকেও অন্য কালী পুজোর স্বাদ নিতে হলে ঘুরে আসতে পারেন বসা কালী মন্দিরে।