কালী পুজো হোক বা অন্য সময়, সারা বছর ভক্তদের ভিড়ে ঠাসা তারাপীঠ। মা তারার বিচরণক্ষেত্র। তবে আপনি কি জানেন, মা তারার একজন বড় বোনও রয়েছে?
ঝড়খণ্ডের দুমকা জেলার মলুটি গ্রাম। সেখানেই অবস্থিত মৌলিক্ষা দেবীর মন্দির। কথিত এই দেবী মৌলিক্ষাই নাকি তারা মায়ের বড় বোন।
ইতিহাসবিদদের মতে প্রায় ১৮৫৭ সাল নাগাদ সাধক বামাক্ষ্যাপার পদধুলি পড়ে মলুটিতে। সেখানে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন তিনি। এক সময় মা তারার মন্দিরের দেখাশুনার দায়িত্ব ছিল নাটোরের রানি। সেই সময় ঝাড়খণ্ডের তৎকালীন রাজা দ্বারকা নদী পেরিয়ে তারাপীঠে মায়ের দর্শন এবং পুজো দেওয়ার জন্য আসেন।
কিন্তু কোনও কারণ বসত মন্দিরের সেবায়েত মহারাজাকে অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখেন । রাজা মা তারার পুজো না করেই ফিরে যান এবং মলুটি গ্রামে মৌলিক্ষা দেবীর মন্দিরে দেবীর ঘট প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন।
পরে রাজা বসন্ত রায়, মলুটি গ্রামে ১০৮টি শিব মন্দির ও মা মৌলিক্ষার মন্দিরটি স্থাপন করেন। তারাপীঠ থেকে মাত্র ১৯ কিলোমিটার দূরে ঝড়খণ্ডের মলুটি গ্রামের দেবী মৌলিক্ষাই মায়ের বড় দিদি। কথিত এখানেই প্রথম সিদ্ধিলাভ করেন সাধক বামাক্ষ্যাপা তাই মাকে তিনি বড়মা বলে ডাকতেন। আর তারা মা কে বলতেন ছোট মা।
‘মৌলি’ শব্দের অর্থ মস্তক বা মাথা, ‘ইক্ষা’ শব্দের অর্থ দর্শন । অর্থাৎ মস্তক দর্শন । এখানে দেবীর মস্তকের প্রস্তর মূর্তির দর্শন পাওয়া যায় । কালীপুজোর সময় পশ্চিমবঙ্গ-সহ ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ মলুটি গ্রামে আসেন। সেই উপলক্ষে গ্রামে মেলা বসে৷ চলে রং বেরঙের বাজি পোড়ানো। সব মিলিয়ে যেন এক উৎসব।