Sasthi Brata: মায়েরা কেন ষষ্ঠীব্রত পালন করেন? কোন কোন নিয়ম অবশ্যই মেনে চলবেন?
Sasthi Brata: এমনিতে ষষ্ঠীব্রত সারাবছর নানা রকম হয়। যেমন ধরুন চাপড়া ষষ্ঠী, জামাইষষ্ঠী, শীতলষষ্ঠী আরও অনেক। তবে দুর্গাপুজোর সময় এই তিথির মাহাত্ম্য আলাদা। ষষ্ঠীর দিনই বাঙালি মতে পুজোর শুরু বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু কেন পালন করা হয় ষষ্ঠীব্রত? কেন ষষ্ঠী আসলে কে? জানুন সেই মাহাত্ম্য।

অনেক বাড়ির পুজোতে কৃষ্ণা নবমীতে বোধন হয়ে গেলেও বেশিরভাগ বারোয়ারি পুজতেই মায়ের বোধন হয় ষষ্ঠীর দিন। এই দিনে বাড়ির সধবা মহিলারা পালন করেন মা ষষ্ঠীর ব্রত। এমনিতে ষষ্ঠীব্রত সারাবছর নানা রকম হয়। যেমন ধরুন চাপড়া ষষ্ঠী, জামাইষষ্ঠী, শীতলষষ্ঠী আরও অনেক। তবে দুর্গাপুজোর সময় এই তিথির মাহাত্ম্য আলাদা। ষষ্ঠীর দিনই বাঙালি মতে পুজোর শুরু বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু কেন পালন করা হয় ষষ্ঠীব্রত? কেন ষষ্ঠী আসলে কে? জানুন সেই মাহাত্ম্য।
হিন্দু ধর্মে ষষ্ঠী ব্রতের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। দেবী ষষ্ঠীকে সন্তানদায়িনী, রক্ষা কর্তা ও স্নেহময়ী মাতৃশক্তি হিসেবে কল্পনা করা হয়। বাংলার ঘরে ঘরে সন্তান জন্মের আগে ও পরে, বিশেষ করে শিশুদের সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ুর জন্য এই ব্রত পালিত হয়। ষষ্ঠী ঠাকুরাণী বা ষষ্ঠী মাতাকে শিশুর আরোগ্য, দোষ-দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা এবং মঙ্গলকামনায় পুজো করা হয়। শাস্ত্রমতে, শিশু জন্মের পর ষষ্ঠ দিনে ষষ্ঠী দেবীর পুজো করা উচিত। কী ষষ্ঠীব্রতর মাহাত্ম্য?
সন্তানদে রক্ষা এবং মঙ্গলকামনায় – লোকবিশ্বাস, দেবী ষষ্ঠী শিশুদের যাবতীয় অশুভ প্রভাব থেকে রক্ষা করেন।
সন্তানপ্রাপ্তির কামনাতেও করা হয় ষষ্ঠীব্রত – যেসব নারীর সন্তান নেই, তাঁরা সন্তানলাভের আশায় ষষ্ঠী ব্রত করে থাকেন।
পারিবারিক শান্তির জন্যও ষষ্ঠীব্রত করা হয় – এই ব্রত করলে পরিবারে অশান্তি দূর হয়ে শান্তি ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়।
বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতিতে ষষ্ঠী পূজা মায়ের মমতা ও সন্তানের প্রতি গভীর টানের প্রতীক।
ষষ্ঠীর ব্রত পালনের কোন কোন বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন?
পবিত্রতা বজায় রাখুন – ব্রতকারিণীকে ভোরে স্নান করে পরিষ্কার শাড়ি বা পোশাক পরা উচিত। ঘর-আঙিনা পরিষ্কার রাখা জরুরি।
উপোস বা নিয়মনিষ্ঠা – অনেকেই এই দিনে উপোস থাকেন বা ফলাহার করেন। যদিও কঠোর নিয়ম সবার জন্য নয়, তবু যতটা সম্ভব সংযম পালন করা উচিত।
ষষ্ঠী দেবীর বরণ – দেবীকে কলা গাছ, আম্রপল্লব, ধূপ-প্রদীপ, ফুল, ফল ও নানা মিষ্টি নিবেদন করা হয়। সাধারণত খই, মুড়ি, কলা, চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি পিঠে প্রভৃতি অর্পণ করা হয়।
ব্রতকথা শুনুন – ব্রতকথা শ্রবণ এই আচার পালনের অন্যতম অংশ। এতে দেবী ষষ্ঠীর মাহাত্ম্য ও আশীর্বাদের কাহিনি বর্ণিত হয়।
শিশুকে সঙ্গে রাখুন – পুজোর সময় সন্তানকে কোলে বা কাছে বসিয়ে দেবীর কাছে আরোগ্য ও দীর্ঘায়ুর প্রার্থনা করা বিশেষভাবে শুভ।
নৈবেদ্য বিতরণ করুন – পুজো শেষে নৈবেদ্য বা প্রসাদ পরিবার ও পাড়ার শিশুদের মধ্যে বিতরণ করা উচিত। বিশ্বাস, এতে দেবী তুষ্ট হন।
সততা ও নিষ্ঠা – ব্রত পালনের আসল শক্তি বিশ্বাস ও আন্তরিকতায়। নিছক নিয়ম পালন নয়, হৃদয় থেকে প্রার্থনা করলেই ব্রতের ফল মেলে।
সন্ধ্যা প্রদীপ – সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানো, ধূপ ধরা ও দেবীর আরতি করাও ভক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
অশুভ কাজ এড়িয়ে চলা – এই দিনে ঝগড়া, মিথ্যা বলা, কারও ক্ষতি করা বা অপবিত্র খাদ্যগ্রহণ একেবারেই অনুচিত।
