গ্রামবাংলার একটি অতি জনপ্রিয় উত্সব হল নাগপঞ্চমী (Nag Panchami 2022)। শুধু গ্রামবাংলা নয়,এই উত্সব নাগপুরের জন্য বিখ্যাত। মধ্য় প্রদেশের নাগপুরের নাগোবা মন্দিরে এদিন ধুমধাম করে নাগপঞ্চমী উত্সব পালন করা হয়। বাংলায় এদিন মনসা পুজো (Manasha Puja) করার রীতি রয়েছে। শুধু এদেশেই নয়, নেপালেও নাগদেবতার আরাধনা করা হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, পঞ্চমী তিথিতে নাগপঞ্চমী উৎসব পালিত হয়। বিহার, বাংলা, ওড়িশা এবং রাজস্থানে কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে নাগপঞ্চমীর উৎসব পালিত হবে। উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে নাগপঞ্চমী পালিত হয়। কৃষ্ণপক্ষ অনুসারে, নাগপঞ্চমী ১৮ জুলাই এবং শুক্লপক্ষ অনুসারে, নাগপঞ্চমী পালিত হবে আগামী ২অগস্ট। আপনি সাপ (Snake) সম্পর্কে অনেক মজার উপাখ্যান শুনেছেন। নাগ পঞ্চমীর দিন জেনে নেওয়া যাক সাপ সম্পর্কে কয়েকটি অবাক করা তথ্য…
১. ভবিষ্য পরাণ অনুসারে, বর্ষার সময়ে চার মাস সাপ গর্ভধারণ করে। কার্তিক মাসে, সাপ প্রায় ২৪০টির মত ডিম পাড়ে। সেই সব ডিমগুলির মধ্যে অনেক সাপ আছে, যারা প্রতিদিন নিজেরাই খেয়ে নেয়। বাকি ডিমগুলি থেকে পরবর্তীকালে সাপের ছানা বের হয়।
২. সাপের ডিমের মধ্যে যেগুলি সোনার মতো চকচক করে, সেই ডিমগুলিতে পুরুষ সাপ থাকে। আর লম্বা আকৃতির ডিমগুলিতে স্ত্রী সাপ থাকে। এই ডিমগুলোতে সাপ ছয় মাস চা দেওয়ার পর সেগুলি থেকে বাচ্চা সাপ বেরিয়ে পড়ে।
৩. একটি সাপের আয়ু একশত বিশ বছর পর্যন্ত। তাদের মৃত্যু আট প্রকার। ময়ূর, মানুষ, চাকোর পাখি, বিড়াল, নকুল, শুকর, বৃশ্চিক, গরু, মহিষ, ঘোড়া, উট ইত্যাদির মাধ্যমে মৃত্যু হয়।
৪. ডিম থেকে বের হওয়ার সাত দিন পর সাপের বিষদাঁত গজায়। তারপর ২১ দিন পর দাঁতে বিষ উত্পন্ন হয়। মাত্র ২৫ দিনে একটি বাচ্চা সাপ অন্য প্রাণীর প্রাণ নিতে সক্ষম হয়।
৫. ছয় মাস সাপ নিজের শরীর থেকে খোলস ত্যাগ করে। তবে আপনি জানেন কি, একটি সাপের কয়টি পা থাকতে পারে? ভবিষ্য পুরাণে এ কথা বর্ণিত হয়েছে। সাপের প্রায় ২০০টির মত পা থাকে, তবে সেগুলি এতই ছোট ছোট যে সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে না। সাপ যখন চলাফেরা করে, তখন পাগুলি বেরিয়ে আসে। তবে বাকি সময়ের জন্য শরীরের ভিতরে থাকে।
৬. যেসব সাপ সময়ের আগে জন্মে নেয় তাদের বিষ কম এবং তাদের আয়ুও কম হয়। এই ধরনের সাপ শুধুমাত্র ৪৫ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। যে সাপের দাঁত লাল, হলুদ, সাদা এবং বিষের বেগও মন্থর, সেইসব সাপ স্বল্পস্থায়ী ও অত্যন্ত ভীতু।
৭. নাগপঞ্চমীর দিন উঠোনে সিজগাছ স্থাপন করে মনসা পূজা করার রীতি রয়েছে। এদিন সাধারণত নাগ দেবতা ও দেবী মনসার পুজো করা হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস, এই দিনে না দেবতার পুজো করলে নিজ নিজ রাশিতে রাহু ও কেতুর দোষ কেটে যায়।
৮. সাপের প্রতি ভয় ও সাপের কামড় থেকে মুক্তি পেতে নাগপঞ্চমীর দিন কালসর্প যোগ পুজো করা হয়। জন্মকুন্ডলিতে কালসর্পদোষ থাকলে তা এদিন পুজো ও ব্রত পালন করে দোষ কাটানো হয়ে থাকে। এদিন অনেকের বাড়িতেই দেবী মনসার পুজো করা হয়ে থাকে। সাপের কামড় থেকে পরিবারকে রক্ষা করতেই এই পুজো করা শুরু হয়।