রথযাত্রা হলে প্রথমেই উঠে আসে পুরীর কথা। পুরীর জগন্নাথদেব আর জগন্নাথ মন্দির নিয়ে রহস্যের অন্ত নেই। পুরীর রথযাত্রা উৎসবে সামিল হওয়া থেকে জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে রয়েছে একাধিক নিয়ম-রীতি। রথযাত্রা উৎসবে রথের রশি টানা থেকে জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশেও কেবল হিন্দু ভারতীয়দেরই অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ অহিন্দু ও বিদেশিদের জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশের কোনও অনুমতি নেই। কেবল গেটের বাইরে থেকেই মন্দির দর্শন করে ফিরে যেতে হয় তাঁদের।
অহিন্দু, এমনকি বিদেশিদেরও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি না থাকা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। তবে এটা বহু প্রাচীন রীতি বলা যায়। গত কয়েক শতাব্দী ধরেই এই নিয়ম চলে আসছে। যদিও এর কারণ স্পষ্ট নয়। ইতিহাসবিদদের একাংশের ধারণা, প্রাচীনকালে বিদেশি মুসলিম শাসকেরা বারবার বিভিন্ন মন্দির, এই জগন্নাথ মন্দিরের উপর হামলা চালিয়েছিল। সেজন্যই সম্ভবত সেবায়েতরা অহিন্দুদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। সেই নিয়ম এখনও বহাল রয়েছে।
যদিও সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে নজর দেয় এবং দীর্ঘদিনের প্রাচীন রীতি বদলের পরামর্শ দেয়। ওড়িশা প্রশাসনেরও একই মত। কিন্তু, পুরানো রীতি বদল করতে নারাজ মন্দিরের সেবায়তরা। ফলে বিতর্কের সমাধান হয়নি।
রথযাত্রার সময় জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রাদেবী মন্দিরের বাইরে বেরোন। রথাযাত্রার দিন থেকে উল্টো রথযাত্রার দিন, এমনকি তারপরেও আরও দু-দিন তাঁরা মন্দিরের বাইরে রথে থাকেন। ফলে সেই সময় হিন্দু, অহিন্দু, বিদেশি, সকলের জগন্নাথদেব দর্শনের সুযোগ রয়েছে। তাই প্রতি বছর রথযাত্রার সময় দেশ-বিদেশের বহু ভক্ত সমাগম হয় পুরীতে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।