Ganesh Chaturthi: এই মন্দিরে গণেশের রূপ মানুষের মত! রহস্যের পিছনে প্রকৃত কাহিনি শুনলে হাড় হিম হয়ে যাবে
Lord Ganesh: সারা ভারত তো বটেই এমনকী বিদেশেও এখন গণেশ ঠাকুরের মন্দিরের দেখা মেলে। প্রতিটি মন্দিরের নিজস্ব বৈশিষ্ট এবং পৌরাণিক তাৎপর্য রয়েছে। অগণিত মন্দিরগুলির মধ্যে একটি মন্দিরে গণেশ ঠাকুরের বিগ্রহের মুখের আদল মানুষের মতো! আসুন জেনে নেই মন্দিরটি কোথায় রয়েছে? আর বিগ্রহের রূপই বা মানুষের মতো কেন?

সমগ্র পৃথিবীতেই এখন প্রভু গণেশের মন্দির দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে বহু ভক্তের সমাগম হয়। তবে ভারতের প্রাচীন গণেশ মন্দিরগুলির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং পৌরাণিক তাৎপর্য রয়েছে। এই মন্দিরগুলির মধ্যে একটি মন্দির রয়েছে তামিলনাড়ুর তিরুভারুর জেলায়। এই জায়গায় স্থাপিত গণেশ মন্দির দেশের অন্যান্য মন্দির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আপনি নিশ্চয়ই বেশিরভাগ মন্দিরে গজানন গণেশের মূর্তি দেখেছেন। তবে এই মন্দিরে গণেশ উপবিষ্ট রয়েছেন গজানন হিসেবে নয়। বরং একজন পুরুষ রূপে! এই মন্দিরটি এতখানিই বিখ্যাত যে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তেরা এই মন্দিরে গণেশ ঠাকুরের দর্শন করতে আসেন। এছাড়াও পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তিকামনাতেও মানুষ এই মন্দিরে পুজো দেন। আসুন জেনে নিই এই মন্দিরের বিশেষত্ব এবং সিদ্ধি বিনায়কের অদ্ভুত রূপের গল্প।
পুরুষ মূর্তির গল্প
প্রচলিত কাহিনি অনুসারে— একবার ভগবান শিব ক্রুদ্ধ হয়ে শ্রী গণেশের ধড় থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করেছিলেন। এর পরে গণেশকে হস্তীর মুখ দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে প্রতিটি মন্দিরে তাঁর মূর্তি এই গজাননরূপেই স্থাপিত হয়। কিন্তু তামিলনাড়ুর তিরুভারুরের আদি বিনায়ক মন্দিরে গণপতির মুখের আদল মানুষের মতো হওয়ার কারণ হল, ভগবানের মুখ তৈরির আগে তাঁর মুখ ছিল বাকি সবার মতো! এই কারণে এখানে তাঁকে আগের রূপেই পূজা করা হয়।
পূর্বপুরুষদের শান্তির জন্য এখানে পুজো দেওয়া হয়
ভগবান রাম একবার আদি বিনায়ক মন্দিরে তাঁর পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য পুজো দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই সাধারণ মানুষও পূর্বপুরুষদের শান্তির জন্য এই মন্দিরে পূজা দিতে শুরু করে। এই কারণেই এই মন্দিরটি তিলতর্পণপুরী নামেও পরিচিত। নদীর তীরে পূর্বপুরুষদের শান্তির জন্য পূজা করা হলেও মন্দিরের ভেতরে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করা হয়। মন্দিরটি দেখতে সাধারণ হলেও এই দেবস্থানের গুরুত্ব অসীম। তিলতর্পণপুরী শব্দে তিলতর্পণ-এর অর্থ পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা। পুরী কথার অর্থ শহর। এই অন্যান্য জিনিসগুলির কারণে, লোকেরা প্রতিদিন এখানে ঈশ্বর দর্শন এবং পূজা করতে আসেন।
ভগবান শিব এবং মা সরস্বতীরও পূজা করা হয় এখানে
আদি বিনায়ক মন্দিরে শুধু শ্রী গণেশই নয়, শিব ও মা সরস্বতীরও পূজা করা হয়। ফলে ভক্তরা একযোগে মহাদেব, আদি বিনায়কের সঙ্গে দেবী সরস্বতীর আশীর্বাদ পেতেও এখানে আসেন।
কিংবদন্তি
মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত কিংবদন্তি অনুসারে, ভগবান রাম যখন তাঁর পিতার শান্তির জন্য প্রার্থনা করছিলেন, তখন তাঁর রাখা চারটি চালের লাড্ডু পোকায় পরিণত হয়েছিল। এই বিষয়ে, ভগবান রাম যখন মহাদেবের কাছে এই বিষয়ের সমাধান জানতে চাইলেন, ভগবান তাঁকে আদিবিনায়ক মন্দিরে পূজা দেওয়ার পরামর্শ দেন। ভগবান শিবের আদেশে, শ্রী রাম তার পিতার আত্মার শান্তির জন্য আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে এই মন্দিরে পূজার কাজ সম্পন্ন করেন। কথিত আছে, পুজোর সময় ধানের চারটি বল শিবলিঙ্গে রূপান্তরিত হয়। এই চারটি শিবলিঙ্গ আদি বিনায়ক মন্দিরের কাছে মুক্তেশ্বর মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে।
মন্দির সম্পর্কিত বিশ্বাস
ভক্তরা বিশ্বাস করেন, মহাগুরু অগস্ত্য স্বয়ং প্রতি ‘সংকষ্টি চতুর্থীতে’ আদি বিনায়কের পূজা করেন। এমনও বিশ্বাস করা হয় যে এখানে গণেশের পূজা করলে পারিবারিক সম্পর্কে শান্তি আসে এবং বিনায়কের আশীর্বাদে শিশুদের বুদ্ধি তীক্ষ্ণ হয়।
