হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশজুড়ে পালিত হবে মহাশিবরাত্রি। এদিন ভগবান শিব ও দেবী পার্বতীর বিবাহের দিন বলে মনে করা হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস, মহাশিবরাত্রির উপবাস পালন করলে ভক্তদের সকল ইচ্ছা পূরণ হয়। মহাদেবের ভক্তরা মহাশিবরাত্রির পুরো রাত জেগে শিবলিঙ্গের পুজো করেন। শিব ভক্তরা এই দিনে ভগবান শিবের বিবাহ উদযাপন করেন। এ দিনে ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের প্রকাটোৎসব পালিত হয়। শুধু বাংলাতেও নয়, মহাশিবরাত্রির মহিমা দক্ষিণী রাজ্যগুলিতেও মহাদেবের ধুমধাম করে পুজো করা হয়। এই বিশেষ হিন্দু উত্সবকে পূর্ণ ভক্তি সহকারে পালিত করা হয় এই দক্ষিণে।
শিব পুজোর পাঁচটি মুহুর্ত
সকালের মুহুর্ত – সকাল ৮টা ২২ মিনিট থেকে ৯টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত শুভ সময়।
মধ্যাহ্ন মুহুর্ত – দুপুর ২টো থেকে ৩টে ২৪ মিনিট পর্যন্ত লাভের এক চতুর্থাংশ থাকবে।
অমৃত কাল মুহুর্ত – বিকেল ৩.২৪ থেকে ৪.৪৯ মিনিট পর্যন্ত অমৃতের চোঘদিয়া। অমৃত কাল শিব পূজার জন্য অত্যন্ত ফলদায়ক।
সন্ধ্যার মুহুর্তা – সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিট থেকে ৭টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত মহাদেবের পূজোর মুহুর্ত করা হচ্ছে।
নিশিতা কাল মুহুর্তা – মধ্যরাতে মহাশিবরাত্রির পূজা করার নিয়ম। আগামী ১৮ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা ৫৮ মিনিট থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি, সকাল ১টা ৩৬ মিনিট পর্যন্ত, মহানিশীথের সময় শিব পুজো করা শুভ হবে।
মহাশিবরাত্রি পূজা বিধি
মহাশিবরাত্রির দিন শিবলিঙ্গে তিন পাতার বেলপত্র অর্পণ করুন। এ দিনে বাড়িতে পুজো করুন, নদীর পবিত্র মাটি থেকে ১০৮ টি শিবলিঙ্গ তৈরি করুন। তারপরে দুধ, গঙ্গাজল, মধু, দই দিয়ে অভিষেক করুন। মনে রাখবেন শিবলিঙ্গের দৈর্ঘ্য যেন আমাদের হাতের বুড়ো আঙুলের ওপরের বেশি না হয়। মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের একটি জপ করুন। মহাশিবরাত্রিতে সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা ও রাতে এই চার ঘণ্টায় রুদ্রাষ্টাধ্যায়ী পাঠ করুন। কথিত আছে ভোলেনাথ শীঘ্রই খুশি হন।
শিবের জন্ম কাহিনি
ভগবান শিবকে স্বয়ম্ভু বলা হয় যার অর্থ তিনি অজাত। তিনি শুরুও নন, শেষও নন। তিনি সর্বত্র বিরাজমান। তবে ভোলেনাথের উৎপত্তি নিয়ে রহস্য রয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে বিষ্ণু পুরাণ অনুসারে, শিব ভগবান বিষ্ণুর কপালের মহিমা থেকে উদ্ভূত বলে বলা হয়। কথিত আছে যে শিবের আশীর্বাদপ্রাপ্ত ব্যক্তি জীবনে কোনও সংকটের সম্মুখীন হন না। ভগবান শিবকে লিঙ্গ রূপে পুজো করা হয়। শিবকে সন্তুষ্ট করার একটাই উপায়, তাঁকে সত্যিকারের ভক্তি করা।
শিব এবং দেবী পার্বতীর প্রেম কাহিনি
শিব ও শিবের মহা মিলন হয়েছিল শিবরাত্রিতে, তাই এই দিনটি হয়ে ওঠে মহাশিবরাত্রি। এটা বিশ্বাস করা হয় যে পার্বতী ভগবান শিবকে তার স্বামী হিসেবে পেতে ১০৭ জন্ম নিয়েছিলেন। হাজার বছরের কঠোর তপস্যার পর ১০৮তম জন্মে ভোলে বাবা পার্বতীকে অর্ধাঙ্গিনী রূপে গ্রহণ করেন। দেবী পার্বতী ভোলে ভান্ডারীর প্রেম ছাড়া প্রতি জন্মে কোনও সম্পদ, গৌরব চাননি। একই সময়ে, শিবজিও প্রতি জন্মে পার্বতীজির জন্য অপেক্ষা করতেন।
(Disclaimer: এখানে উপলব্ধ তথ্য শুধুমাত্র বিশ্বাস এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে টিভিনাইন বাংলা কোনও বিশ্বাস বা তথ্য নিশ্চিত করে না। কোনও তথ্য বা বিশ্বাস অনুশীলন করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)