পুরীর রথযাত্রা নিয়ে গল্প-কথার অন্ত নেই। কিংবদন্তি আছে, পুরীর জগন্নাথের রথের রশি টানলে ১০০ যজ্ঞের সমান পুণ্যফল মেলে। রথযাত্রার মতো পুরীর জগন্নাথ মন্দির নিয়েও রহস্যের অন্ত নেই। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক আশ্চর্যজনক ঘটনা, যার যথাযথ উত্তর মেলে না। বিশ্বাস করা হয়, বিয়ের পর দম্পতিরা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে দর্শন করলে বৈবাহিক জীবন সুখ-শান্তিপূর্ণ হয়। কিন্তু, অবিবাহিত যুগল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গেলে ফল হতে পারে উল্টো। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগছে? কিন্তু, এমনই কথা প্রচলিত রয়েছে। আর এর পিছনে রয়েছে বিশেষ কারণ।
শ্রীকৃষ্ণের পাশে সবসময় শ্রীরাধাকে দেখা যায়। কিন্তু, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে জগন্নাথ-রূপী শ্রীকৃষ্ণ থাকেন দাদা বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার সঙ্গে। এখানে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে নেই শ্রীরাধা। রথযাত্রার সময়ও এই একই দৃশ্য দেখা যায়। এর সঙ্গেই রয়েছে অবিবাহিত যুগলের জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ না করার কারণ।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে অবিবাহিত যুগলের প্রবেশে হতে পারে উল্টো ফল!
কিংবদন্তি রয়েছে, একবার শ্রীরাধার পুরীতে এসে শ্রীকৃষ্ণের জগন্নাথ রূপ দেখার ইচ্ছা হয়। তিনি জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করতে যান। কিন্তু, মন্দিরের পুরোহিত তাঁকে মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেন। বাধা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে পুরোহিত জানান, শ্রীকৃষ্ণের প্রেমিকা শ্রীরাধা। তিনি শ্রীকৃষ্ণের বিবাহিত স্ত্রী নন। পুরোহিতের এই কথা শুনেই রেগে গিয়ে অভিশাপ দেন রাধারানি।
কী অভিশাপ দেন রাধারানি?
রাধারানি জগন্নাথ মন্দিরের গেটের সামনে দাঁড়িয়েই অভিশাপ দেন, এবার থেকে কোনও অবিবাহিত যুগল এই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবে না। যদি কেউ প্রবেশের চেষ্টা করে তাহলে তাদের প্রেম টিকবে না।
মন্দির কর্তৃপক্ষ কী বলছেন?
জগন্নাথ মন্দিরে অবিবাহিত যুগলের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পৌরাণিক কাহিনী থাকলেও এটা নিয়ে আদতে মন্দির কর্তৃপক্ষের কোনও বাধা-নিষেধ নেই। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, অবিবাহিত যুগলরা জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন। কেবল একটাই শর্ত, হিন্দু হতে হবে। হিন্দু ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীদের পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি নেই। এছাড়া সাম্প্রতিককালে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে পোশাকবিধিও জারি হয়েছে। অর্থাৎ ছেঁড়া জিন্স, হাতাকাটা জামা, হাফ প্যান্ট পরে মন্দিরে ঢোকা যাবে না।