তাঁর কথা যেন খনার বচন। অনেক দিন আগেই তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বছরের শুরুতেই যে ভূমিকম্প হবে। বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বানী অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। কিন্তু কে এই বাবা ভাঙ্গা? মহিলা নাকি পুরুষ? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই রয়েছে। তিনি ‘বলকানের নস্ট্রাডামাস’ নামেও পরিচিত তিনি। মহিলা হলেও তাঁকে ডাকা হত বাবা ভাঙ্গা বলেও। ছোটবেলায় তাঁর নাম ছিল ভ্যানগেলিয়া প্যানদেভা দিমিত্রোভা। ১৯১১ সালে জন্ম হয় তাঁর। বিয়ের পর অবশ্য নাম পরিবর্তন করে তাঁর পরিচয় হয় ভ্যানগেলিয়া গুস্টেরোভা নামে।
জীবনের অর্ধেকটাই তাঁর কেটেছে বুলগেরিয়ার কুজহু পার্বত্য অঞ্চলের রুপিটি-তে। গোটা পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষই বিশ্বাস করেন তিনি ছিলেন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী। খুব ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছিলেন তিনি। নীল চোখ, সোনালি চুল ছোটবেলায় তাঁকে দেখতে নাকি খুব সুন্দর ছিল। কিন্তু শোনা যায়, একবার ঝড়ের কবলে পড়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দুদিন পরে তাঁকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। সেই সময়ই দৃষ্টি শক্তি হারান বাবা ভাঙ্গা। অর্থের অভাবে চোখে অস্ত্রোপচারও করাতে পারেনি তাঁর পরিবার।
১৯২৫ সালে জেমুন শহরে বাবা ভাঙ্গাকে একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। এবং যেখানে তিনি ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে পড়াশোনা করতেন। সেখানেই তিনি পিয়ানো বাজানো, বুনন, রান্নাবান্না শেখেন। ১৯৪২ সালে দিমিতার গোসতারভ নামে একজন সৈনিকের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের পর সংসার পাতেন পেটরিচে। তখনই বাবাভাঙ্গার আরও বাড়বাড়ন্ত হয়। সেই সময় অনেকেই বাবা ভাঙ্গার কাছে এসে জানতে চাইতেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বেঁচে আছেন কিনা! ১৯৪২ সালের ৮ এপ্রিল বুলগেরীয় শাসক তৃতীয় বোরিস এসেছিলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য। এমনকী, বুলগেরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির বেশ কয়েকজন নেতার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন বাবা ভাঙ্গা। ১৯৯৬ সালের ১১ অগস্ট স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। নিজের ভবিষ্যদ্বাণীও নিজেই করেছিলেন এই রহস্যময়ী নারী।