পুরীর জগন্নাথ মন্দির শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বের কাছে অন্যতম প্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয় মন্দির। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রার উত্সব পালন করা হয়। জগন্নাথ পুরী রথযাত্রা বা রথ উত্সব নামেও পরিচিত। অত্যন্ত প্রাচীন এই উত্সব ওড়িশার কাছে অত্যন্ত তাত্পর্য রাখে। সারা বিশ্বের কাছেই প্রাচীনতম রথযাত্রা। প্রাচীন পুরাণমতে, দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কৃষ্ণের বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী রূপে পালিত হয়ে থাকে। আর এই যাত্রার নাম রথযাত্রা। তিনটি বিশাল মাপের রথকে নানা রঙের কাপড় দিয়ে সাজিয়ে প্রতিটি দেবতাকে উত্সর্গ করা হয়। রথযাত্রার কয়েকমাস আগে থেকেই রথ নির্মাণের পর্ব চলে। মহারানা নামে পরিচিত অভিজ্ঞ ছুতোররা সুন্দর কারুকাজের মাধ্যমে রথগুলি নির্মাণ করেন। এনারা বংশ পরম্পরায় এই কাজটি বহু যুগ ধরে করে আসছেন।
পুরুষোত্তম ক্ষেত্র বা শ্রীক্ষেত্র আসলে পুরীকেই বোঝায়। আর এখানেই রয়েছে জগন্নাথদেবের মন্দির। রথের দিন তিনজনের আলাদা আলাদা তিনটি বিশাল রথ রয়েছে। রথযাত্রা উত্সবের মূল আকর্ষণের জায়গা হল এই তিন রথ। নিয়ম অনুসারে, ভগবান জগন্নাথের রথ নন্দীঘোষের রয়েছে ১৬টি চাকা। ৪৫.৬ ফুট উঁচু এই রথে অবস্থান করেন বিষ্ণুর অবতার জগন্নাথের। অন্যদিকে দাদা বলভদ্রের রথের নাম হল তালধ্বজ। এতে রয়েছে মোট ১৪টি চাকা। আর দেবী সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন।
ভক্তদের বিশ্বাস পুরীর রাস্তায় রথের রশি টেনে মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরের দিকে নিয়ে যায়। বিশ্বাস, রথের রশি একবার ছুঁলে সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই রশি ধরে টান দেওয়ার জন্য পুরীর মন্দির চত্বরে হাজারে হাজারে মানুষ ভিড় করেন। পুরীর রথযাত্রায় শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, সব সম্প্রদায়ের একটি উত্সব।
রথযাত্রা কবে পালিত হবে?
আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তারিখ শুরু হয়: ১৯ জুন, সকাল ১১.২৫ মিনিট থেকে শুরু হবে।
আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথি শেষ হয়: ২০ জুন, রাত ১টা ৭ মিনিট পর্যন্ত।
ভগবান জগন্নাথ রথযাত্রা তারিখ: ২০ জুন, মঙ্গলবার