পুরনো দিনের বাড়ির দরজা ও জানলাগুলি বেশ সুন্দর দেখতে লাগে। সবুজ বা নীল রঙের খরখরি দেওয়া জানলা এখনও মন কাড়ে। দুপাল্লার সব দরজা ও জানলাগুলি বাড়ির ঐতিহ্যকেই বয়ে নিয়ে চলে। বর্তমানে কাঁচের শাটার দেওয়া, সাদা পর্দার আড়ালে সবটাই কৃত্রিম বলে মনে হতে পারে। পুরোটাই সাজানো। নিজের বাড়ি তো স্বপ্নের বাড়ি। সেখানে স্বপ্নগুলি গুটি গুটি পায়ে এলোপাথারি ছুটে বেড়ায়। সেখানে অবাধ চলাচল। পুরনো দিনের বাড়ির দরজা ও জানলাগুলি দুটি অংশে বিভক্ত থাকত। দুপাল্লার দরজার একটি অংশ হল গেট, আরেকটি অংশ পাল্লা খোলা যায়। আবার অনেকের বাড়িতে দুটি অংশ নিয়েই জানলা তৈরি করা হত। তবে বর্তমানে আধুনিক ডিজাইনের দরজা সাধারণত একমুখী বা এক পাল্লার হয়ে থাকে। তাহলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কি দরজা ও জানলার মুখ পাল্টেছে? আগেকার বাড়িগুলি কেন এমন করা হত? ডবল লিফ দরজা বসানোর পিছনে কি কোনও বিশেষ কারণ ছিল? নাকি শুধুই কারিগরি কারণেই এই নকসা তৈরি করা হত? এর পিছনে রয়েছে জ্যোতিষশাস্ত্রও।
পাপী গ্রহ রোধ
পুরনো দিনের মোটা দেওয়ালের বাড়িতে দু পাল্লার দরজা থাকার একটি কারণ ছিল। সেটা হল সেইসব কাঠের দরজাগুলি অত্যন্ত মজবুত ছিল। নিরাপত্তার দিক থেকে বড় ও মোটা কাঠের দরজাগুলি বাড়ির জন্য সঠিক ছিল। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, বাড়ির প্রধান দরজার ২ পাল্লার বা ডবল-লিফের হওয়ায় পাপী গ্রহদের অনায়াসেই বিনাশ করা সম্ভব ছিল।
পাপী গ্রহ কে?
সাধারণত রাহু ও কেতুকে পাপী গ্রহ বলে মনে করা হয়। এই দুই গ্রহের অশুভ প্রভাব প্রতিরোধে ডবল-পাল্লার দরজা কার্যকর বলে বিবেচিত হয়।
শুভ গ্রহের প্রভাব বাড়িতে ইতিবাচক শক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিশ্বাস করা হয় যে বাড়ির যে কোনও দরজা থেকে ঘরে প্রবেশ করতে পারে এই পজিটিভ শক্তি। রাহু ও কেতু পাপী গ্রহ, শুধুমাত্র মূল দরজা দিয়ে প্রবেশ করে তারা। তাই এই দুই গ্রহের অশুভ প্রভাব এড়াতে ঘরে দুই পাল্লার দরজা বসানো হয়। দরজার দুই পাশে শুভ চিহ্ন থাকলে তা আরও মঙ্গলের হয়ে থাকে।