কলকাতা: মরসুমের শুরু থেকে একটা লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। সমর্থকদের আবেগের কথা মাথায় রেখে, মোহনবাগানের নামের আগে থেকে সরেছে এটিকে। নতুন নামে নতুন মরসুম শুরু করেছিল সবুজ মেরুন। লক্ষ্যও ছিল নতুন। এএফসি কাপ। এর আগের মরসুমে এএফসি কাপে জোনাল সেমিফাইনালেই বিদায় নিয়েছিল। নতুন মরসুমের শুরুতে তাই বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোহনবাগান। একটা কোর টিম ধরে রাখার পাশাপাশি সই করানো হয়েছিল দেশ বিদেশের বেশ কয়েকজন তারকা প্লেয়ারকে। সেই টিমকে ম্যানেজ করতে না পারাতেই কি বিদায়ঘণ্টা বেজেছে ফেরান্দোর? বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
নতুন মরসুমের শুরুতে মোহনবাগান সমর্থকদের সবচেয়ে অস্বস্তিতে ফেলেছিল প্রীতম কোটালকে ছেড়ে দেওয়া। কেরালা ব্লাস্টার্স থেকে জাতীয় দলের তারকা ফুটবলার সাহাল আব্দুল সামাদকে নিতেই ঘরের ছেলে প্রীতমকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হেভিওয়েট টিম নিয়েও অবশ্য আসল লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিয়েছে মোহনবাগান। এর অন্যতম কারণ মনে করা হচ্ছে, দলের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব। এটা তৈরির অন্যতম কারণ, কোচের ম্যান ম্যানেজমেন্ট।
মোহনবাগানে যেন সকলেই তারকা। একঝাঁক হেভিওয়েট ফুটবলার থাকলে তাঁদের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয় কোচকে। ম্যান ম্যানেজমেন্টে ভরাডুবি না হলে হেভিওয়েট টিমের ব্যর্থতার কারণ খুঁজে পাওয়া যেত না। শুধুই যে এএফসি কাপ, তা নয়। বছর শেষে ইন্ডিয়ান সুপার লিগেও হারের হ্যাটট্রিক। প্লেয়ার ইম্প্রোভাইজেশনে ব্যর্থ ফেরান্দো। হাতে একঝাঁক তারকা থাকা সত্ত্বেও হিমসিম খেয়েছেন ফেরান্দো। মরসুমের শুরুতে তাঁর পছন্দ মতোই ফুটবলার বাছাই করা হয়েছে। মরসুমের মাঝপথে কয়েক জনের চোট থাকলেও রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি রাখা হবে না!
এখানেই শেষ নয়, শোনা যাচ্ছে বাগান শিবিরের অন্দরেও লেগেছে আগুন। ড্রেসিংরুমে তৈরি হয়েছে ছোট ছোট টিম। যা সবুজ মেরুনের মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে, এমনই বলছেন টিম ঘনিষ্ঠ কেউ কেউ। কেউ খেলার সুযোগ পাচ্ছেন অঢেল, আবার অনেকে দল ব্যর্থ হলেও সুযোগই পাচ্ছেন না। সেই থেকেই কোচের প্রতি ক্ষোভ তৈরি হয় বলে খবর। এ মরসুমে যোগ দেওয়া ফুটবলারদের সঙ্গে সিনিয়র ফুটবলারদের একটা দূরত্বও তৈরি হয়েছে। সেই দূরত্ব ফেরান্দো ঘোঁচাতে পারেননি বলেই তল্পি গুটিয়ে ফিরতে হল স্পেনে।
একে টিমের ব্যর্থতা, তার ওপর ড্রেসিংরুমের নানা খবরে বিরক্ত ছিলেন সমর্থকরাও। কোচ তাড়ানোর রোগ থেকে মোহনবাগান কয়েক বছর বেরিয়েই এসেছে। কিন্তু ফেরান্দোকে না সরালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছিল না। শুধু ফেরান্দোকে ছাঁটাই নয়, প্লেয়ারদেরও নাকি কড়া বার্তা দিয়েছেন কর্মকর্তারা। বলা হয়েছে, টিমের ভিতরে কোনওরকম দলাদলি তাঁরা মানবেন না।
এই মুহূর্তে মোহনবাগান অভিভাবকহীন। কোচ ফেরান্দোকে সরানো হয়েছে। আন্তোনিও লোপেজ হাবাস এখনও কলকাতায় এসে পৌঁছোননি। তাই কর্তারা আরও কড়া হাতে টিম সামলানোর দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছেন। সচিব দেবাশিস দত্ত এমন পরিস্থিতির মুখে এর আগেও পড়েছেন, তিনি জানেন এমন পরিস্থিতিতে কী ভাবে টিমকে আলোয় ফেরাতে হয়।