AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Achinta Sheuli: ‘গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে’, আজ হাসির বাঁধ ভেঙেছে পূর্ণিমার

Achinta Sheuli Wins Gold at CWG 2022: রক্ত জল করে ছেলেকে মানুষ করেছেন। সেই কষ্ট, পরিশ্রমের ফসল ফলেছে কমনওয়েলথ গেমসের মঞ্চে। ছেলের সাফল্যে গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে মা পূর্ণিমা শিউলির।

Achinta Sheuli: 'গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে', আজ হাসির বাঁধ ভেঙেছে পূর্ণিমার
গর্বিত মাImage Credit: Twitter
| Edited By: | Updated on: Aug 02, 2022 | 3:49 PM
Share

দেউলপুর (হাওড়া): রাত তখন প্রায় দেড়টা। হাওড়ার পাঁচলার দেউলপুরবাসীর চোখে ঘুম নেই। থাকবেই বা কি করে? বিশ্ব মঞ্চে দাপট দেখাচ্ছে যে ঘরের ছেলে। কমনওয়েলথ গেমসের (Commonwealth Games 2022) ভারোত্তোলনে পুরুষদের ৭৩ কেজি বিভাগে দেশের হয়ে সোনা জিতলেন অচিন্ত্য শিউলি (Achinta Sheuli)। আনন্দোচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ল গোটা দেউলপুর (Deulpur Village)। অচিন্ত্যর ইভেন্ট শুরুর বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই টিভির পর্দায় চোখ ছিল দেউলপুরবাসীর। গ্রামের ছেলেকে উৎসাহ দিতে  স্থানীয় ক্লাবে লাগানো হয়েছিল বড় স্ক্রিন। অচিন্ত্যর হাতে সোনা উঠতেই বাজি, নাচ, গানে আনন্দে মাতলেন তাঁরা।

হাওড়ার নিছকই সাধারণ পরিবার থেকে বার্মিংহ্যামের পোডিয়ামের যাত্রাটা অচিন্ত্যর কাছে সহজ ছিল না। মাত্র আট বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়েছিলেন। এরপর জরির কাজ করে তিনজনের সংসার টানেন মা পূর্ণিমা শিউলি। রক্ত জল করে ছেলেকে মানুষ করেছেন। সেই কষ্ট, পরিশ্রমের ফসল ফলেছে কমনওয়েলথ গেমসের মঞ্চে। ছেলের সাফল্যে গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে মায়ের। রাত জাগার ক্লান্তি নেই চোখেমুখে। বরং রত্নগর্ভার মুখে ঝলমলে হাসি। ছেলের সাফল্যে গোটা দেশজুড়ে শুভেচ্ছার বন্যা। পূর্ণিমা দেবীর কথায়, “এতো শুধু আমাদের আনন্দ নয়। সবার। গোটা দেশ আনন্দ করছে।” কেমন লাগছে? গর্বিত মা বললেন, “গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে। ভীষণ খুশি।” অচিন্ত্যকে বেড়ে উঠতে দেখেছেন যে পাড়া প্রতিবেশীরা। তাঁদেরও ঘুম নেই। ঘুমোবেন কী করে? বাবা হারা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেটির জীবন সংগ্রামের প্রতিটি মুহূর্তের সাক্ষী তাঁরা।

যদিও ভারোত্তোলনে আসার কোনও ইচ্ছেই ছিল না অচিন্ত্যর। দাদা অলোকের হাত ধরে ভারোত্তোলনে আসা। সোনা জিতে সেই দাদাকেই পদক উৎসর্গ করলেন বাংলার সোনার ছেলে। ভাইয়ের সাফল্যে দাদা অলোকের চোখে আনন্দাশ্রু। শোনালেন তাঁদের সংগ্রামের কথা। অলোক বললেন, “বাড়ির কাছেই একটি ছোট জিম ছিল। খুবই সাধারণ মানের জিম। শরীরচর্চা করতে ভালোবাসতাম। প্রত্যহ ওই জিমেই যেতাম। অচিন্ত্য ভীষণ শান্ত ও লাজুক প্রকৃতির। ওর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে জিমে নিয়ে যেতে শুরু করি। বাবা পরিবারের মেরুদণ্ড ছিলেন। গরীব ছিলাম, কিন্তু বাবা চলে যাওয়ার পর সর্বহারা হয়ে যাই। এমনকী বাবার শেষকৃত্যের জন্যও টাকা ছিল না। এক আত্মীয়ের কাছে টাকা ধার করতে হয়।”

কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয় অচিন্ত্যর কাছে শুধুমাত্র সম্মান নয়, জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকার রসদও। অচিন্ত্য নিজেও বলছেন, এবার তিনি পরিবারকে সাহায্য করতে পারবেন। সেলাই, জরির কাজ থেকে বিশ্রাম দেবেন মাকে। দাদার পাশে দাঁড়াবেন।