মেলবোর্ন: ম্যাচের কোনও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ক্রিকেটারে কোনও ভুলে ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায়। তার পর সমর্থকদের রোষের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। সেই ভুল শুধতে পরবর্তী ম্যাচে যখন এই ক্রিকেটার অসাধারণ পারফরম্যান্স করেন, তখন তাঁদের নিয়ে ফের মাতামাতি করেন ওই সমর্থকরাই। কয়েক মাসের ব্যবধানে এ রকমই ঘটনা ঘটেছে ভারতীয় দলের বাঁ-হাতি ফাস্ট বোলার অর্শদীপ সিংয়ের সঙ্গে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপের ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ ফসকান অর্শদীপ। সেই ম্যাচে হেরেও যায় ভারত। এর পর থেকেই রোষের মুখে পড়তে হয় ভারতের এই তরুণ পেসারকে। সেই হারের জন্য অর্শদীপকে দায়ী করে চলে অকথ্য় গালি দেওয়া। এমনকি খলিস্তানি দাগিয়ে দিতেও পিছুপা হননি কেউ কেউ। যাঁর বারা ২৫ বছর সিআইএসএফ-এর জওয়ানের কাজ করেছেন। শিখ হওয়ায় তাঁকে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল খালিস্তানি। সেই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পরই অস্ট্রেলিয়ায় টি২০ বিশ্বকাপে নিজের জাত চিনিয়েছেন অর্শদীপ। জীবনের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমে তাঁর দুরন্ত পারফরম্যান্সে মুগ্ধ ক্রিকেট মহল। যে ভক্তরা কয়েক দিন আগে তাঁকে ক্যাচ মিসের জন্য আসামী বানিয়ে দিয়েছিলেন, এখন তাঁরাই অর্শদীপের নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছেন। জীবন বোধ হয় এমনই!
ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা বোলার জসপ্রীত বুমরা চোটের কারণে দলে নেই। বুমরার অভাব এই বিশ্বকাপে টের পেতে দেননি অর্শদীপ। জীবনের প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম ওভারেরই তুলে নিয়েছেন উইকেট। তাও আবার পাক অধিনায়ক বাবর আজমের উইকেট। ম্যাচের শুরুতে তিনিই প্রথম ঝটকা দেন পাকশিবিরে। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে পর্বের পাঁচ ম্যাচে ইতিমধ্যেই ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। কেবল উইকেট নেওয়া নয়। ইনিংসের শুরুতে এবং ডেথ ওভারে দক্ষতার সঙ্গে বল করেছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গিয়ে দারুণ মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। বোলিং লাইন লেন্থে উন্নতি করার বিষয়টিও সম্প্রতি জানিয়েছিলেন অর্শদীপ। অর্শদীপের উন্নতির ব্যাপারে ভারতের বোলিং কোচ পারশ মাম্বরে বলেছেন, “অর্শদীপ এমন এক জন, যে কথা বলতে ভালবাসে। বিভিন্ন ব্যাপারে সিনিয়রদরে সঙ্গে কথা বলে। আমি দেখেছি ওকে ভুবি, সামির সঙ্গে কথা বলতে। কারণ, ওরা অস্ট্রেলিয়ায় আগে খেলেছে। ওদের থেকে এখানকার ব্যাপারে জানার চেষ্টা চালাচ্ছে। সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে ও যা শিখেছে, তা খেলাতেও কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। ওই এই চেষ্টা ওকে সাফল্য পাইয়ে দিচ্ছে।”