IPL 2024, KKR: ৯ বছরের ভুলেও শিক্ষা নেই, গম্ভীরের KKRকে চাপে ফেলবে এই ৯ তত্ত্ব

Dec 25, 2023 | 1:25 PM

IPL 2024 Auction, Kolkata Knight Riders: ধরে নেওয়া যাক রহমানুল্লা গুরবাজ ওপেন করবেন। তাঁর সঙ্গী কে? জেসন রয় হতে পারেন। তাঁকে খেলালে আন্দ্রে রাসেল-সুনীল নারিনকে একসঙ্গে খেলানো কঠিন। কারণ, চার বিদেশি হয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বোলিংয়ে স্টার্ক কিংবা অন্য বিদেশি খেলানো যাবে না। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ওপেনিংয়ে বিকল্প হতে পারেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। তাঁকে যে ট্রাই করা হয়নি, তা নয়। ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি।

IPL 2024, KKR: ৯ বছরের ভুলেও শিক্ষা নেই, গম্ভীরের KKRকে চাপে ফেলবে এই ৯ তত্ত্ব
Image Credit source: IPL

Follow Us

দীপঙ্কর ঘোষাল

ব্র্যান্ড ভ্যালু, আয় সবই বেড়েছে। সমর্থনেও ঘাটতি নেই। ইডেনে ম্যাচ থাকলে টিকিটের হাহাকার। তার মধ্যেও আক্ষেপ থাকছে। আবার করে আসবে ট্রফি? IPLএ দু-বার চ্যাম্পিয়ন নাইট রাইডার্স। ২০১২ ও ২০১৪ সালে গৌতম গম্ভীরের নেতৃত্বে। এরপর ফাইনালে পৌঁছলেও ট্রফি আর আসেনি। তাতেও চমক কমেনি কেকেআরের। মঙ্গলবারের মিনি অকশনে মিচেল স্টার্ককে নিয়ে সর্বকালীন রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু নাইটরা কতটা শক্তিশালী হল? সমর্থকদের প্রত্যাশা মেটাতে পারবে? প্রশ্ন থাকছে। মিনি নিলামের পর কেকেআরের দল যা দাঁড়াল, তাতে ডুব দিয়ে ৯টা কারণ তুলে আনা যায়। যা ট্রফির প্রত্যাশা বাড়াবে না। ট্রফি না পাওয়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে। ওই ৯টা কারণ বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।

ওপেনিং: এই সমস্যা নতুন নয়। প্রতি মরসুমেই নানা ওপেনিং কম্বিনেশন দেখেছে কলকাতা। তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এ বার রহমানুল্লা গুরবাজ ওপেন করবেন। তাঁর সঙ্গী কে? জেসন রয় হতে পারেন। তাঁকে খেলালে আন্দ্রে রাসেল-সুনীল নারিনকে একসঙ্গে খেলানো কঠিন। চার বিদেশির কোটা পূরণ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে বোলার স্টার্ক কিংবা অন্য বিদেশি খেলানো যাবে না। ভারতীয়দের মধ্যে ওপেনিংয়ে বিকল্প হতে পারেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। এ বার নেওয়া হয়েছে তরুণ ওপেনার অঙ্গকৃশ রঘুবংশীকে। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন। বড় মঞ্চে পরীক্ষিত নন। টি-টোয়েন্টিতে তাঁর স্ট্রাইকরেট ১১৬! তাঁকে দিয়ে আইপিএল পার করার স্বপ্ন দেখার মতো বোকামি না করাই ভালো।

উইকেটকিপার: একজন মাত্র কিপার রিটেন করা হয়েছিল, রহমানুল্লা গুরবাজ। তিনিই হয়তো খেলবেন। কিন্তু ভারতীয় কিপার নিয়ে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। গত মরসুমে নারায়ণ জগদীশন ছিলেন। চূড়ান্ত ফ্লপ। এ বার শ্রীকার ভরত এসেছেন। গতবার টাইটান্সের বেঞ্চে কাটিয়েছেন। তার আগে আরসিবিতে। ভারতীয় টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছেন। ব্যাটিংয়ের কারণে গুরবাজকেই হয়তো খেলাতে হবে কেকেআরকে।

পাওয়ার হিটার: কেকেআর সমর্থকরা পাল্টা যুক্তি দিতেই পারেন, রিঙ্কু আছেন তো। গতবার রিঙ্কু দারুণ খেলেছেন। দেশের হয়েও চমৎকার পারফর্ম করছেন। কিন্তু রিঙ্কু ফ্লপ হলে? আন্দ্রে রাসেল রয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কোন ম্যাচে জ্বলে উঠবেন, বলা মুশকিল। সুনীল নারিনের ক্ষেত্রেও একই যুক্তি কাজ করবে। মিডল অর্ডারে নতুন অলরাউন্ডার রমনদীপ সিং। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের স্কোয়াডে ছিলেন। বড় মঞ্চে খেলার তেমন অভিজ্ঞতা নেই। টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাইকরেট প্রায় ১৫৬। আইপিএলে দেশ-বিদেশের সেরা বোলারদের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করতে হবে। ঝুঁকি থাকছে।

লিডারের অভাব: অধিনায়ক এবং লিডার, দুটো এক সত্ত্বা নয়। নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেকেআরে শ্রেয়স আইয়ার, নীতীশ রানা, সুনীল নারিন আছেন। কিন্তু লিডার? যিনি প্রতি ম্যাচেই উদাহরণ হয়ে উঠবেন, মোটিভেট করবেন, এমন প্লেয়ার কেকেআরে রয়েছেন কি? মিচেল স্টার্ক কি লিডার হয়ে ওঠার মতো ভূমিকা পালন করতে পারবেন?

হীনমন্যতা: আইপিএলের ইতিহাসে সর্বকালীন রেকর্ড দরে মিচেল স্টার্ককে নিয়েছে নাইট রাইডার্স। অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারকে রিটেন করা হয়েছিল ১২.৫ কোটি টাকায়। অর্থাৎ ক্যাপ্টেনের দ্বিগুন দরে নেওয়া হয়েছে এক বিদেশিকে। রাসেলের দর ১২ কোটি। বাকিদের সঙ্গে স্টার্কের ফারাক পরিষ্কার। টিম স্পিরিটের কথা ভেবে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলবেন না। কিন্তু হীনমন্যতায় ভুগবেন না, জোর দিয়ে বলা যাবে তো?

চোট প্রবণতা: কেকেআরে চোট প্রবণ প্লেয়ারের সংখ্যা কম নয়। অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার গত মরসুমে খেলতে পারেননি। আন্দ্রে রাসেলও চোট প্রবণ। সবচেয়ে দামি মিচেল স্টার্ককে পুরো লিগে পাওয়া যাবে, তাও বলা মুশকিল। নাইটদের হয়েই শেষবার আইপিএল খেলেছিলেন স্টার্ক। চোটের কারণেই ছিটকে গিয়েছিলেন। এখন বয়সও বেড়েছে। চোটও বাড়বে, স্বাভাবিক।

বোলিং বিকল্প: আরও পরিষ্কার করে বললে, পেস বোলিং বিকল্প। স্টার্কের বোলিং পার্টনার কে হবেন? বিদেশি পেসার বলতে গাস অ্যাটকিনসন। তাঁকে খেলাতে হলে বাকি বিদেশিদের ম্যানেজ করতে হবে। গুরবাজ, নারিন, রাসেল, স্টার্ককে খেলালে আর জায়গা থাকছে না। ভারতীয় পেসারদের মধ্যে প্রচুর বিকল্প। চেতন সাকারিয়া, সাকিব হোসেনরা এসেছেন। চেতনের সাফল্য দূরবীণ দিয়ে খুঁজতে হবে। সাকিবের এটাই প্রথম আইপিএল। হর্ষিত রানার গত আইপিএলে অভিষেক হয়েছে। কঠিন পরিস্থিতিতে স্নায়ুর চাপ ধরে রাখার মতো অভিজ্ঞতা এখনও তৈরি হয়নি।

বাঁ হাতি স্পিনার: স্কোয়াডে বাঁ হাতি স্পিনার বলতে অনুকূল রায়। ঝাড়খণ্ডের এই ‘অলরাউন্ডার’কে রিটেন করেছে কেকেআর। গত বার হাতে গোনা সুযোগ পেয়েছিলেন। ছাপ রাখতে পারেননি। এ বারও স্কোয়াডে বাঁ হাতি স্পিনার একমাত্র তিনিই। স্পিন বোলিংয়ের বিকল্প থাকলেও একজন প্রকৃত অর্থেই বাঁ হাতি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডারের অভাব।

মাথা গরমের গম্ভীর: নাইট রাইডার্সের কোচ চন্দ্রকান্ত পন্ডিত। প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেন না। মেন্টর গৌতম গম্ভীর ঠিক উল্টো। দ্রুতই মেজাজ হারান গম্ভীর। গত আইপিএলে লখনউ সুপার জায়ান্টসের মেন্টর ছিলেন। বিরাট কোহলির সঙ্গে বিতর্কেও জড়িয়েছিলেন। মেন্টরের ভূমিকায় যে আরও ধীরস্থির হওয়া প্রয়োজন, বলার প্রয়োজন নেই। গম্ভীর মেজাজ হারালে, তার ছাপ পড়বে টিমের মধ্যেও।

কলকাতা নাইট রাইডার্স যাঁদের রিটেন করেছে- আন্দ্রে রাসেল, অনুকূল রায়, হর্ষিত রানা, জেসন রয়, নীতীশ রানা, রহমানুল্লা গুরবাজ, রিঙ্কু সিং, শ্রেয়স আইয়ার, সুনীল নারিন, সূয়াশ শর্মা, বৈভব অরোরা, বরুণ চক্রবর্তী, ভেঙ্কটেশ আইয়ার

নিলামে যাঁদের নেওয়া হয়েছে- মিচেল স্টার্ক (২৪.৭৫ কোটি টাকা), মুজিব উর রহমান (২ কোটি টাকা), শেরফান রাদারফোর্ড (১.৫ কোটি টাকা), গাস অ্যাটকিনসন (১ কোটি টাকা), শ্রীকার ভরত (৫০ লক্ষ টাকা), চেতন সাকারিয়া (৫০ লক্ষ টাকা), অঙ্গকৃশ রঘুবংশী (২০ লক্ষ টাকা), রমনদীপ সিং (২০ লক্ষ টাকা), মণীশ পান্ডে (৫০ লক্ষ টাকা), সাকিব হুসেন (২০ লক্ষ টাকা)

Next Article