নয়াদিল্লি: টেস্ট ক্রিকেটের (Test Cricket) ইতিহাসে এক ইনিংসে ১০টি উইকেট নেওয়ার নজির রয়েছে মাত্র তিন জন বোলারের নামের পাশে। গত বছর ডিসেম্বরে ওয়াংখেড়েতে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ১০ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন কিউয়ি তারকা আজাজ প্যাটেল (Ajaz Patel)। জিম লেকার (Jim Laker) ও অনিল কুম্বলের (Anil Kumble) পর লাল বলের ক্রিকেটে আজাজ তৃতীয় বোলার যিনি এক ইনিংসে ১০টি উইকেট নিয়েছিলেন। যে জার্সি পরে আজাজ এই কীর্তি গড়েছিলেন, সেটিই এ বার নিলাম করলেন নিউজিল্যান্ডের তারকা স্পিনার। এক মহৎকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে আজাজের জার্সির নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ। স্টারশিপ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আজাজের ১০টি উইকেট নেওয়া জার্সিটির নিলাম করা হয়। ওই জার্সিটির নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ একটি শিশু হাসপাতালের উন্নয়নের কাজে ব্য়বহৃত হবে। তবে আজাজের বিশেষ জার্সি নিলামে কত টাকায় বিক্রি হল তা জানা যায়নি।
আজাজের ওই ১০ উইকেট নেওয়া জার্সিতে নিউজিল্যান্ডের সকল ক্রিকেটারদের সইও ছিল। জার্সি নিলাম করার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আজাজ স্টারশিপ ফাউন্ডেশনে বলেন, “গত বছর আমাদের মেয়ে অসুস্থ হওয়ায় কয়েক দিন স্টারশিপ শিশু হাসপাতালে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে থাকতে হয়েছিল। তখনই ওখানকার সমস্যাগুলো আমাদের চোখে পড়ে। আমি ঠিক করি হাসপাতালের জন্য কিছু একটা করব। আর এ ভাবেই আমরা সেটা করতে পারতাম। তাই ওই বিশেষ জার্সিটা নিলামে তুলি।”
স্টারশিপ ফাউন্ডেশনের সিইও আয়েশা দাজি পুঙ্গা জানান, তিনি আজাজের উদারতা দেখে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, “আমরা ভীষণ ভাবে কৃতজ্ঞ, যে তিনি এইভাবে আমাদের সমর্থন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। মাঠে রোল মডেল হওয়ার পাশাপাশি এটি তাঁর উদারতা এবং চরিত্রের ব্যাপারে আরও বড় প্রমাণ দেয়।”
১৯৫৬ সালে ইংল্যান্ডের স্পিনার জিম লেকার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাঞ্চেস্টারে এক ইনিংসের সব কটা উইকেট নিয়েছিলেন। ক্রিকেট ইতিহাসে ওই ১০টা উইকেটের মতো বিরল ঘটনা ৪৩ বছর ধরে অক্ষত ছিল। ১৯৯৯ সালে ফিরোজ শাহ কোটলায় যদি না অনিল কুম্বলে নামক লেগস্পিনার না থাকতেন, তা হলে ইতিহাস আবার ফিরে দেখা হত না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওই রেকর্ড চিরকালীন গর্বের। ২২ বছর পর সেই ভারতের মাটিতেই আর এক স্পিনার রেখে গেলেন স্থায়ী ছাপ। ওয়াংখেড়েতে বিরাট কোহলির টিমের বিরুদ্ধে আজাজ একাই নেন ১০টা উইকেট! ৪৭.৫ ওভার বল করে ১২টা মেডেন সহ ১১৯ রান দিয়ে ১০ উইকেট! লেকার কিংবা কুম্বলের সঙ্গে ফারাক কোথায় আজাজের? লেকার, কুম্বলেরা নিজেদের দেশেই করেছিলেন ওই অবিস্মরণীয় রেকর্ড। আর আজাজ করলেন বিদেশের মাটিতে। বা আরও ভালো করে বললে, যে দেশে জন্ম তাঁর, সেই দেশই দু’হাত ভরিয়ে দিল তাঁকে।