মুম্বই: রোজ সকালে হলেই ইয়া বড় বোঁচকা কাঁধে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে ছেলেমেয়েরা। ব্যাগ ভর্তি স্বপ্ন। একদিন ক্রিকেটার (Cricket) হয়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে। স্বপ্ন তাদের চোখেমুখে। কেউ সচিন হতে চায়, কেউ বিরাট। ভিড়ের মধ্যে তাদের সবাইকে এক বলে মনে হলেও অনেকেই ভিন্ন। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র আর্থিক অভাবে সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তেমনই একজন মুম্বইয়ের পানভেলের ১১ বছরের মেয়ে অনিশা রাউত (Anisha Raut)। ক্রিকেটার হওয়ার তাগিদে এই বয়সেই হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে অনিশা। নিষ্ঠার অভাব না থাকলেও অভাবী পরিবারের মেয়ের স্বপ্ন যে শুধু পরিশ্রম দিয়ে পূর্ণ হবে না, তা ভালোমতো জানে অনিশার পরিবার। চিন্তায় যখন ঘুম উড়েছে ঠিক তখনই ১১ বছরের মুম্বইয়ের ক্রিকেট প্রতিভার সামনে দেবদূতের মতো উদয় হয়েছেন বলিউড অভিনেতা অর্জুন কাপুর (Arjun Kapoor)। অনিশার মতো প্রতিভা যাতে অকালে ঝরে না যায় তারই উদ্যোগ নিয়েছেন ‘ইশকজাদে’ তারকা। অর্জুনের ভরসায় অনিশার স্বপ্ন পাখা মেলেছে। কীভাবে ওই টিনএজ ক্রিকেটারের খোঁজ পেলেন দিলেন অর্জুন? বিস্তারিত রইল TV9 Bangla-র এই প্রতিবেদনে।
সংবাদসংস্থা আইএএনএস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পানভেলের মেয়ে অনিশা রোজ ৮০ কিমি পথ যাত্রা করে প্র্যাকটিসের জন্য যায়। পানভেল থেকে বান্দ্রার এমআইজি ক্রিকেট ক্লাব। সপ্তাহের সাতটা দিনের একই রুটিন। রবিবারও ছাড় নেই। মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে খেলেছে। সচিন তেন্ডুলকর তার আদর্শ। মাস্টার ব্লাস্টারের মতো একদিন নীল জার্সি গায়ে চড়িয়ে বাইশ গজ মাতিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখে। শুধুমাত্র সুপারভাইজারের কাজ করে মেয়ের স্বপ্ন পূরণ কীভাবে করবেন, ভাবলেই কেঁপে উঠতেন অনিশার বাবা প্রভাত রাউত। মুম্বইয়ের একটি জনপ্রিয় দৈনিকে অনিশার স্ট্রাগল ছাপা হয়েছিল বড় করে। সেটাই মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে টিনএজ ক্রিকেটারের জীবনের। প্রতিবেদনে চোখ আটকে গিয়েছিল বলিউড অভিনেতা অর্জুন কাপুরের। অনিশার সাহায্য করবেন বলে তখনই মনস্থির করে নেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ১৮ বছর হওয়া পর্যন্ত অনিশার ট্রেনিং ও ইক্যুইপমেন্টের খরচ বহন করবেন অর্জুন। বলিউড অভিনেতা পাশে এসে দাঁড়ানোয় অনেকটাই চিন্তামুক্ত হয়েছেন অনিশার বাবা। এটাকে ঈশ্বরের আশীর্বাদ বলেছেন।
ক্রিকেট নিয়ে ভারতীয়দের উন্মাদনার শেষ নেই। ক্রিকেটারদের জনপ্রিয়তা ও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি বুঝিয়ে দিয়েছে, এই খেলাকে কেরিয়ার হিসেবে গড়তে পারলে মিটবে আর্থিক সমস্যা। কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিঙ্কু সিং যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। একইসঙ্গে বলতে হয় মহিলা ক্রিকেটের উত্থানের কথা। ছেলে থেকে মেয়ে, নব্য প্রজন্মের হাতে অভিভাবকরা ব্যাট-বল তুলে দিচ্ছেন নির্দ্বিধায়। মুম্বইয়ের অনিশার দু চোখে স্বপ্ন থাকলেও সামর্থ্যে কুলোচ্ছিল না। ইচ্ছে বা পরিশ্রমের অভাব নেই অনিশার মধ্যে। যেখানে অভাব ছিল সেটা পূরণ করার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন অর্জুন কাপুর। অনিশাকে এ বার আটকায় কার সাধ্যি?