অংশুমান গোস্বামী
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ‘শাপমুক্তি’ হল ভারতের ফাস্ট বোলার অর্শদীপ সিংয়ের। ২০২২ সালের টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমে পাকিস্তানকে শুরুতে ধাক্কাটা গিয়েছিলেন তিনিই। ম্যাচের পঞ্চম বলে পাক অধিনায়ক বাবর আজমকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান তিনি। এর পর পাক উইকেটরক্ষক মহম্মদ রিজওয়ানও আউট হন তাঁর বলে। তাঁর আগুনে বোলিংয়ের ধাক্কাতেই ১৫ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ধুকছিল পাক দল। অর্শদীপের মুখে তখন চওড়া হাসি। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ আগে পাকিস্তানের সঙ্গে এশিয়া কাপের ম্যাচে হারের পর খলনায়ক ভূমিকায় বসানো হয়েছিল তাঁকে। সেই ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ক্য়াচ ফেলেছিলেন অর্শদীপ। ভারতও হেরে যায়। এর পর তুমুল সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। মেলবোর্নে সেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই রবিবার যে পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন অর্শদীপ তাতে সে দিনের ভুলের শোধন হল বলে মত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। TV9 Bangla তুলে ধরল অর্শদীপের জবাব।
টি২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে ৪ ওভার বল করে ৩২ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন অর্শদীপ। পাকিস্তানের দুই ওপেনারকে ফিরিয়েছেন। বাবর আজমকে শূন্য রানে ফিরিয়েছেন তিনি। মেলবোর্নে আসিফ আলিও তাঁর শিকার হয়েছেন। কিন্তু এশিয়া কাপের ম্যাচে এই আসিফ আলির ক্যাচ ফেলেছিলেন অর্শদীপ। তার পর তাঁকে খালিস্তানি তকমা দিতেও পিছুপা হননি সমালোচকরা। এশিয়া কাপের সেই ম্যাচে অর্শদীপের খেলা দেখেছিলেন তাঁর বাবা দর্শন সিং এবং মা বলজিৎ কৌর। ছেলের উপর যে আক্রমণ নেমে এসেছিল ম্য়াচের পর তাতে দুঃখ পেয়েছিলেন অর্শদীপের বাবা-মা।
ব্যথিত দর্শন সেদিন জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে। মেলবোর্নে হলও তাই। সমালোচনা নিয়ে অর্শদীপের বাবা দর্শন আরও বলেছিলেন, “আমি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু ওর মা বলজিৎ পারছে না। প্রায়শই কেঁদে ফেলছেন।”
সমালোচনায় বিদ্ধ অর্শদীপ কিছু কথাও লিখেছিলেন এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারের পর। তাঁর বাংলা তর্জমা- “কিছু জনের কাছে আমি লাকি। কিছু জনের কাছে ফ্লুক। ওরা সকলেই আমার কঠোর পরিশ্রমকে গুরুত্ব দেয়নি। তাঁরা সকলেই ভাগ্যের ব্যাপারে বলছিল। যখন সময় ভাল থাকে এক জন সফল হয়। কিন্তু চরিত্রের পরীক্ষা হয় কঠিন সময়ে। সাহসী ব্যক্তিরা কখনও হতাশ হয় না। আমার মতো কঠিন চরিত্রেরা কঠিন সময়েও আশা হারান না।”
এই হাল না ছাড়া মনোভাবই সাফল্য এনে দিল অর্শদীপকে। এর জন্য খুব বেশি দিন অপেক্ষাও করতে হল না তাঁকে। কয়েক সপ্তাহ ব্যবধানেই সমালোচকদের মুখে ঝামা ঘষে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, লম্বা দৌড়ের জন্যই মাঠে নেমেছেন তিনি।