দুবাই: মহম্মদ রিজওয়ানের (Mohammad Rizwan) দৌড়টা অনেক দিন মনে রাখবে পাকিস্তান (Pakistan)। ভারতের (India) বিরুদ্ধে সুখের খোঁজ করতে হলে চার বছর আগের সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল। ভারতকে হারিয়ে কাপ জেতার সাফল্য ঘুরেফিরে আসে। চার বছর পর আবার ভারত-বধের গল্প তৈরি করল পাকিস্তান। দুবাইয়ের মাঠে ১৩ বল বাকি থাকতে জয়। বিশ্বকাপের মঞ্চে এর আগে কখনও জেতেনি গ্রিন আর্মি। ১৩তম ম্যাচে এসে অবশেষে যন্ত্রণামুক্তি বাবর আজমদের।
বিরাট কোহলি বনাম বাবর আজম— এই আঙ্গিকেই ভারত-পাক উত্তাপ জমাচ্ছিল। বিরাট হাফসেঞ্চুরি করলেন। কিন্তু তাঁর টিম জয় পেল না। বাবর কিন্তু ম্যাচ জেতানো হাফসেঞ্চুরি করে গেলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে। ইমরান খান, ওয়াসিম আক্রম, আমির সোহেল থেকে সরফরাজ আহমেদ— ক্যাপ্টেনদের লম্বা তালিকায় ভারতের বিরুদ্ধে জয় খুব কমই। বাবর আজম অধিনায়কদের তালিকায় বরাবরের জন্য জায়গা করে নিলেন। বিশ্বকাপে প্রথমবার ভারতকে হারানোর জন্য। শুধু কি তাই, এই বাবর যেন ধোনি ঘরানার ক্যাপ্টেন। ঠান্ডা মাথা। চরম সাফল্যেও ভেসে যান না। বিরাটদের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার পরও তাঁকে খুব বেশি সেলিব্রেশনে মাততে দেখা গেল না। যেন, কাপ জেতার মিশনে নেমে ফোকাস শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকেই।
পুরস্কারের মঞ্চে এসে পাক অধিনায়ক বলে গেলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিলাম। শুরুর দিতে উইকেট তোলার পরিকল্পনাটা টিম ঠিকঠাক কার্যকর করতে পেরেছে। প্রথম স্পেলে শাহিনের দুটো উইকেট টিমের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে স্পিনাররাও চমৎকার পারফর্ম করেছে।’
টস জিতে সিকিভাগ কাজ সেরে ফেলেছিলেন বাবর। রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলির উইকেট নেওয়া শাহিনই ম্য়াচের সেরা। তাঁর ওপেনিং স্পেলটাতেই বিরাটদের মুঠো আলগা হয়ে গিয়েছিল। বাকি কাজটা শেষ করেছেন রিজওয়ান ও বাবর মিলে। ওপেনিং জুটিতে ম্যাচে জেতা নিয়ে কী বলছেন পাক অধিনায়ক? ‘রিজওয়ান আর আমার ভাবনা খুব সহজ ছিল। আমরা যতটা সম্ভব উইকেটে থাকতে চেয়েছিলাম। ৮ ওভারের পর থেকে শিশির পড়তে শুরু করল যখন, তখন ব্যাটে ভালো বল আসছিল। ওই সময় থেকেই খেলাটা আরও নিয়ন্ত্রণে নিতে শুরু করেছিলাম।’
বিশ্বকাপে এর আগে কখনও ভারতের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি পাকিস্তান। রেকর্ড কি চাপে রাখেনি শাহিন-হাফিজদের? বাবরের কথায়, ‘আমাদের উপর খুব বেশি যে চাপ ছিল, তা নয়। ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অতীতের রেকর্ড নিয়ে আমরা একেবারেই ভাবিনি। ম্যাচটাতে সেরাটা দিতে চেয়েছিলাম সবাই মিলে। সেটা পেরেছি, এর থেকে বড় তৃপ্তি আর কী হতে পারে!’
ভারতকে হারানোর পর আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে পাকিস্তানের। বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে বাবরের তরুণ টিম। তবে, এখনই কাপের দিকে তাকাতে রাজি নন রিজওয়ানরা। বাবর বলে দিলেন, ‘আমরা এক-একটা ম্য়াচ ধরে এগোতে চাই। যখন বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে খেলতে হয়, তখন কিন্তু টিমের সবাইকে আত্মবিশ্বাসী রাখতে হয়। সেই কাজটা করছি।’