নয়াদিল্লি : উত্তরাখণ্ড ক্রিকেটে একের পর এক অভিযোগ। রঞ্জি ট্রফিতে (Ranji Trophy) খেলা ক্রিকেটারদের দৈনিক মজুরদের থেকেও কম টাকা, এমন অভিযোগ ছিলই। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল ঘরোয়া ক্রিকেট। রত্নাকর শেট্টির মতো প্রাক্তন বোর্ড কর্তা বলেছিলেন, বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তির মতো রাজ্য সংস্থার ক্ষেত্রেও এমন করা হোক। ক্রিকেটাররা টাকা সামান্য পেলেও উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট (Uttarakhand Cricket) সংস্থার অডিট রিপোর্ট চক্ষু চড়কগাছ করার মতোই। খাবার এবং ক্য়াটারিং বিল ১.৭৪ কোটির উপর! এর মধ্যে কলা কেনা হয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকার! দৈনিক খরচ ৪৯.৫ কোটি! কোভিড লকডাউনের সময় খরচ হয়েছে ১১ কোটি! ক্রিকেটারদের টাকা না দেওয়ার পাশাপাশি, হেনস্থা এবং খুনের হুমকির অভিযোগ উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট কর্তাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের বন্য়ায় ভাসছে উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থা। ছেলেকে হেনস্থা এবং খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে, এই মর্মে এফআইআর করেছেন অনূর্ধ্ব ১৯ জাতীয় দলের ক্রিকেটারের বাবা। তার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার সচিব মহিম বর্মা, কোচ মণীশ ঝা এবং মুখপাত্র সঞ্জয় গুসাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে উত্তরাখণ্ড পুলিশ। দেরাদুনের এসএসপি জন্মেজয় খাণ্ডুরি জানিয়েছেন, ‘গত তিনদিন মহিম বর্মা, মণীশ ঝা এবং সঞ্জয় গুসাইকে আমরা আলাদা করে জেরা করেছি। তাঁদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে তাঁদের আবার ডাকা হবে।’
দেরাদুনের বসন্ত বিহার থানায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র (আইপিসি ১২০বি), ইচ্ছাকৃত হেনস্থা (আইপিসি ৩২৩), অবৈধ জুলুম (আইপিসি ৩৮৪), ইচ্ছাকৃত অপমান (আইপিসি ৫০৪), অপরাধমূলক ভয় দেখানো (আইপিসি ৫০৬) ধারায় এফআইআর হয়েছে। অনূর্ধ্ব ১৯ জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার আর্য শেঠির বাবা বীরেন্দ্র শেঠি এফআইআর করেছেন। কোচ মণীশ ঝা, টিম ম্য়ানেজার নবনীত মিশ্র এবং ভিডিও অ্যানালিস্ট পীযুষ রঘুবংশী গত বছর বিজয় হাজারে ট্রফির সময় আর্যকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর বাবার দাবী।
ক্রিকেটারদের দৈনিক ভাতা ১৫০০ টাকার জায়গায় দেওয়া হয়েছে ১০০। এমন অভিযোগ ছিলই। উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট সংস্থার ২০২০, ৩১ মার্চের অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার খাবার এবং ক্যাটারিং খরচ দেখানো হয়েছে। মোট দৈনিক ভাতা প্রায় ৫০ লক্ষ। এর মধ্যে ৩৫ লক্ষ টাকার কলা এবং ২২ লক্ষ টাকার জলের বোতল কেনা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের হয়ে রঞ্জি খেলা ক্রিকেটার রবিন বিস্ত সাম্প্রতিক একটি ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন, ‘রিকোভারি সেশনের পর টিম হোটেলে ফিরে লাঞ্চের জন্য যাই। হোটেল কর্মী জানান, আমাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা নেই। টিম ম্য়ানেজারকে জানানো হলে তিনি বলেন, বাইরে থেকে নিজে খাবার অর্ডার কর, নয়তো এমনিই থাক। একদিন না খেলে মরে যাবে না।’