নাগপুর: স্পিন হবেই! মস্তিষ্কে এই ধারনা নিয়েই খেলতে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। সিরিজ শুরুর আগে বেঙ্গালুরু শহর থেকে কিছুটা দূরে আলুরে শিবির করেছে অজিরা। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার চেয়ে সেটাই সেরা বিকল্প মনে হয়েছে। ক্ষত তৈরি করা পিচে অনুশীলন করেছে। কিন্তু স্পিন আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ভারতীয় স্পিনাররা সেই স্পিন জুজুকেই কাজে লাগালেন। অশ্বিন-জাডেজার স্টাইলে বোলিং করতে পারেন, এমন দু-জনকে নিয়ে প্রস্তুতি সেরেছিল অজিরা। কিন্তু আসল-নকলের যে বিস্তর ফারাক, তা টের পেল ক্রিজে নেমেই। তাদের প্রথম ইনিংস শেষ মাত্র ১৭৭ রানেই। দিনের খেলার মাত্র সাত বল বাকি থাকতে লোকেশ রাহুলের উইকেট হারায় ভারত। অভিষেক টেস্টে নামা টড মার্ফি তাঁর হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট উইকেট মার্ফির। দিনের শেষে ভারত ৭৭-১। ভারত-অস্ট্রেলিয়া বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি, নাগপুর টেস্টের প্রথম দিনের রিপোর্ট TV9Bangla-য়।
ভারত-অস্ট্রেলিয়া এই সিরিজের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। উদ্বোধনী টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিল ভারত। এ বার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া নিশ্চিত। দ্বিতীয় দল হিসেবে কে উঠবে, সেই লড়াই চলছে। টানা দ্বিতীয় বার টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠতে ভারতকে তিনটি টেস্ট জিততে হবে। যার শুরুটা খুবই ভালো হল। নাগপুরে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতকে চতুর্থ ইনিংসে ব্য়াট করানোই মূল লক্ষ্য়। প্রথম দিনের পিচে স্পিনাররা তেমন সুবিধা করতে পারবে না, এমনটাই হয়তো ভেবেছিল অজি শিবির। কিন্তু তাদের ভাবনার সঙ্গে কিছুই মিলল না। স্পিন জুজু তাড়া করল প্রতি মুহূর্তে।
ভারতকে প্রথম সাফল্য় দেন মহম্মদ সিরাজ। উসমান খোয়াজাকে লেগ বিফোর করেন সিরাজ। যদিও মাঠের আম্পায়ার আউট দেননি। সিরাজের আত্মবিশ্বাসে রিভিউ নেন রোহিত। সাফল্য়ও আসে। দ্বিতীয় উইকেটটি টেস্ট ম্যাচের দর্শকদের জন্য অন্য়তম সেরা মুহূর্ত। রাউন্ড দ্য উইকেট বল করেন মহম্মদ সামি। ছিটকে দেন ডেভিড ওয়ার্নারের উইকেট। শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া। কিছুটা সাফল্য় আসে মার্নাস লাবুশেন-স্টিভ স্মিথ জুটিতে। ৮২ রান যোগ করে তারা। দুটো অনবদ্য ডেলিভারিতে এই দু-জনকে প্য়াভিলিয়নে পাঠান রবীন্দ্র জাডেজা। লাবুশেন ফ্লাইটে বিট হন, উইকেটের পিছনে অনবদ্য অভিষেককারী শ্রীকার ভরত। এত দ্রুততায় স্টাম্প করেন, তাঁর সিলেকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গাই দেননি। স্মিথকে সেরা ডেলিভারিতে ফেরান জাডেজা। স্পিনের জন্য ডিফেন্স করেছিলেন স্মিথ। যদিও জাডেজার আর্ম বল ব্য়াড-প্য়াডের গ্য়াপে উইকেটে লাগে। পিটার হ্য়ান্ডসকম্ব ও উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্য়ারি পাল্টা আক্রমণে ভারতকে চাপে ফেলার চেষ্টা করলেও জাডেজা, অশ্বিনের সামনে অসহায় দেখায়। শেষ অবধি ১৭৭ রানেই অলআউট অজি ইনিংস। জাডেজা ৫ উইকেট নেন। অশ্বিন তিন উইকেট।
একাদশ বাছাই নিয়ে যথেষ্ট মাথাব্য়াথা ছিল ভারতীয় শিবিরে। শেষ অবধি শুভমন গিলকেই বসানো হয়। সূর্যকুমার যাদব ও উইকেটরক্ষক শ্রীকার ভরতের টেস্ট অভিষেক হল। রোহিতের সঙ্গে ওপেনিংয়ে সহ অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করার পর ভারতকে ভালো শুরু দেয় এই জুটি। শেষ বেলায় আউট হন রাহুল (২০)। অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৫৯ রানে ক্রিজে রয়েছেন। ভারত পিছিয়ে ১০০ রানে।