ICC World Cup 2023: ৮০০-র টিকিট ৪০০টাকা, ১৫০০-র টিকিট ১২০০তে, শনিবার অন্য ইডেন!
ম্যাচের শুরুতে কাতারে কাতারে লোক তখন ইডেনমুখী। এর আগেও পাকিস্তানের ম্যাচ হয়েছে এই ইডেনে। চলতি বিশ্বকাপে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল। সেসময় বাংলাদেশের গুটি কয়েক জার্সি বিক্রি হয়েছিল। ঢালাও বিক্রি হয়েছিল রোহিত-বিরাট লেখা ভারতের জার্সি। পাকিস্তানের জার্সি খুঁজেও পাওয়া যায়নি ময়দান চত্বরে। শনিবার একেবারে উল্টো ঘটনা। ভারতীয় জার্সি পড়ার কাতারে কাতারে জনতার মাঝে ইডেনমুখী প্রায় শখানেক দর্শকের দেখা মিলল যাঁদের পরনে পাকিস্তানের জার্সি।
রক্তিম ঘোষ
কলকাতা: পাকিস্তান-ইংল্যান্ড (Pakistan vs England) ম্যাচ। বিশ্বকাপের (ICC World Cup) যা অবস্থা ,তাতে এই ম্যাচ গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। তার উপর টস জিতে ইংল্যান্ড ব্যাটিং নেওয়ায় আগ্রহ ঝপ করে নেমে গিয়েছে তলানিতে। ইংল্যান্ড যদি ৫০ রান করে, পাকিস্তানকে সেই রান করতে হবে ২.৩ ওভারে । আর এই প্রতিবেদন লেখার সময় ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ব্যাট হাতে যা হৈহৈ করছে, তাতে খেলা শুরুতেই শেষ। তবুও স্টেডিয়ামের নাম যেহেতু ইডেন, আর শহরের নাম কলকাতা। এমন মরা ম্যাচেও বৈচিত্র্য পাবেন না, হয় নাকি! পাওয়াও গেল।
ম্যাচের শুরুতে কাতারে কাতারে লোক তখন ইডেনমুখী। এর আগেও পাকিস্তানের ম্যাচ হয়েছে এই ইডেনে। চলতি বিশ্বকাপে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল। সেসময় বাংলাদেশের গুটি কয়েক জার্সি বিক্রি হয়েছিল। ঢালাও বিক্রি হয়েছিল রোহিত-বিরাট লেখা ভারতের জার্সি। পাকিস্তানের জার্সি খুঁজেও পাওয়া যায়নি ময়দান চত্বরে। শনিবার একেবারে উল্টো ঘটনা। ভারতীয় জার্সি পরার কাতারে কাতারে জনতার মাঝে ইডেনমুখী প্রায় শখানেক দর্শকের দেখা মিলল যাঁদের পরনে পাকিস্তানের জার্সি। বর্তমান বিশ্বকাপের জার্সি থেকে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের সেই জার্সিও কারও কারও পরনে।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্য়াচে একটিও পাকিস্তানের জার্সি বিক্রি হতে দেখা যায়নি। আর এদিন ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তানের জার্সিরই ভিড়। তবে কী ইডেন মনেপ্রাণে চাইছিল, একটা অলৌকিক ক্রিকেটের। যেখানে পাকিস্তান জিতবে। ভারতের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল খেলবে এই ইডেনে। বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের এই আগ্রহ তো স্বাভাবিক। ইডেনে ভারত-পাকিস্তানের স্বপ্নের সেমিফাইনাল দেখার উদগ্র বাসনা তো অবিশ্বাস্য কিছু নয়। তবে চমকে দিল একদল নেপাল থেকে আসা সমর্থক। হাতে নেপালের জাতীয় পতাকা। আর মুখে ও বুকে পাকিস্তানের পতাকার রং। এ স্রেফ এশীয় ভ্রাতার প্রতি নেপালের প্রেম প্রকাশ। কথা বললে বোঝা গেল, তাঁদের কথা। এ দৃশ্য প্রথমবার দেখল ইডেন।
মাঠে তেমন লোক কই। হাজার ১৫ থেকে ২০-খুব বেশি হলে। টিকিটেরও তেমন চাহিদা নেই। আর তাতেই মাথায় হাত পড়েছে টিকিট কালোবাজারিদের। মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে বা ইস্টবেঙ্গল যাওয়ার রাস্তায়, কিংবা তালতলা তাঁবুর পেছনে কান পাতলে শুনলে চমকে উঠতে হয়। ৮০০টাকার টিকিট ব্ল্যাকাররা বিক্রি করছেন মাত্র ৪০০ টাকায়। ১২০০টাকার টিকিট ৬০০ টাকায়। ১৫০০ টাকার টিকিট মাত্র ১২০০ টাকায়। টিকিট কালোবাজারি অবস্থা এমন, যে টিকিটটা যেন বিক্রি হয়। যা আসে পকেটে, তাতেই মঙ্গল দীপাবলির আগে। মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে যেখান থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে,সেখানে ম্যাচ শুরুর ১ ঘন্টা পরেও ভিড়।সেখানেও এক মজার কান্ড, ক্রেতারা মুখ বাড়িয়ে চাইছে, টিকিট আছে। কাউন্টারের ভেতর থেকে শব্দ, ‘১৫০০টাকার টিকিট রয়েছে। ৮০০ টাকার টিকিট রয়েছে।’ ক্রেতার ঠিক পেছনে তখন জনৈক ব্ল্যাকার। তিনি পেছন থেকে চাপরা গলায় অফার দিচ্ছেন, ‘ওখান থেকে কী কিনবেন। ১৫০০ টাকার টিকিট দেব ১২০০ টাকায়। ৮০০ টাকার টিকিট পাবেন মাত্র ৪০০ টাকায়।’ক্রেতা তখন কাউন্টার থেকে ঘুরে টিকিট কিনলেন ব্ল্যাকারের থেকে। এ বড় মজার ছবি। কাউন্টার থেকে কম দামে টিকিট বিক্রি করছেন টিকিট কালোবাজারিরা! এ দৃশ্যও তো ইডেন দেখল প্রথমবার।
হোক না একটা কার্যত নিয়মরক্ষার ম্যাচ। কিন্তু ইডেনের চরিত্রে যে বৈচিত্র্যের অভাব হয়না, তা বোঝা গেল ইডেনের বাইরে। মাত্র ২০০ মিটারের মধ্যেই।