কলকাতা: বিসিসিআইয়ের সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে হয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। যা নিয়ে ঝড় উঠেছে ক্রিকেট প্রশাসনে। অনেকেই সৌরভের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর হয়ে সওয়াল করেছেন। সেই তালিকায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মুখ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোর্ড সভাপতির নির্বাচন ঘিরে যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে, তা নিয়ে মমতার মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। রজার বিনি বোর্ড সভাপতি হচ্ছেন তা যখন নিশ্চিত, তখন মমতা আইসিসির চেয়ারম্যান হিসাবে সৌরভের নাম প্রস্তাবের পক্ষে সওয়াল করেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেন তিনি। মমতা বলেছিলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, দয়া করে সৌরভকে আইসিসির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হোক।” কিন্তু আইসিসি-র চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে বিসিসিআই কর্তারা এখনও কোনও আলোচনা করেননি। এরই মধ্যে কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে আর একবার সৌরভের পাশে দাঁড়ালেন মমতা। বৃহস্পতিবার মমতার অভিযোগ, “বাংলার ছেলে বলেই সৌরভকে আইসিসি-র চেয়ারম্যান হতে দেওয়া হল না।”
বৃহস্পতিবার জানবাজারে কালীপুজোর উদ্বোধনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দুধের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে গুজরাত এবং বাংলার তুলনা টেনে কেন্দ্রীয় নীতির প্রতিবাদ করেন। সেই প্রসঙ্গ থেকে সরাসরি সৌরভের প্রসঙ্গে চলে আসেন মমতা। তিনি বলেন, “সৌরভ বাংলার ছেলে বলে আইসিসি-র চেয়ারম্যান হল না। শরদ পওয়ার ছিলেন, জগমোহন ডালমিয়া ছিলেন। সৌরভ এখানে বিসিসিআই-তে ছিল। সুপ্রিম কোর্ট সৌরভ আর অমিত শাহের ছেলে জয় শাহের মেয়াদ বাড়িয়ে ছিল। এক জন থেকে গেল। আর এক জন বাদ চলে গেল। কী অপরাধ ওর? ভারত থেকে কারও নাম আইসিসি-তে পাঠায়নি। এটাই খেলা। দু’বছর অন্যকে সমর্থন করবে, তার পর নিজেদের লোক পাঠাবে। অন্যদের বেলায় পরিবার, ওদের বেলায় হরিদ্বার। লজ্জা করছে আমার।”
আইসিসি-র চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভারত থেকে কারও মনোনয়ন না দেওয়া নিয়েও আজ সরব হয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, “আইসিসি-তে ভারতের চেয়ারম্যান হল না। ভারত লড়লে আর কেউ জিততে পারে না। আইসিসি-তে ভারতের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তুমি সৌরভকে দু’বছর দিতে পারতে। তার পর না হয় তোমার ছেলেকে পাঠাতে। কেউ আপত্তি করত না।” এখানে তোমার ছেলে বলে মমতা নাম না করে অমিত শাহের ছেলে জয় শাহকে বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
এর পরই সৌরভের হয়ে মা কালীর কাছে প্রার্থনা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “মাগো শক্তি দাও। আমি সৌরভের দীর্ঘজীবন কামনা করি। ওর পরিবারের সুন্দর জীবন কামনা করি। আমরা লজ্জিত। আজ তোমাদের হাতে ক্ষমতা, তাই সৌরভকে হতে দিলে না। কে বলতে পারে ভবিষ্যতে সৌরভই যাবে। সেদিন তোমাদের হাতে ক্ষমতা থাকবে না। মায়ের কাছে এই প্রার্থনা করি।”