Cricket in LA Olympics: সচিন-সৌরভ-ধোনির মতো এই রেকর্ড ছুঁতে পারবেন না বিরাটও!

Oct 17, 2023 | 10:17 AM

Virat Kohli News: বিরাট কোহলির বর্তমানে বয়স ৩৫ বছর। ২০২৮ সালে তাঁর বয়স হবে ৪০ বছর। সে দিক থেকে দেখলেও ২০২৮ সালে ভারতীয় দলের হয়ে বিরাট কোহলির প্রতিনিধিত্ব করার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

Cricket in LA Olympics: সচিন-সৌরভ-ধোনির মতো এই রেকর্ড ছুঁতে পারবেন না বিরাটও!

Follow Us

সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতোই এই রেকর্ড ছুঁতে পারবেন না বিরাট কোহলিও। শুধু সচিন বা সৌরভ নন এই রেকর্ড ছুঁতে পারেননি মহেন্দ্র সিং ধোনি। দু’বার ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জেতা রিকি পন্টিংও।

বিরাট কোহলির বর্তমানে বয়স ৩৫ বছর। আগামী বিশ্বকাপের সময় তাঁর বয়স হবে প্রায় ৩৯ বছর। ফলে ২০২৮ সালে তিনি ভারতের হয়ে টি২০ জার্সি গায়ে মাঠে নামবেন এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। তা ছাড়া ২০২৮ সালে তাঁর বয়স হবে ৪০ বছর। সে দিক থেকে দেখলেও ২০২৮ সালে ভারতীয় দলের হয়ে বিরাট কোহলির প্রতিনিধিত্ব করার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

কিন্তু হঠাৎ কী এমন হল যে ২০২৮ সালে বিরাট কোহলি ভারতের হয়ে খেলবেন কিনা তা নিয়ে আমরা চিন্তিত? আসলে কয়েকদিন আগেই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির এক্সিকিউটিভ বোর্ডের বৈঠকে আলোচনার বিষয় ছিল লস অ্যাঞ্জেলেসে নতুন কোন কোন খেলা অন্তর্ভুক্ত হবে। যদিও মিটিংয়ের আগে শেষ মুহূর্তে এজেন্ডা থেকে এই বিষয়টি সরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। লস এঞ্জেলস অলিম্পিকের আয়োজক কমিটির তরফে সবুজ সংকেত না মেলাতেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। তারপর আইসিসি ও আয়োজকদের তরফে বৈঠক হয়, আর সেখানেই আয়োজকদের তরফে জানানো হয় ২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেট আয়োজনে কোনও অসুবিধা নেই। শুধু বাকি ছিল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সিলমোহরের।

লস এঞ্জেলস অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভূক্তি সময়ের অপেক্ষা ছিল। মার্কিন মুলুকে ক্রিকেট তেমন জনপ্রিয় নয়। তবে ভারতীয় দল ক্যারিবিয়ান সফরে গেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাউডারহিলে ম্যাচ রাখা হয়। সেখানে উন্মাদনাও দেখা যায়। এ বছর আমেরিকায় হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ মেজর লিগ ক্রিকেট। ২০২৪ সালে যৌথ ভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আমেরিকা। সে কারণেই অলিম্পিকের আগে পরিকাঠামো প্রস্তুত থাকছে।

বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ থেকে জানা যায় প্রথম অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয় গ্রিসের অলিম্পিয়া শহরে, যিশুখ্রিষ্টের জন্মের ৭৭৬ বছর আগে। তারপর অলিম্পিক বন্ধ হয়ে যায়। অলিম্পিক পুনরায় চালু করার উদ্দেশ্যে ১৮৯৪ সালে অলিম্পিক কমিটি তৈরি হয়। তার দু বছর পর অর্থাৎ ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে আধুনিক অলিম্পিক গেমস শুরু হয়। প্রথম আধুনিক অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয় গ্রিসের আথেন্স শহরে।

পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হওয়া সত্ত্বেও ক্রিকেট এতদিন অলিম্পিকে জায়গা পায়নি, এর পিছনে বেশ কিছু কারণও রয়েছে। যদিও অলিম্পিকে ক্রিকেটেকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা অনেকদিন ধরেই চলে আসছে। ১৮৯৬ সালের আথেন্স অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলা হবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু, কোনও দেশ সেই অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলতে আগ্রহ দেখায় নি, ফলে ১৮৯৬ সালে আথেন্স অলিম্পিকেও ক্রিকেট রাখা হয়নি। কিন্তু ১৯০০ সালের প্যারিস অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলা হয়। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডস সেই বছর অলিম্পিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। পরে বিশেষ কারণে বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডস নাম প্রত্যাহার করে নিলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে অলিম্পিকের ইতিহাসে প্রথম ও এখনও অবধি শেষ ক্রিকেট ম্যাচটি খেলা হয়। সেই সময় পৃথিবী ক্রিকেট বলতে পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচ বুঝলেও সেই অলিম্পিকে দুই দিনের ক্রিকেট ম্যাচ খেলা হয়। এই ম্যাচে ইংল্যান্ড ফ্রান্সকে ১৫৮ রানে হারিয়ে অলিম্পিকের ইতিহাসে ক্রিকেটে একমাত্র স্বর্ণপদকটি জিতে নেয়।

তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও অলিম্পিকেই ক্রিকেট খেলা হয়নি। তার বেশ কিছু সম্ভাব্য কারণও রয়েছে। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকটি ক্রিকেট খেলিয়ে দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে সেই সরকারি হস্তক্ষেপের বাইরে থাকতে হয়। যাতে সেই দেশে ক্রিকেট খেলার মান ঠিক থাকে ও দুর্নীতি কম হয়। কিন্তু অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলা শুরু হলে সরকারি হস্তক্ষেপে জাতীয় দল বাছাই হবে যা আইসিসির ক্রিকেট আইনের পরিপন্থী। টি২০ খেলা শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত শুধুমাত্র টেস্ট ও একদিনের ম্যাচ খেলা হত। সীমিত ওভারের ক্রিকেট ম্যাচ বলতে একদিনের ম্যাচকেই বোঝানো হত। যাতে দু’দল মিলিয়ে মোট ১০০ ওভারের খেলা হয়, যে কারণে একটা ম্যাচ শেষ হতে প্রায় ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে অলিম্পিকের সময়সীমার মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সত্যিই সম্ভবপর নয়।

ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন অলিম্পিক স্টেডিয়ামের মধ্যে সম্ভব না, তার জন্য বিশেষ মাঠের প্রয়োজন যা ক্রিকেট খেলিয়ে দেশগুলির বাইরে পাওয়া বেশ সমস্যার ব্যাপার। এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলে মোট ১২টি দেশ। বাকি দেশগুলি স্বভাবতই অলিম্পিকে ক্রিকেট নিয়ে খুব একটা আগ্রহী কোনও কালেই ছিল না। ক্রিকেটের সময়সূচি এমনিতেই ব্যস্ত, ফলে সমস্ত ম্যাচ সামলে অলিম্পিক ক্রিকেটের জন্য সময় বের করা ক্রিকেট খেলিয়ে দেশগুলোর জন্য বেশ সমস্যার ব্যাপার। ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সহ বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডগুলোর সদিচ্ছার অভাব।

এতদিনের সমস্যা, জটিলতা, অনিচ্ছা মিটবে কিনা, দেখার অপেক্ষায় ছিল ক্রিকেট দুনিয়া। শেষ পর্যন্ত তা হল। ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের জন্য ৫টা নতুন খেলাকে অলিম্পিকে নেওয়া হল। স্কোয়াশের সঙ্গে রয়েছে ক্রিকেটও। ক্রিকেট জনপ্রিয়তায় অলিম্পিকও মাথা গলাতে চায়। গ্লোবাল হতে ক্রিকেটেরও দরকার অলিম্পিক। ক্রিকেট আর অলিম্পিক অবশেষে হাত মেলাল!

Next Article