অবশেষে! দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর। নেতৃত্বের নির্বাসন উঠল ডেভিড ওয়ার্নারের। স্টিভ স্মিথের সময় অস্ট্রেলিয়ার ভাইস ক্যাপ্টেন ছিলেন ওয়ার্নার। কিন্তু ২০১৭ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সব ‘শেষ’ করে দেয়। সেই কুখ্যাত স্যান্ড-পেপার গেটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ওয়ার্নারও। অজি ওপেনার ক্যামেরন ব্যানক্রফ্ট শিরিষ কাগজ দিয়ে বলের পালিশ তোলার চেষ্টা করেন। পাশে ছিলেন ওয়ার্নার, স্মিথও। স্টেডিয়ামে ২৬টি এইচডি ক্যামেরা! এই দৃশ্য লুকোতে পারেননি। জায়ান্ট স্ক্রিনে সেই দৃশ্য দেখানো হয়। বল বিকৃতির দায়ে ব্যানক্রফ্ট এবং ক্যাপ্টেন স্টিভ স্মিথ ও ভাইস ক্যাপ্টেন ডেভিড ওয়ার্নারকে দ্রুত টিম থেকে বাদ দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তাঁদের দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফেরানো হয়। ক্রিকেট থেকে নির্বাসনও দেওয়া হয়। পাশাপাশি ক্যাপ্টেন্সি থেকেও নির্বাসিত করা হয় স্মিথ ও ওয়ার্নারকে।
নির্বাসন থেকে ক্রিকেটে ফেরার পর নানা মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছিল স্মিথ ও ওয়ার্নারকে। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ এবং তারপরই অ্যাসেজ সিরিজে গ্যালারি থেকে ‘চিটার’ ধ্বনি উঠেছিল। স্টিভ স্মিথ ও ওয়ার্নাররা ব্যাটে পারফর্ম করে ক্রমশ সেই অস্বস্তি কাটিয়ে উঠেছিলেন। স্টিভ স্মিথের ক্যাপ্টেন্সি ব্যানও তুলে নেওয়া হয় পরবর্তীতে। তিনি অস্ট্রেলিয়ার ভাইস ক্যাপ্টেন হন, প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্বও দিয়েছেন। কিন্তু ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাপ্টেন্সি ব্যান কিছুতেই তুলছিল না ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
অজি ক্রিকেট বোর্ডের কাছে বারবার আবেদন, এমন কী ওয়ার্নারের স্ত্রীও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। নেতৃত্বে ব্যান থাকায় বিগ ব্যাশে ক্যাপ্টেন করা যাচ্ছিল না ওয়ার্নারকে। এর মাঝে দেশের বাইরে, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ ও অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ক্যাপ্টেন্সি করেছেন ওয়ার্য়ানার। কিন্ত নিজের দেশের কোনও টুর্নামেন্টেই পারছিলেন না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর অবশেষে এ দিন তাঁর ক্যাপ্টেন্সি ব্যান তোলা হয়েছে। তাঁর বিগ ব্যাশ টিম সিডনি থান্ডার ইতিমধ্যেই ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছে। আগামী বিগ ব্যাশে সিডনি থান্ডারের ক্যাপ্টেন হিসেবে দেখা যেতে পারে ওয়ার্নারকে।
বিগ ব্যাশে ক্যাপ্টেন্সিতে ভরসা দিতে পারলে আইপিএলেও নেতৃত্বে ফেরানো হতে পারে ওয়ার্নারকে! অসম্ভব নয়। ভরসা জিতে নেওয়াটাই জরুরি। ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব থাকলে ব্যাট হাতে আরও ভালো পারফরম্যান্স দেখা গিয়েছে ওয়ার্নারের থেকে। দিল্লি ক্যাপিটালস যদি তাঁকে রিটেন করে, ওয়ার্নারকে ফের ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় দেখা গেলে অবাক হওয়ার নেই। এমনকি তিনি যে অজি নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টকে বার্তা দিয়ে রেখেছেন বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করে, এই বিষয়েও অস্ট্রেলিয়া বোর্ড ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলে অবাক হওয়ার নেই।