নয়াদিল্লি: কী বলা উচিত তাঁকে? ম্য়াজিশিয়ান? জিনিয়াস? কিংবদন্তি? নাকি, গত শতাব্দীর অন্য়তম সেরা ক্রিকেটার? সারা বিশ্ব এমন অনেক বিশেষণ খুঁজছে মাত্র ৫২ বছরে প্রয়াত শেন ওয়ার্নের (Shane Warne) জন্য়। তাঁর হঠাৎ মৃত্য়ু ক্রিকেটে যে শূন্য়তা তৈরি করেছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ক্রিকেট ছেড়েছেন অনেক আগে। কিন্তু প্রাক্তন ক্রিকেটার হিসেবে অনেক কিছু দেওয়ার ছিল এই খেলাটাকে। পরবর্তী প্রজন্মের কোনও লেগস্পিনার নিশ্চিত ভাবেই ওয়ার্নের কাছ থেকে হাতেকলমে নতুন অস্ত্র শেখার সুযোগ হাতছাড়া করল, সন্দেহ নেই। ওয়ার্নকে নিয়ে যখন নানা স্মৃতি উজাড় করে দিচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেট, তখন সুনীল গাভাসকর (Sunil Gavaskar) অন্য় মেরুর লোক। যতই তাঁর হাত থেকে ম্য়াজিক ডেলিভারি বেরিয়ে আসুক, যতই মাইক গ্য়াটিংদের মতো লোকজন আজও বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে থাকুক ওয়ার্নের আশ্চর্য ঘূর্ণিতে, সানি তাঁকে সর্বোচ্চ আসনে বসাতে নারাজ। ভারতীয় স্পিনার এবং মুথাইয়া মুরলীধরনকে এগিয়ে রাখছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক।
১৯৯২ সালে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ওয়ার্নের। ১৪৫টা টেস্ট খেলে ৭০৮টা উইকেট নিয়েছেন। মুরলীর শিকার ৮০০ উইকেট। সানির যুক্তি, ‘ওয়ার্নকে সেরা স্পিনার বলতে পারব না। ভারতীয় স্পিনাররা, শ্রীলঙ্কার মুরলী নিশ্চিত ভাবেই ওয়ার্নের থেকে অনেক এগিয়ে থাকবে। কেন এ কথা বলছি? কারণ, ভারতের বিরুদ্ধে ওর রেকর্ড অত্য়ন্ত সাধারণ। ভারতের বিরুদ্ধে ভারতের মাটিতে মাত্র একবারই ও কোনও টেস্ট ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছে। ক্রিকেট বিশ্বের স্পিনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভালো খেলে ভারতীয় ব্য়াটাররা। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ রেকর্ডের জন্য়ই এই কথাগুলো বলছি। সে দিক থেকে দেখলে, ভারতীয় টিমের বিরুদ্ধে মুরলীর রেকর্ড অনেক ভালো। যে কারণে আমার কাছে ওয়ার্নের থেকে মুরলীই এগিয়ে থাকবে।’
ওয়ার্নের বোলিংয়ে যে মুগ্ধতা নেই গাভাসরকরের, তা নয়। লেগস্পিনের মতো শিল্পকে দারুণ আয়ত্ত করেছিলেন তিনি। ম্যাজিক দেখাতে পারতেন। যা বলতে দ্বিধা করছেন না। সানির কথায়, ‘রিস্ট স্পিনের মতো এমন একটা বোলিংয়ের মাস্টার ছিল ওয়ার্ন, যেটা অত্য়ন্ত কঠিন। টেস্টে ও ৭০০-র বেশি উইকেট নিয়েছে। ওয়ান ডে ক্রিকেটেও ওর দখলে ছিল ২০০-র বেশি উইকেট। এই রেকর্ডই বলে দেয় ওয়ার্ন কতটা ভালো বোলার ছিল। ফিঙ্গার স্পিন তুলনায় অনেক সহজ। ভালো অফস্পিনার হতে গেলে অনেক নিয়ন্ত্রণ দরকার পড়ে। কিন্তু লেগস্পিন ভীষণ ভীষণ কঠিন একটা কাজ।’
ওয়ার্ন যে তাঁর জাদুতে মুগ্ধ করেছেন ক্রিকেট ভক্তদের, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই সানির। ৭২ বছরের প্রাক্তন ওপেনার বলছেনও, ‘যে ভাবে ও বল করত, যে ভাবে ও ম্য়াজিক দেখাত, অবলীলায় যে ভাবে ও ওর ম্য়াজিক ডেলিভারিগুলো দিয়ে তাক লাগিয়ে দিত, সেই কারণেই সারা বিশ্বের কাছে ও আলাদা সম্মান পেয়েছে।’