অ্যাডিলেড : এক বছরের পরিকল্পনা। এক বছরের প্রস্তুতি। সব কোথায় হারিয়ে গেল! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের বিদায়। ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হার। তার চেয়েও বড় বিষয় টিম সিলেকশন। গত এক বছর ধরে প্রতি ম্যাচে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছে ভারতীয় শিবির। ওপেনিংয়ে বদল। নেতৃত্বে বদল। প্রতি ম্যাচেই সেরা কম্বিনেশন খুঁজে নেওয়ার বুলি আওড়েছেন কোচ এবং অধিনায়ক। অতি আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের বার্তা দিয়েছেন। কোথায় গেল সে সব! এমন অনেক অনেক প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। আইসিসি টুর্নামেন্টে বারবার সেমিফাইনাল, ফাইনালেই বিদায়ের ধারা চলছে। শেষ বার আইসিসি টুর্নামেন্টে ট্রফি এসেছিল ২০১৩ সালে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল ভারত। এরপর শুধুই সেমিফাইনাল, ফাইনাল অবধিই বিদায়। সেই ধারা বজায় থাকল ভারত। ম্যাচের বিশ্লেষণে TV9Bangla।
ভারতীয় ব্য়াটিং লাইন আপে যে আশঙ্কা ছিল। কার্যত সেটাই হল। টপ অর্ডার পুরো টুর্নামেন্টেই হতাশ করেছে। লোকেশ রাহুল শেষ দুই ম্যাচে রান করেছেন। প্রথম তিন ম্যাচে ব্যর্থ। সেমিফাইনালেও ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি। অধিনায়ক রোহিত শর্মা, কবে বড় রান করবেন, তিনি নিজেও জানেন না। এ দিনও শুরুটা ভাল হল, তবে বড় রান এল না তাঁর ব্যাটে। ইনিংসের শুরু ভাল না হলে মিডল অর্ডারে চাপ বাড়তে বাধ্য। রোজ রোজ মিডল অর্ডার চাপ নিয়ে দলকে টেনে তুলতে পারবে, এমন প্রত্যাশা করাও ভুল। বিরাট কোহলি অ্যাডিলেডে প্রথম বার আউট হলেন। তার আগে অনবদ্য একটা ইনিংস খেলেন। ৪০ বলে ৫০ রানের ইনিংস। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ৪ হাজার রানের মাইলফলক পেরোলেন বিরাট। ১৫ ওভারে ভারতের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১০০। এখান থেকে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৬৮-৬ সম্ভব হল হার্দিক পান্ডিয়ার জন্য। মাত্র ৩৩ বলে ৬৩ রানের ইনিংস হার্দিকের।
অ্যাডিলেডের স্কোয়ার বাউন্ডারি ছোট। বোর্ডে এটুকু রান যথেষ্ট নয়। এটা যে কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব। বোলিংয়ে ভুবির প্রথম ওভারেই এল ১৩ রান। রাশ কিছুটা আলগা হয়েছিল। পুরো টুর্নামেন্টে অক্ষর ব্যর্থ। পাওয়ার প্লে-তে অক্ষর প্যাটেলকে বোলিং করানোর কারণ অধিনায়ক রোহিত শর্মাই বলতে পারবেন। জস বাটলার-অ্যালেক্স হেলস ওপেনিং জুটিতে পাওয়ার প্লে-তে ৬৩ রান তোলে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে অক্ষরের দু-ওভারে এল ১৯ রান। যুজবেন্দ্র চাহালকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যাওয়া হলেও একটা ম্যাচেও খেলানো হল না কেন! এটাও বড় রহস্য। অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি পিচে লেগ স্পিনাররা বরাবর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশেও লেগ স্পিনারদের রমরমা। ইংল্যান্ডও আদিল রশিদকে খেলিয়েছে। মাত্র ১৬৮ রানের পুঁজি নিয়ে বাটলার-হেলসকেই সামলাতে ব্যর্থ ভারতীয় বোলিং। ১০ উইকেটের জয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফাইনাল নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : ভারত ১৬৮-৬, ২০ ওভার (হার্দিক পান্ডিয়া ৬৩, বিরাট কোহলি ৫০)। ইংল্যান্ড ১৭০-০, ১৬ ওভার (অ্যালেক্স হেলস ৮৬*, জস বাটলার ৮০*)। ইংল্যান্ড ১০ উইকেটে জয়ী।