কলকাতা: সিএবি লিগ ফাইনাল জিতেছে ভবানীপুর। ফাইনালে হারলেও লিগে অনবদ্য পারফর্ম করেছে কালীঘাট ক্লাব। ছিল না বিশাল কোনও বাজেট। কোনও তথাকথিত তারকা প্লেয়ার। তারপরও ফাইনালে যোগ্যতা অর্জন। এর পিছনে ছিল ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্ক, দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা। কোচ সঞ্জীব সান্যাল (Sanjib Sanyal)। বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার। খেলেছেন রেলওয়েজের হয়েও। প্রায় ৫০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচের অভিজ্ঞতা। ক্লাব ক্রিকেটে আরও দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। খেলার পাশাপাশি টানত কোচিং। তিনি অধিনায়ক থাকাকালীন মোহনবাগানের কোচ পলাশ নন্দী (Palash Nandy)। তাঁর সঙ্গে থেকে কোচিংটাও শিখতে শুরু করেন। নিজের কোচিং ক্যাম্প চালানো, নতুন প্লেয়ারদের তুলে আনা। এমনকি অনেক সিনিয়র ক্রিকেটারও তাঁর কাছে পরামর্শ নিতেন। ফেরাননি সঞ্জীব। বরং, কাজটাকে ভালো বেসেছেন। কোচিংয়ের কোর্সও করেছেন। রঞ্জি ট্রফিতে (Ranji Trophy) রেলওয়েজকে কোচিং করিয়েছেন। তাঁর মন পড়েছিল বাংলায়। ময়দানে স্বীকৃত কিংবা বলা যায় হেড কোচ হিসেবে কালীঘাটই প্রথম। এবং দায়িত্ব নিয়েই দলকে ফাইনালে তোলা।
কালীঘাটক ক্লাবকে নিয়ে ফাইনালের সফর নিয়ে বলছেন, ‘প্রথমেটিম দেখে মনে হয়েছিল, ফাইনাল অবধি পৌঁছতে সময় দিতে হবে। কলকাতা ময়দানে সাধারণত অক্টোবর নাগাদ প্রস্তুতি শুরু হয়। আমি জুলাই থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম এই দল নিয়ে। ১২ মাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছি। টেকনিকাল ফল্ট, মানসিক বাধা, শুরু থেকেই এসবে মন দিই। একটা প্রক্রিয়া মেনে চলেছি। প্লেয়াররা খুব ভালো সাড়া দিয়েছে। সম্মান দিয়েছে। পরিকল্পনা মেনে চলেছে। হয়তো আমার প্রোফাইল ভালো বলে, মানিয়ে নিতে সময় লাগেনি।‘
বাংলার এই প্রাক্তন অলরাউন্ডারের প্রত্যাশা নিজের রাজ্য দলের কোচিং করানোর। বয়সভিত্তিক দল হলেও সমস্যা নেই। বাংলার দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। সুযোগ আসবে, আশাবাদী। কোচিং অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে জানালেন, ‘খেলতে খেলতেই কোচিং শুরু করেছি। মোহনবাগানে খেলার সময় অনেক সিনিয়র প্লেয়ারও আমার উপর নির্ভরশীল ছিল। পলাশ স্যারের সঙ্গে তখন থেকেই কোচিংয়ে শিক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কোচ না হয়েও ঐ সময় ৭-৮ বছর কোচিং করিয়েছি। সে সময় থেকেই কোচিং নিয়ে পড়াশোনা শুরু করি। রেলওয়েজের কোচ হই। একবছর রেলওয়েজ রঞ্জি দলকে কোচিং করাই। চুক্তি বাড়াতে চাইলেও আমি চাইনি। এখানে পরিবার রয়েছে। বাংলাতেই কোচিং করতে চেয়েছিলাম। সে কারণেই কালীঘাটের দায়িত্ব নেওয়া। নিজেও প্রায় ৭-৮ বছর এই ক্লাবে খেলেছি। ক্লাবের প্রতি একটা অনুভূতি ছিল। রেলওয়েজ থেকে আমাকে বিভিন্ন ফরম্যাটেই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রস্তাব দিত। ফিরিয়ে দিয়েছি। ভেবেছিলাম বাংলা ক্রিকেট সংস্থা আমাকে কোনও দায়িত্ব দেবে। সেটা যদিও হয়নি। আমি কালীঘাটের দায়িত্ব নিই। কোচিং ১০-১১ বছর আগেই আরম্ভ করেছি। রঞ্জি ট্রফিতে কোচিং করানোর আগে মোহনবাগানে কোচ ছিলাম পলাশ দার সঙ্গে।‘
বাংলার প্রস্তাব পেলে? খুব বেশি ভাবতে হল না। বললেন, ‘এখনও কোনও প্রস্তাব নেই। দেখা যাক। আবেদনও করে রেখেছি। প্রস্তাব পেলে আমি দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। দায়িত্ব পেলে ভালোই লাগবে।‘