অভিষেক সেনগুপ্ত
মুম্বই: নয়ে-৯ কতটা ভয় ধরাতে পারে প্রতিপক্ষকে? ১২ বছর আগের সেই রাত এখনও ভোলেনি মুম্বই। মেরিন ড্রাইভের ধারে অকাল দীপাবলি দেখেছিল সারা দেশ। সচিন তেন্ডুলকরের খাসতালুক ভারতের জন্যই গলা ফাটাবে বুধবার। খোদ ক্যাপ্টেনই ঘরের ছেলে। বিরাট কোহলির ঠিকানাও এই শহর। সূর্যকুমার যাদব, শ্রেয়স আইয়ারও বড় হয়েছেন এই মাঠে খেলেই। জসপ্রীত বুমরাকেও তৈরি করেছে এই স্টেডিয়াম। শুধু আক্ষেপের তালিকায় থাকবেন হার্দিক পান্ডিয়া। তবু নিজের বলার লোকের অভাব নেই মুম্বইয়ের। ১২ বছর পর ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের গল্পে রোহিত শর্মার ভারত সুপারহিট। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ বাদ দিলে গ্রুপ লিগে চাপেই ফেলতে পারেনি কোনও টিম। দুরমুশ করা, উড়িয়ে দেওয়া, চুরমার করে দেওয়ার মতো বিশেষণ ফিরেছে বারবার। তবু সোম-সন্ধেয় প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে, নয়ে-৯ কতটা ভয় ধরাতে পারে প্রতিপক্ষকে? বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
সোমবার বিকেলে বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বইয়ে পা দিলেন রোহিত, বিরাটরা। তার আগে দুরন্ত ফর্মে থাকা ভারতকে সেমিফাইনালে সামলানো কতটা কঠিন হতে পারে, নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুসন বলে গেলেন। বিশ্বকাপের ইতিহাস বলছে, কিউয়িরা কোনও দিন ট্রফি-সুখ পায়নি। এ বারের লিগ টেবলের গল্প বলছে, ৯ ম্যাচে মাত্র ৫টাতে এসেছে জয়। জটিল অঙ্ক থেকে শেষ মুহূর্তে সেমিফাইনালের টিকিট জোগাড় করতে হয়েছে কেন উইলিয়ামসনের টিমকে। সে সব পিছনে ফেলে রেখে সোম-বিকেলেই ওয়াংখেড়েতে নেমে পড়ল নিউজিল্যান্ড। রাচিন রবীন্দ্র, ডেভন কনওয়ে, ড্যারেল মিচেল, উইলিয়ামসনদের ওয়াংখেড়ের বাইশ গজে নিবিড় নেট সেশন দেখলে মনে হবে চার বছর আগের সেই রোমহর্ষক সেমিফাইনালও ভুলে গিয়েছে। বৃষ্টিবিঘ্নিত দু’দিনের ম্যাচে ভারতকে হারানো। বিলেতে ভারতের আবার বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নে জল ঢেলে দেওয়া।
অতীত না হয় ভুলেছেন উইলিয়ামসনরা, বর্তমান? ঠিক এখানে এসেই থমকে যাচ্ছে কিউয়ি শিবির। আগ্রাসী ভারতে। অবিশ্বাস্য ফর্মে। দুরন্ত ভারসাম্যে। তবু লকি বলে গেলেন, ‘গ্রুপ লিগের ন’টা ম্যাচ খেলে আমরা সেমিফাইনালে পা রেখেছি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরাও সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মাঠটাও খুব ভালো। প্রথমে ব্যাট করলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। সে সব তথ্য মাথায় রেখেও বলব, আমাদের আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হবে।’
লকি কি শুধু নিউজিল্যান্ডের জন্য বললেন? নাকি, ফর্মের এভারেস্টে বসে থাকা ভারতকেও শুনিয়ে রাখলেন? সম্ভবত দুটোই। গ্রুপ লিগ যাই হোক না কেন, সেমিফাইনাল অন্য হিসেবের খেলা। অন্য ছকের ম্যাচ। এমন ম্যাচে একবার মুঠো আলগা করা মানে স্বপ্নের অপমৃত্যু। লকির কথায়, ‘সেমিফাইনালের মতো ম্যাচে একটা প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে আমরা সামনে তাকাতে চাইছি। ভারতের মতো টিমের বিরুদ্ধে খেলা নিশ্চিত ভাবেই চাপের। ভারতের পেস আক্রমণ খুব ভালো। অন্যতম সেরা। কিন্তু আমরা নিজেদের নিয়েই ভাবছি।’
ভাবতে নিজেদেরকে নিয়েই হয়। যে অঙ্কের আভাস লকি ফার্গুসন দিয়ে গেলেন, তার কেন্দ্রে বিরাট কোহলি থাকবেন। রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুলরাও থাকবেন। বুমরা-সামি-সিরাজদের পাল্টা চাপে রাখার অঙ্কও থাকবে তৈরি। ভারতের ভারসাম্য ভাঙতে হলে পাল্টা আক্রমণ যে চাই, লকি কেন মেরিন ড্রাইভে হাওয়া খেতে আসা যে কোনও মুম্বইকর বলে দেবেন!