চট্টগ্রাম: ভারতের (India) বিরুদ্ধে বাংলাদেশ (Bangladesh) ওয়ান ডে সিরিজ জিতেছে ঠিকই। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টের যা হাল, তাতে চেতেশ্বর পূজারাদের ম্যাচ জয়ের সম্ভবনা প্রবল। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের সামনে ৫১৩ রানের লক্ষ্য রেখেছে টিম ইন্ডিয়া। তৃতীয় দিনের শেষে বাংলাদেশের স্কোর বিনা উইকেটে ৪২। এ বার দেখার প্রথম টেস্টের বাকি থাকা দুটো দিনে কী করতে পারেন সাকিবরা। ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৮ রানের পর ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয়। তৃতীয় দিন আরও একটি উইকেট পান ভারতের তারকা স্পিনার। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে সব চেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav)। লাল বলের ক্রিকেটে কুলদীপের কামব্যাকটা ভালোই হয়েছে। প্রায় ২ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫টি উইকেট সাবাড় করেছেন ভারতের তারকা স্পিনার। তৃতীয় দিনের শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে কী বললেন তিনি, তুলে ধরল TV9Bangla।
টেস্ট ক্রিকেট থেকে দীর্ঘদিন দূরে ছিলেন কুলদীপ। লাল বলের ক্রিকেটে দারুণ কামব্যাকের পর কুলদীপ বলেন, “চোট থেকে ফিরে আসার পর আমি তো সাদা বলে নিয়মিত খেলছি। টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে ও ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে খেলেছি। মধ্যিখানে আমি লাল বলের ক্রিকেটেও খেলেছি। নিউজিল্যান্ড শিবির যখন ভারত সফরে এসেছিল, তখন আমি লম্বা স্পেলে বল করেছিলাম। আমার বোলিংয়ের ধরণটা এমনই যাতে ফর্ম্যাট বদলে গেলেও আমার কোনও সমস্যা হয় না। লাল বলে অনেক দিন পর খেলেছি। একটু নার্ভাস ছিলাম ঠিকই। তা বলে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে সেই অর্থে কিছু ভাবিনি। টেস্টে ফর্মেশন আলাদা, ফিল্ড পজিশন আলাদা হয়। টেস্ট ক্রিকেটে বোলিংয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। যে কারণে একটু নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু প্রথম ইনিংসের পারফরম্যান্সে খুশি।”
দেশের জার্সিতে শেষ টেস্ট ও এই টেস্টের মধ্যে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কুলদীপের কথায়, “আমি এটা ভাবছিলাম না যে, আমি এতদিন পর টেস্টে খেলছি। তবে হ্যাঁ, আপনি যদি শেষ ২ বছর ধরে ক্রিকেটই না খেলেন, তা হলে ফর্মে ফিরতে সময় লাগবে। তবে দলের সঙ্গে নিয়মিত খেললে অতটা চাপ হয় না। তবে হ্যাঁ আার মাথায় একটা ব্যাপার এসেছে যে, ২ বছর পর টেস্ট খেলছি। হ্যাঁ এটা ঠিক যে দু’বছর পর আমি লাল বলে ফিরলাম। তবে দলের সঙ্গে নিয়মিত খেলে গিয়েছি, নেটে বোলিং করেছি তাই লাল বলে আমি যে এতদিন পর কামব্যাক করলাম, তা আমার মনে হয়নি।”
লাল বলের ক্রিকেটে আসল চ্যালেঞ্জ থাকে এক জায়গায় বল করে গিয়ে উইকেট তুলে নেওয়া। এ ব্যাপারে ভারতের চায়নাম্যান বোলার বলেন, “টেস্ট ম্যাচে ফিল্ড পজিশন বার বার পরিবর্তন হয়। টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটারদের মানসিকতাও অন্য থাকে। ব্যাটারদের কাছে অনেক সময় থাকে। এটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়। এক জায়গায় বল করা। ওটার জন্য তৈরি ছিলাম। সেটা করতে পেরে খুশি। এই পিচে সব বলই টার্ন করছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা সম্ভবত আরও বেশি টার্ন পাব। এ বার আমরা আগামীকাল ওদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আউট করে দিতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “ম্যাচের ২ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। অনেক সময় রয়েছে ঠিকই। আমরা ডিক্লেয়ার করে দিয়েছি। আমাদের বোলারদের কাছে সময় রয়েছে। অনেক সময় ৪০০ রানও সহজ হয়ে যায়। বোলিং পার্টনারশিপ সব ফর্ম্যাটেই গুরুত্বপূর্ণ। সে ওয়ান ডে হোক বা টি২০। টেস্টেও মিডল ওভার গুরুত্বপূর্ণ। স্পিনারদের সঙ্গে বোলিং করাটা আমি বেশ উপভোগ করি।”
প্রথম ইনিংসে কুলদীপ ব্যাট হাতে ৪০ রানও করেন। যা ভারতের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি নিজের ব্যাটিং নিয়ে তিনি বলেন, “আমি সব সময় আমার ব্যাটিং নিয়ে কাজ করি। সাদা বলেও ব্যাটিংয়ে আমি কাজ করছি। লাল বলের ক্রিকেটে আমার ব্যাটিং বরাবর ভালো। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও আমি অনেক রান করেছি। তাই আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফর্ম্যাটে বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারব। শুরুর দিকে একটু নার্ভাস লাগছিল। ৫-৬ বল, ১০ বল খেলার পর এক বার সেট হয়ে গেলে সুবিধা হয় ব্যাটিং করা। আমি ১০০ শতাংশ স্যাটিসফাই। ৫০ রান করতে পারিনি ঠিকই। ৪০ রানটা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অ্যাশ ভাইয়ের সঙ্গে আমার ৮৭ রানের পার্টনারশিপটা দলকে ৪০০ অবধি পৌঁছে দিয়েছিল। সেট হয়ে যাওয়ার পর ৪০০ অবধি টার্গেট নিয়ে যাওয়া দলের জন্য ভালো ছিল।”